যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ ব্যর্থ হলে আবার যুদ্ধ শুরু করতে প্রস্তুত ইসরায়েল: নেতানিয়াহু
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা ব্যর্থ হলে তাঁর দেশ হামাসের বিরুদ্ধে আবার যুদ্ধ শুরু করতে প্রস্তুত রয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় এক টেলিভিশন বক্তৃতায় তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।
‘যুদ্ধবিরতি সাময়িক’ এবং ‘অভিযান এখনো শেষ হয়নি’ জানিয়ে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আবার গাজায় হামলা চালানোর অধিকার ইসরায়েলের রয়েছে। এটা যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, উভয়ে সমর্থন করবেন। আমরা যদি আবার হামলা শুরু করি, তা হবে আরও জোরালো।’
‘আমরা মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা বদলে দিয়েছি’ জানিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, হামাস বর্তমানে ‘সম্পূর্ণ নিঃসঙ্গ’।
গতকাল সন্ধ্যার বক্তৃতার আগে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ‘জিম্মিদের মধ্যে কাদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে, হামাসের সেই তালিকা আমাদের হাতে না আসা পর্যন্ত ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি করবে না। চুক্তির লঙ্ঘন সহ্য করবে না ইসরায়েল।’
ইসরায়েলের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে যে ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে, তার একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা এখনো তালিকার বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলেননি।
ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষগুলো বলছে, আজ রোববার যে তিন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে তাঁদের নাম এখনো তাঁরা পাননি।
১৫ মাস যুদ্ধের পর ইসরায়েল ও হামাস গত বুধবার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি ৪২ দিনের। গাজার স্থানীয় সময় আজ সকাল সাড়ে আটটা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হচ্ছে।
যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে ১ হাজার ৮৯০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি বন্দীকে ছেড়ে দেবে ইসরায়েল। যুদ্ধবিরতির অন্যতম মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসর গতকাল এ তথ্য জানিয়েছে।
যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের ১৬তম দিনে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এই ধাপে ‘স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ওপর জোর দেওয়া হবে’।
দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতির শর্তগুলো এখনো স্পষ্ট নয়। তবে এই ধাপে অন্য সব জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিনিময়ে আরও ফিলিস্তিনিকে কারাগার ও বন্দিশালা থেকে ছেড়ে দেবে ইসরায়েল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। এসব জিম্মির মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় এখনো ৯৪ জন রয়ে গেছেন, যাঁদের ৩৪ জন মারা গেছেন বলে মনে করে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।
গাজায় ১৫ মাসের যুদ্ধে ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার একটি বড় অংশ নারী ও শিশু। অবরুদ্ধ উপত্যকাটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ, তথা ১৯ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।