ইসরায়েল তার প্রতিরক্ষা বাহিনীর সব যোদ্ধা ইউনিটের ছুটি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। সেই সঙ্গে জোরদার করেছে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
সিরিয়ায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কমান্ডার নিহত হওয়ার ঘটনায় দেশটির সম্ভাব্য ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন হামলা মোকাবিলায় তেল আবিব ওই পদক্ষেপ নিয়েছে।
গত সোমবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান থেকে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। এতে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদি নিহত হন। হামলায় তিনি ছাড়া নিহত হন অন্তত ১০ জন। তাঁদের মধ্যে ইরানের আরেক জেনারেলসহ ওই বাহিনীর ছয় সদস্য আছেন।
আমরা মনে করি, ইসরায়েলের আগ্রাসন সব কূটনীতিক নিয়মনীতি ও আন্তর্জাতিক আইন ভেঙেছে। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় ধারাবাহিক ব্যর্থতায় ও তাঁর ইহুদিবাদী লক্ষ্য হাসিলে ব্যর্থ হয়ে পুরোপুরি মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন।
এই ঘটনার পর ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেন, কূটনৈতিক মিশনে প্রকাশ্যে এ হামলার জন্য ইসরায়েলকে ‘অনুশোচনা’ করিয়ে ছাড়বে তেহরান।
ইরানের আধা সরকারি মেহের নিউজ এজেন্সির খবর অনুযায়ী, সম্ভাব্য এ হামলার পূর্বসতর্কতা হিসেবে তেল আবিবে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো আবার খুলে দেওয়ার বিষয় বিবেচনা করছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বিবৃতিতে বলেছে, পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) সব যোদ্ধা ইউনিটের ছুটি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আইডিএফ এখন যুদ্ধপরিস্থিতিতে আছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সেনা মোতায়েনের বিষয়টি অব্যাহত মূল্যায়ন কার্যক্রমের অধীনে রয়েছে।
ইসরায়েল বলেছে, পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) সব যোদ্ধা ইউনিটের ছুটি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আইডিএফ এখন যুদ্ধপরিস্থিতিতে আছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সেনা মোতায়েনের বিষয়টি অব্যাহত মূল্যায়ন কার্যক্রমের অধীনে রয়েছে।
এর আগে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির–আবদুল্লাহিয়ান বলেন, ‘আমরা মনে করি, ইসরায়েলের ওই আগ্রাসন সব কূটনীতিক নিয়মনীতি ও আন্তর্জাতিক আইন ভেঙেছে। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় ধারাবাহিক ব্যর্থতায় ও তাঁর ইহুদিবাদী লক্ষ্য হাসিলে ব্যর্থ হয়ে পুরোপুরি মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন।’
এদিকে সিরিয়ায় নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত হোসেন আকবরি বলেন, ইসরায়েলের ওই হামলায় ইরানের জবাব হবে ‘একই মাত্রার ও একই রকম কঠোরতার’।
সিরিয়ায় সোমবার ইরানি কূটনৈতিক মিশন লক্ষ্য করে তেল আবিবের হামলাকে তেহরানের অন্য নেতারা নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করে এর কড়া জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
কূটনৈতিক মিশনে হামলার ওই ঘটনায় নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি ইসরায়েল। তবে ইতিমধ্যে অগ্নিগর্ভ হয়ে থাকা মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি এ ঘটনায় আরও অস্থিতিশীল হয়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
ইরানের হামলার হুমকির প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা প্রসঙ্গে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির কেনেডি স্কুলের বেলফার সেন্টারের জ্যেষ্ঠ ফেলো ইয়াদলিন বলেন, ‘ইরান যদি কাল (আজ আল কুদস দিবসে) হামলা চালায়, তাতে আমি বিস্মিত হব না। আতঙ্কিত হবেন না। আশ্রয়কেন্দ্রে ছোটারও দরকার নেই।’