ইরাকে একসঙ্গে আটজনকে ফাঁসি
ইরাকে ‘সন্ত্রাসবাদের’ দায়ে আটজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও একটি নিরাপত্তা সূত্র এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছে। এক মাসের কিছু বেশি সময়ের মধ্যে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো একসঙ্গে কয়েকজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলো।
ইরাকে ‘সন্ত্রাসবাদের’ দায়ে আদালত সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শতাধিক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারদণ্ড দিয়েছেন।
ইরাকের আইনে সন্ত্রাসবাদ ও খুনের দায়ে শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। আর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে প্রেসিডেন্টের সই থাকা বাধ্যতামূলক।
নাসিরিয়াহ শহরের আল-হাট কারাগারের একটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, সন্ত্রাসবাদের দায়ে আটজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাঁরা ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর সদস্য। গতকাল বৃহস্পতিবার বিচার মন্ত্রণলায়ের একটি দলের তত্ত্বাবধানে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তাঁদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
চিকিৎসাসংক্রান্ত একটি সূত্র বলেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ফাঁসি দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, এমন আটজনের মরদেহ পেয়েছে।
নাসিরিয়াহতে আল-হাট একটি কুখ্যাত কারাগার। ইরাকিরা বিশ্বাস করেন, যাঁরা এই কারাগারে যান, তাঁরা কখনো জীবিত বের হন না।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ইরাকের গবেষক রজো সালিহি বলেন, এভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা মানে হলো ইরাককে এই দণ্ড বন্ধের যে আহ্বান জানানো হচ্ছে, তা তারা কানে তুলছে না। তিনি আরও বলেন, বছরের পর বছর ধরে অস্বচ্ছ বিচারপ্রক্রিয়া ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও মৃত্যুদণ্ড দিয়ে মানুষকে ফাঁসিতে ঝোলানো চলছে।
৬ মে ইরাকে সন্ত্রাসবাদের দায়ে ১১ জনকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। এর আগে ২২ এপ্রিলও এমন ঘটনা ঘটে।
গত বছর জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের নিয়োগপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞরা তাঁদের প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, নাসিরিয়াহ কারাগারে গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর ১৩ জন পুরুষ বন্দীকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়, ২০২০ সালের ১৬ নভেম্বরের পর এটি সর্বোচ্চ সংখ্যার। ২০২০ সালের সেই দিনে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল।
২০১৪ সালে সিরিয়া ও ইরাকের বিপুল এলাকা দখল করে ‘খেলাফত’ ঘোষণা করে আইএস। ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের সহায়তায় ইরাকি বাহিনীর হাতে আইএসের পতন ঘটে। ২০১৯ সালে আইএসকে সিরিয়ায় তার দখল করা শেষ অঞ্চলটি থেকে বিতাড়িত করা হয়। কিন্তু এখনো এরা প্রত্যন্ত এলাকা ও মরুভূমির গোপন আস্তানা থেকে চোরাগুপ্তা হামলা চালায়।