পশুপাখির খাবার পিষে খাচ্ছে গাজার অনেকে
বেশ কিছুদিন ধরেই ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ত্রাণবাহী গাড়ি ঢুকতে বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল। গাজার বিভিন্ন স্থানে নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই পরিস্থিতিতে উপত্যকাটির অনেক স্থানেই খাদ্যসংকট তীব্র হয়েছে।
উত্তর গাজার অনেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, তাঁদের শিশুরা কয়েক দিন ধরে খাবার পাচ্ছে না। জীবন বাঁচাতে অনেকে পশুপাখির খাবার (শস্যদানা) পিষে খাচ্ছেন। কিন্তু এখন এসব শস্যের মজুতও শেষ হয়ে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় পানিও পাচ্ছেন না অনেকে। একটু পানির জন্য কেউ কেউ মাটি খুঁড়ে পানি সরবরাহের নল খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছেন।
জাতিসংঘ সতর্কবার্তা জারি করে বলেছে, উত্তর গাজায় চরম অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। ইতিমধ্যে সেখানে চরম অপুষ্টিতে থাকা শিশুর সংখ্যা ১৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।
জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণসহায়তা সমন্বয়কারী সংস্থা ওসিএইচএ বলছে, উত্তর গাজায় গত মাসে যেসব সংগঠন ও সংস্থা ত্রাণ দিতে চেয়েছে, তাদের বেশির ভাগই সেখানে যাওয়ার অনুমতি পায়নি। পাশাপাশি সেখানে ত্রাণ দিতে যাদের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে, তাদের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে ইসরায়েলি বাহিনী হস্তক্ষেপ করছে। তারা ঠিক করে দিচ্ছে, কোথায় কীভাবে এ ত্রাণ দিতে হবে।
ওসিএইচএর হিসাবে উত্তর গাজায় বসবাসকারী আনুমানিক তিন লাখ মানুষ ত্রাণসহায়তা থেকে বঞ্চিত। তাঁরা দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির মুখে।
তবে ইসরায়েলি সংস্থা কোগ্যাট দাবি করছে, তারা গাজায় মানবিক ত্রাণসহায়তা প্রবেশে কোনো বাধা দেয়নি।
গাজার বেইত লেহিয়ার স্বাস্থ্য সহায়তাকর্মী মাহমুদ শালাবি বলেন, এত দিন সেখানকার বাসিন্দারা পশুপাখির খাদ্য পিষে আটা বানিয়ে খেয়েছেন। কিন্তু এখন এসবও শেষের পথে, বাজার ঘুরেও কিছু পাওয়া পাচ্ছে না। তিনি বলেন, কয়েক দিন ধরে উত্তর গাজা ও গাজা সিটিতে এই অবস্থা বিরাজ করছে। বাজার থেকে কৌটাজাত খাবারও উধাও হয়ে যাচ্ছে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) চলতি সপ্তাহে বিবিসিকে বলেছে, উত্তর গাজায় সর্বশেষ যে পাঁচটি ত্রাণবাহী গাড়িবহর প্রবেশ করতে চেয়েছিল, তার মধ্যে চারটিই থামিয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।