হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফ নিহত, দাবি ইসরায়েলের
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফ নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী আজ বৃহস্পতিবার এমনটাই দাবি করেছে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর ভাষ্য, গত ১৩ জুলাই ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার খান ইউনিস এলাকায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় মোহাম্মদ দেইফ নিহত হন।
ওই বিমান হামলার পর হামাসের আরেক কমান্ডার রাফা সালেমেহ নিহত হওয়ার খবর দিয়েছিল ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। বলা হয়েছে, তখন মোহাম্মদ দেইফ নিহত হওয়ার সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
ইরানের রাজধানী তেহরানে এক হামলায় হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়ার হত্যার খবর জানার এক দিন পর সংগঠনটির সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফ নিহত হওয়ার খবর জানা গেল।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন গতকাল বুধবার সকালে হানিয়ার নিহত হওয়ার খবর প্রচার করে। টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, তেহরানে চালানো হামলায় হানিয়া ও তাঁর এক দেহরক্ষী নিহত হয়েছেন। ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তেহরানে গিয়েছিলেন হানিয়া।
এদিকে রয়টার্সের প্রতিবেদনের তথ্য, মোহাম্মদ দেইফ হামাসের সামরিক শাখা আল–কাসেম ব্রিগেডের কমান্ডার। দেইফের জন্ম ১৯৬৫ সালে, খান ইউনিস শরণার্থীশিবিরে। ১৯৪৮ সালের আরব–ইসরায়েল যুদ্ধের পর এই শরণার্থীশিবির প্রতিষ্ঠিত হয়।
দেইফের নাম ছিল মোহাম্মদ মাসরি। ১৯৮৭ সালে প্রথম ইন্তিফাদা শুরুর পর তিনি হামাসে যোগ দেন। তখন তাঁর নাম হয় মোহাম্মদ দেইফ।
১৯৮৯ সালে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন দেইফ। তখন ১৬ মাস কারাগারে ছিলেন তিনি। হামাসের সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
সূত্রটি আরও জানায়, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব গাজা থেকে বিজ্ঞান বিষয়ে ডিগ্রি নিয়েছেন দেইফ। পদার্থ, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। তবে নানা বিষয়ে তাঁর আগ্রহ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক কমিটির প্রধান ছিলেন। মঞ্চে অভিনয় করেছেন।
গাজায় হামাসের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় অসংখ্য টানেল বা সুড়ঙ্গ রয়েছে। এ নেটওয়ার্ক উন্নয়নে কাজ করেছেন দেইফ। এ ছাড়া তিনি হামাসের বোমা বানানোর প্রকল্পে ভূমিকা রেখেছেন। তবে সচরাচর প্রকাশ্যে আসতেন না দেইফ।
কয়েক দশক ধরে ইসরায়েলের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় দেইফের নাম রয়েছে। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে একাধিকবার হত্যাচেষ্টায় দেইফ একটি চোখ হারান। সেই সঙ্গে পায়ে গুরুতর আঘাত পান তিনি। ২০১৪ সালে ইসরায়েলের বিমান হামলায় দেইফের স্ত্রী, সাত মাসের পুত্রসন্তান ও তিন বছর বয়সী মেয়ের মৃত্যু হয়।