নির্বাচনের আগেই পাকিস্তানে ফিরছেন নওয়াজ শরিফ
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বসবাসরত পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রধান নওয়াজ শরিফ দেশে ফিরছেন। এ তথ্য জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
গতকাল বৃহ্পতিবার জিও নিউজে হামিদ মিরের সঞ্চালনায় ‘ক্যাপিটাল টক’ অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এ অনুষ্ঠানে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শাহবাজ শরিফ বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পরপর তিনি লন্ডন সফর করবেন। দেখা করবেন বড় ভাই নওয়াজের সঙ্গে।
শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘আশা করছি, আগামী মাসে নওয়াজ শরিফ পাকিস্তানে ফিরতে পারেন। দেশে ফিরলে তাঁকে (নওয়াজ) আইনি প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হবে।’
দেশে ফিরে নওয়াজ শরিফ আগামী নির্বাচনের আগে প্রচারণায় দলের (পিএমএল-এন) হাল ধরবেন বলেও জানিয়েছেন শাহবাজ শরিফ। তবে নওয়াজ কবে পাকিস্তানে ফিরবেন, সেই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো দিন-তারিখের কথা জানাননি শাহবাজ।
দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত নওয়াজ শরিফ ২০১৯ সালে আদালতের অনুমতি নিয়ে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। এর পর থেকে তিনি সেখানেই আছেন।
এর আগে ২০১৮ সালে আল-আজিজিয়া স্টিল মিলস দুর্নীতি মামলায় একটি বিশেষ আদালত নওয়াজকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় ২০১৯ সালে তিনি লাহোর হাইকোর্টে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যাওয়ার আবেদন করেন। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করলে ওই বছরই দেশ ছাড়েন নওয়াজ।
পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনে জয় পাওয়ার পর ২০১৮ সালের আগস্টে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) জোট সরকার যাত্রা শুরু করে। তখন আর নওয়াজের দেশে আসার উপায় ছিল না। পিটিআই সরকারের আমলে গ্রেপ্তারের ভয়ে তিনি দেশে ফেরেননি।
তবে গত বছরের এপ্রিলে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে বিরোধীদের আনা আস্থা ভোটে হেরে ইমরানের সরকার ক্ষমতা হারায়। পরে নওয়াজের ভাই শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে বিরোধীরা জোট সরকার গঠন করে।
গত বুধবার পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার তিন দিন আগে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এখন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দেবেন শাহবাজ শরিফ। এ সরকারই জাতীয় নির্বাচনের সময় দায়িত্ব পালন করবে।
পাকিস্তানের সংবিধানে বলা আছে, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই যদি জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়, তবে ৯০ দিনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন করতে হবে। আর জাতীয় পরিষদ মেয়াদ পূর্ণ করলে ৬০ দিনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন হবে।