‘আমি ভয়ও পাচ্ছি, কারণ ইসরায়েলিদের বিশ্বাস করি না’
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকরের জন্য অধীর অপেক্ষা নিয়ে সময় গুনছেন ফিলিস্তিনিরা।
উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনায় গাজাবাসীদের মধ্যে আনন্দ-উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে। তবে তাঁদের মধ্যে কাজ করছে শঙ্কাও।
গাজার বাস্তুচ্যুত নারী লতিফা কাশকাশ বলেন, তিনি খুশি। কারণ, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে তিনি তাঁর বসত এলাকায়, বাড়িতে ফিরে যাবেন।
তবে লতিফার মধ্যে আশঙ্কাও আছে। তিনি বলেন, ‘আমি ভয়ও পাচ্ছি। কারণ, আমি ইসরায়েলিদের বিশ্বাস করি না।’
১৫ মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় প্রিয় মানুষদের হারানোয়, সম্পত্তি ধ্বংস হওয়ায় লতিফা ভীষণ শোক-দুঃখ অনুভব করছেন বলে জানান।
গাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা নিজেদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বিধ্বস্ত উপত্যকাটি পুনর্নির্মাণের অঙ্গীকার করছেন। তাঁদের একজন গাজার প্রবীণ অধিবাসী মাহমুদ আওয়াদ। তিনি উত্তর গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনায় তিনি আনন্দ প্রকাশ করেন।
মাহমুদ আওয়াদ আল-জাজিরাকে বলেন, অনেক প্রিয় মানুষ শহীদ হয়েছেন। এই প্রাণহানির পাশাপাশি সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তা সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনায় তিনি খুব খুশি।
মাহমুদ আওয়াদ বলেন, ইসরায়েলিরা গাজার গাছপালা, খামারগুলো ধ্বংস করেছে। তবে তাঁরা নিজেদের সন্তানদের জন্য, আগামী প্রজন্মের জন্য গাজায় আরও গাছ লাগাবেন। নতুন করে খামার গড়বেন।
গাজার উত্তর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন সৌদ ওয়ারশাগা। তিনি এখন গাজা সিটিতে অবস্থান করছেন। তিনি বলেন, তিনি অত্যন্ত আনন্দবোধ করেছেন।
সৌদ ওয়ারশাগা বলেন, ‘আমরা আমাদের এলাকা, পাড়ায় ফিরে যাওয়ার জন্য জিনিসপত্র প্রস্তুত করছি। আমাদের এলাকার কথা খুব মনে পড়ে।’
এলাকায় ফিরতে যুদ্ধবিরতি আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষার তর সইছে না বলে উল্লেখ করেন সৌদ ওয়ারশাগা। তিনি বলেন, ‘এখান থেকে চলে যাওয়া, বাড়িতে ফিরে যাওয়া প্রথম মানুষগুলোর মধ্যে থাকতে চাই আমি।’
গাজায় অবস্থানরত আল-জাজিরা আরবির সংবাদদাতা জানান, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা শহরের কেন্দ্র থেকে নিজেদের যানবাহন প্রত্যাহার শুরু করেছে।
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার চুক্তি অনুযায়ী, স্থানীয় সময় আজ রোববার সকাল সাড়ে আটটায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।
১৫ মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ৪৬ হাজার ৮৯৯ ফিলিস্তিন নিহত হয়েছেন। আহত ১ লাখ ১০ হাজার ৭২৫ জন। বাস্তুচ্যুত লাখ লাখ মানুষ।