'অধিকার যাত্রা' শেষে কলকাতায় মহাসমাবেশ
ভারতের মুম্বাই ও দিল্লির পর এবার পশ্চিমবঙ্গে কৃষক–শ্রমিক সমাবেশ হয়েছে। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ২৪ দিনব্যাপী ‘অধিকার যাত্রা’য় শামিল হয় পশ্চিমবঙ্গের ১১৭টি গণসংগঠনের যৌথ মঞ্চ ও বেঙ্গল প্ল্যাটফর্ম অব মাস অর্গানাইজেশনস (বিপিএমও)।
পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলা সদরের রাজবাড়ি স্টেডিয়াম থেকে গত ১১ সেপ্টেম্বর সকালে যাত্রা শুরু হয়। এরপর ওই দিন সকাল ৯টার দিকে এই অধিকার পদযাত্রার আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য ও কৃষক সভার সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা।
পদযাত্রায় বিভিন্ন সময় উপস্থিত ছিলেন বাম বিধায়ক খগেন্দ্র নাথ রায়, সাবেক বাম বিধায়ক দীপক সরকার, সাবেক বাম সাংসদ তারিনী রায়, সিপিএমের কোচবিহারের জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় প্রমুখ। এই অধিকার পদযাত্রা আলীপুর দুয়ার হয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা ও গ্রামগঞ্জ ঘুরে বুধবার কলকাতায় পৌঁছায়।
পদযাত্রা শেষে দুপুরে কলকাতার শহীদ মিনার ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় মহাসমাবেশ। এতে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মানুষ অংশ নেন। পদযাত্রাটি কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, দার্জিলিং হয়ে মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি ও বর্ধমান হয়ে কলকাতায় আসে।
সমাবেশে বাম দলের নেতা ও গণসংগঠনের প্রতিনিধিরা তাঁদের ভাষণে অবিলম্বে রাজ্যে কৃষক-শ্রমিক স্বার্থ রক্ষার আন্দোলনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তাঁরা বলেন, রাজ্যজুড়ে সাম্প্রদায়িকতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বেকার সমস্যা তীব্র, চাকরি নেই, মানুষের পেটে ভাত নেই। শ্রমিকেরা ন্যায্য মজুরি পাচ্ছে না। কৃষকেরা ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না। সাম্প্রদায়িকতার বিষ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। আর এ জন্য দায়ী শাসক দল তৃণমূল ও বিরোধী দল বিজেপি। এদের প্রতিহত করা না গেলে কৃষক-শ্রমিকের মুখে হাসি ফোটানো যাবে না। তাই ফের কৃষক-শ্রমিকদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এই সমাবেশ।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র সমাবেশে বলেন, ‘গোটা পশ্চিমবঙ্গে মানুষের জীবন-জীবিকা আজ আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। গরিবের পেটে অন্ন নেই। রাজ্যে নেই চাকরি। বেকার সমস্যায় ভুগছে রাজ্যের লাখো মানুষ। আয় নেই কৃষকের, পাচ্ছেন না ফসলের ন্যায্য মূল্য। শ্রমিকেরা পাচ্ছেন না ন্যায্য মজুরি ও বেতন। আজ কেন্দ্রে মোদি আর রাজ্যে মমতা দুজনেরই এক রাস্তা হয়ে গেছে। শোষণ আর বঞ্চনায় মানুষ দিশেহারা। তাই আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, শোষণ আর বঞ্চনার বিরুদ্ধে, কৃষক ও শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য জীবন-জীবিকা আদায়ের জন্য এবং ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লড়তে হবে। রুখে দাঁড়াতে হবে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। হটাতে হবে মোদিকে। অধিকার আদায়ের জন্য একাত্ম হতে হবে মোদি-মমতার নীতির বিরুদ্ধে।’ সমাবেশে বিভিন্ন বামপন্থী রাজনৈতিক দল ও গণসংগঠনের নেতারা ভাষণ দেন।