গাজায় দিনে ১০ শিশু একটি বা দুটি পা হারাচ্ছে: ইউএনআরডব্লিউএ
গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধে প্রতিদিন ১০টি শিশুকে তাদের একটি কিংবা দুটি পা হারাতে হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য নিযুক্ত জাতিসংঘের ত্রাণ কার্যক্রম সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) এসব তথ্য জানিয়েছে।
ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘মূলত আমরা প্রতিদিন এমন ১০টি করে শিশুকে পাচ্ছি, যারা গড়ে এক পা বা দুটি পা হারাচ্ছে।’
জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের তথ্যের বরাতে লাজারিনি বলেন, হাত হারানো শিশুদের এ হিসাবের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
জাতিসংঘের এ কর্মকর্তার মতে, প্রতিদিন ১০টি শিশুর মানে হলো গাজায় ২৬০ দিনের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে প্রায় ২ হাজার শিশু পা হারিয়েছে।
লাজারিনি বলেন, যে পরিবেশের মধ্যে অস্ত্রোপচার করে আহত শিশুদের ক্ষতবিক্ষত পা বিচ্ছিন্ন করতে হয় তা ভয়ংকর। কখনো কখনো অ্যানেসথেসিয়া ছাড়াই অস্ত্রোপচার করতে হয়। তাঁর মতে, গাজার শিশুদের এখন ‘চড়া মূল্য’ দিতে হচ্ছে।
সোমবার সেভ দ্য চিলড্রেন প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ টেনে ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান লাজারিনি বলেন, গাজায় চলমান যুদ্ধে ২১ হাজারের মতো শিশু নিখোঁজ আছে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিখোঁজদের মধ্যে অন্তত ১৭ হাজার শিশু পরিবারবিচ্ছিন্ন বা তাদের কোনো সঙ্গী নেই বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর প্রায় ৪ হাজার শিশু ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। গণকবরে ঠাঁই হওয়া শিশুর সংখ্যা কত তা জানা যায়নি।
এখানেই শেষ নয়। ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক হামলা শুরুর পর থেকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যতজন নিহত হওয়ার হিসাব দিয়েছে তার মধ্যে শিশুরাও আছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুসারে, যুদ্ধে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৭ হাজার ৬৫৮ জন নিহত হয়েছেন।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালায়। ইসরায়েলের সরকারি হিসাব অনুসারে, ওই হামলায় ১ হাজার ১৯৫ জন নিহত হন। জিম্মি করা হয় ২৫১ জনকে। এর মধ্যে ১১৬ জন এখনো সেখানে জিম্মি। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, জিম্মিদের মধ্যে ৪২ জন মারা গেছেন।
হামাসের হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজা উপত্যকায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল।