ইরানে চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া ছয়জনের একজন কারাবন্দীকে তিনবার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ভয় দেখানো হয়েছে। কারাগারে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে যেন তখনই তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে। সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি ফারসি এ খবর জানিয়েছে।
তেহরানের একটি আদালত গত মাসে ধর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগে ২৭ বছর বয়সী সাহান্দ নুরমোহাম্মাদজাদেহকে দোষী সাব্যস্ত করে। সাহান্দের বিরুদ্ধে হিজাববিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে অগ্নিসংযোগ এবং যান চলাচলে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। তবে তিনি তা অস্বীকার করেছেন।
সূত্রটি বলেছে, বিচারের আগে সাহান্দকে ‘ফাঁসি দেওয়ার জন্য চোখ বেঁধে চেয়ারে বসতে বলা হয়েছিল’।
হেফাজতে থাকা মানুষের সঙ্গে নিষ্ঠুর বা অবমাননাকর আচরণ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে নিষিদ্ধ।
ইরানের বিচার বিভাগ ঘোষণা করেছে, হিজাববিরোধী বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
দণ্ডিত ব্যক্তিদের পরিচয় প্রকাশ করেনি বিচার বিভাগ। তবে সাহান্দের আইনজীবী গত শনিবার এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সাহান্দ একজন।
মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ রয়েছে সাহান্দ ও বাকি পাঁচ আসামির। তবে গতকাল সোমবার বিচার বিভাগের প্রধান গোলাম হোসেইন মোহসেনি এজেই বলেছেন, শিগগিরই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে।
‘ঠিকভাবে হিজাব না পরায়’ গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি তেহরানে মাসা আমিনি নামে ২২ বছরের এক তরুণীকে আটক করে ইরানের নীতি পুলিশ। হেফাজতে থাকা অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হলে দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সহিংস উপায়ে ওই বিক্ষোভ দমন করে আসছে ইরানি কর্তৃপক্ষ।
হিউম্যান রাইটস অ্যাকটিভিস্ট নিউজ এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী, চলমান বিক্ষোভে ৬৪ শিশুসহ ৪৭০ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। নিরাপত্তাবাহিনীর ৬১ জন সদস্য নিহত হয়েছেন বলেও সংগঠনটি জানিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বিক্ষোভে দুই শতাধিক প্রাণহানির কথা স্বীকার করেছে ইরানি কর্তৃপক্ষ।