সৌদি সাংবাদিক খাসোগি হত্যাকাণ্ড, পাঁচ বছরেও ন্যায়বিচার হয়নি
সৌদি আরবের সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছে গতকাল সোমবার। সৌদি রাজতন্ত্রের এই সমালোচক ২০১৮ সালের এই দিনে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে গিয়ে খুন হয়েছিলেন। সৌদি অধিকারকর্মীরা এ হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এখনো লড়াই করে যাচ্ছেন। তারা বলছেন, সৌদি আরবের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিময়ে আরেকটু রক্ষণশীল হওয়া প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ফ্রিডম ইনিশিয়েটিভের সৌদি পরিচালক আবদুল্লাহ আলাউধ বলেন, ‘বাস্তবতা হলো, বিশ্বের বিভিন্ন সরকারকে সৌদি আরবের সঙ্গে ব্যবসা করতে হবে। কিন্তু মানবাধিকার বা মৌলিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধগুলো জলাঞ্জলি দিয়ে কোনো দেশ যখন একনায়কতন্ত্র ও স্বৈরাচারী সরকারগুলোর সঙ্গে কাজ করে, তখন সে দেশের নিজস্ব যে কৌশল বা মানবাধিকারের ধারণা, তা ভূলুণ্ঠিত হয়। আপনি যখন নিরাপত্তার খাতিরে স্বাধীনতা জলাঞ্জলি দেন, তখন কোনোটাই টেকে না।’
যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন আলকিস্ট ফর হিউম্যান রাইটসের লিনা আল-হাতলুল বলেন, ‘আপনি সৌদি তেল কিনতে পারেন, একই সঙ্গে তাদের দেশে হওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমালোচনাও করতে পারেন।’
আল-হাতলুল তাঁর বোনের জন্য ন্যায়বিচারের দাবিতে আন্দোলন করছেন। তাঁর বোন লুজাইন বহু বছর ধরে নারী অধিকার নিয়ে কাজ করছেন। তিনি সৌদি আরবে নারী গাড়িচালকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। এ লড়াই করতে গিয়ে তাঁকে তিন বছর জেল খাটতে হয়েছে। এখন তিনি জেলের বাইরে থাকলেও সৌদি আরব ত্যাগে তাঁর ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
আলাউধের বাবা সালমান ইসলামি পণ্ডিত। তিনি সৌদিতে রাজনৈতিক বন্দী। ২০১৭ সালে কাতার ও অন্যান্য উপসাগরীয় দেশের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ অবস্থানের পক্ষে একটি টুইট করায় তাঁকে বন্দী করা হয়।
এই দুই অধিকারকর্মী খাসোগি হত্যকাণ্ড নিয়ে কথা বলেন ডয়চে ভেলের সঙ্গে।
গত এক মাসে সৌদি আরবের গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলোর মধ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে কেমন করে সবকিছু স্বাভাবিক হতে পারে বা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি, গ্রিসের সঙ্গে বৈদ্যুতিক গ্রিডের সংযোগ, সৌদি আরবে মার্কিন ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরির প্রতিষ্ঠান লুসিডের প্রথম কারখানা স্থাপন ইত্যাদি।
অথচ পাঁচ বছর আগেও এ সময় খবরের শিরোনামগুলো ছিল ভিন্ন। যেমন ওয়াশিংটন পোস্টের খবর ছিল ‘সিআইএ বলছে, খাসোগি হত্যার পেছনে সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের হাত।’ নিউইয়র্ক টাইমসের খবর ছিল, ‘খাসোগি হত্যা: কীভাবে একটি সৌদি নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের গোমর ফাঁস।’