পঁচিশে যেসব বিষয়ে নজর থাকবে

ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণ করবেন। তাঁর ফেরা অভিবাসন, প্রতিরক্ষা থেকে শুরু করে বাণিজ্য—সবকিছুকে প্রভাবিত করতে পারে।

নতুন বছরে বিশ্বজুড়ে নতুন সম্ভাবনা যেমন আছে, তেমনি আছে সংশয়– সংঘাতের আশঙ্কাছবি: রয়টার্স

নতুন সম্ভাবনা, সংশয় আর সংঘাতের আশঙ্কায় শুরু হলো নতুন বছর ২০২৫। বিশ্বজুড়ে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে একদিকে যেমন সম্ভাবনা বাড়ছে, তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের ফিরে আসায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। ফিলিস্তিন, ইয়েমেন, মিয়ানমার, ইউক্রেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংঘাত চলছে। নতুন বছরে রাশিয়া–ইউক্রেনের যুদ্ধবিরতির মতো সম্ভাবনা একদিকে উঁকি দিচ্ছে, আবার ইউরোপের মতো দেশগুলোয় ডানপন্থী রাজনীতিবিদের উত্থানের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এ বছর চোখ রাখতে হবে এমন কয়েকটি সম্ভাব্য বিষয় নিয়ে এ আয়োজন:

ট্রাম্পের নীতি

গত বছরের নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণ করবেন। তাঁর ফিরে আসার বিষয়টি অভিবাসন, প্রতিরক্ষা, অর্থনীতি থেকে শুরু করে বাণিজ্য—সবকিছুকে প্রভাবিত করতে পারে। তাঁর ‘আমেরিকা প্রথম’ নীতিতে শত্রু ও মিত্র তৈরি হবে। এটি ভূরাজনৈতিক পুনর্বিন্যাস, উত্তেজনা বৃদ্ধি এবং এমনকি পারমাণবিক বিস্তারের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

উগ্রপন্থার দিকে ইউরোপ

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে উগ্র ডানপন্থীদের উত্থান দেখা গেছে। ফ্রান্স ও জার্মানি তার উদাহরণ। গত বছর ইউরোপের নির্বাচনগুলোয় দেখা গেছে, কট্টর ডানপন্থী ও অতি রক্ষণশীল দলগুলো থেকে রেকর্ডসংখ্যক আইনপ্রণেতা ইউরোপীয় পার্লামেন্টে নির্বাচিত হয়েছেন। এ ফলাফলে এমন বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় যে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ আকস্মিকভাবে তাঁর দেশে আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেন। এ বছরেও ডানপন্থীদের অগ্রযাত্রা চলতে থাকবে। জার্মানিতে তার ইঙ্গিত দেখা গেছে।

পরিবর্তনে প্রত্যাশী ভোটার

গত বছরের বিভিন্ন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলগুলো সবচেয়ে খারাপ ফল করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশে ক্ষমতাসীন দলগুলো পরাজিত হয়েছে। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশের নেতারা জোট গড়ে ক্ষমতা টিকিয়ে রেখেছেন। তাইওয়ান ও ফ্রান্সের মতো দেশকে ঐক্য গড়ার পথে হাঁটতে হয়েছে। তাই ২০২৫ সালকে প্রত্যাশার বছর বলা যেতে পারে। নতুন নেতারা যেসব প্রত্যাশার কথা বলেছেন, তাঁরা কি তা পূরণ করতে পারবেন? নেতাদের মধ্যে কি পরিবর্তন আসবে? যদি নেতারা পরিবর্তন না হন, তবে আরও বেশি বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে।

সীমান্তে বিশৃঙ্খলা

ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরে ইউক্রেনকে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করার জন্য চাপ দিতে পারেন। এ ছাড়া গাজা, লেবানন ও সিরিয়ায় ইসরায়েলকে মুক্তভাবে হামলা করার স্বাধীনতা দিয়ে দিতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের বাণিজ্য ও সহযোগিতা নিয়ে সংশয়ের সুযোগ নিতে পারে চীন, রাশিয়া, ইরান ও উত্তর কোরিয়া। তারা আঞ্চলিক শক্তিগুলোর ব্যাপারে আরও বেশি হস্তক্ষেপ করতে পারে। এর আগে সুদানে এমনটাই দেখা গেছে। তবে তাইওয়ান অথবা দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি চীনের মুখোমুখি হবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

মূল্যস্ফীতির চ্যালেঞ্জ

নতুন বছরে পশ্চিমা অর্থনীতিগুলো ঘাটতি কমানোর মতো নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। এ জন্য তারা কর বৃদ্ধি, ব্যয় হ্রাস বা প্রবৃদ্ধি বাড়াতে উদ্যোগ নিতে পারে। বর্তমান ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় অনেক দেশকে প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়াতে হবে। 

এআইতে বিনিয়োগ বাড়বে

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের ব্যবসা ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে এআই নিয়ে ব্যাপক বাজি ধরা হয়ে গেছে। এক লাখ কোটি ডলারের বেশি এআই ডেটা সেন্টারগুলোয় বিনিয়োগ হয়েছে। এগুলো কীভাবে ব্যবহার করা হবে, তা এখনো অজানা। প্রতিষ্ঠানগুলোতে এআই বাস্তবায়নের গতিও কম। তবে অনেক কর্মী গোপনে এটা ব্যবহার করছেন।