ইরানে বেড়েছে বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা, জাতিসংঘের উদ্বেগ
ইরানের তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুর জেরে বিক্ষোভ আরও জোরদার হচ্ছে। নারীদের নেতৃত্বাধীন এই বিক্ষোভ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। বিক্ষোভ দমনে তারা গুলি চালাচ্ছে। দেশটির কুর্দিস্তান ও পশ্চিম আজারবাইজান প্রদেশে গতকাল বৃহস্পতিবার বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে পাঁচ হয়েছে।
বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর হামলার ঘটনায় জাতিসংঘ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আর ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক বেসরকারি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
ইরানের নীতি পুলিশের হেফাজতে গত ১৬ সেপ্টেম্বর মারা যান মাসা আমিনি। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর তাঁর দাফনকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ শুরু হয়। এই বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভে এ পর্যন্ত ১০০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন। বিক্ষোভে তরুণ-তরুণী নিহত হওয়ায় দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বিক্ষোভ আরও বড় আকার ধারণ করে।
গতকাল রাতে ইরানের রাজধানী তেহরান, বানেহ, মাহবাদসহ বিভিন্ন শহরে বড় বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভের পর গতকাল রাতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছিল, ওই দিন একজনের মৃত্যু হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে। সেই নিহতের সংখ্যা আরও বেড়েছে। এর মধ্যে বানেহ শহরে দুজন এবং মাহবাদ শহরে তিনজন নিহত হয়েছেন।
এই বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর দমন-পীড়ন প্রসঙ্গে ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউটের ইরানবিষয়ক বিশেষজ্ঞ হেনরি রোমে বলেন, বিক্ষোভ দমনে সরকার ভয়ংকর পদক্ষেপ নিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ কারণে বিক্ষোভ আরও জোরদার হয়েছে।
এদিকে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার ইরানের বিভিন্ন শহরে বড় বিক্ষোভ হয়। যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক বেসরকারি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, এই দুই দিনের বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে আটজন নিহত হয়েছেন। সরকারের এমন পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে সংগঠনটি।
এই বিক্ষোভ দমন-পীড়নের ঘটনায় আজ শুক্রবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির মানবাধিকার কার্যালয়ের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। অনেক বিক্ষোভকারীর পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে। এমনকি বিক্ষোভে নিহত অনেকের মরদেহ ফেরত দেওয়া হচ্ছে না।’