জনরায় না মানলে পাকিস্তানের ক্ষত সারবে না: সেনাপ্রধানের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় পিটিআই
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান গহর আলী খান বলেছেন, জনরায় মেনে না নিলে দেশের ক্ষত সারবে না। গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেছেন।
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়ে গত শনিবার এক বিবৃতিতে সেনাপ্রধান আসিম মুনির বলেন, নৈরাজ্য ও বিভাজনের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে দেশের ক্ষত সারিয়ে তুলতে একটি স্থিতিশীল নেতৃত্ব প্রয়োজন। পাকিস্তানের বৈচিত্র্যময় রাজনীতি ও বহুত্ববাদকে সবচেয়ে ভালো প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে একটি ঐক্যের সরকার। জাতীয় আকাঙ্ক্ষা পূরণের লক্ষ্যে কাজ করে, এমন সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে নিয়ে এই সরকার গঠন করতে হবে।
গতকাল শনিবার আরব নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধানের বক্তব্য প্রসঙ্গে গহর খান বলেন, ক্ষত সারিয়ে তোলার চেষ্টা মানে, দেশে কোনো রাজনৈতিক বন্দী থাকবে না। নির্বাচনে পিটিআই-সমর্থিত প্রার্থীরা সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনরায়ের প্রতি সম্মান জানাতে হবে। এটা ছাড়া ক্ষত সারবে না।
সেনাপ্রধানের বক্তব্য অনুযায়ী ঐক্যের সরকারের বিষয়টির উল্লেখ করে গহর খান বলেন, ঐক্যের সরকার মানে, সব দলের একটি বিষয়ে এক হতে হবে। এর মানে, জোট সরকার নয়। আর এটা করতে হবে সবার আগে জনরায় মেনে নিয়ে তার, প্রতি সম্মান দেখাতে হবে।
কারাবন্দী ইমরান খানের অনুপস্থিতিতে পিটিআইয়ের প্রধানের দায়িত্ব পাওয়া গহর খান আরও বলেন, মানুষ ভোটের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থানের জানান দিয়েছেন এবং প্রথমবারের মতো বিরূপ এক পরিস্থিতির মধ্যেও নিজেদের কথা বলেছেন।
গহর খান বলেন, ‘জাতীয় পরিষদে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়ে সরকার গঠনের দ্বারপ্রান্তে চলে গেছি আমরা। জাতীয় পরিষদের পাশাপাশি পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশেও সরকার গঠনের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।’
গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হয়। নজিরবিহীন বিলম্বের পর আজ রোববার বাংলাদেশ সময় বেলা একটার দিকে ২৬৪টি আসনে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদে ২৬৬ আসনে সরাসরি ভোট হয়। এবার ভোট হয়েছিল ২৬৫ আসনে। প্রার্থীর মৃত্যুতে এক আসনে ভোট হয়নি। আর এক আসনে ফলাফল ঘোষণা স্থগিত করেছে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)।
ইসিপি ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, ২৬৪ আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০১ আসনে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নির্বাচনে জয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ৯৩ জনই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই-সমর্থিত। এরপরই পিএমএল-এন ৭৫ আসনে, পিপিপি ৫৪ ও এমকিউএম ১৭ আসনে জয়ী হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য দল পেয়েছে ১৭টি আসন। জাতীয় পরিষদে সরকার গঠনের জন্য ১৩৪টি আসন প্রয়োজন।