ভারতে ভোটের ঘুঁটি সচল
ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনের উদ্যোগে শামিল হওয়া ভারতের তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘এক দেশ এক ভোট’ আহ্বানে সাড়া দিতে চলেছেন। নির্দিষ্ট সময়ের মাস ছয়েক আগেই তিনি রাজ্য বিধানসভার ভোট এগিয়ে আনতে উদ্যোগী। আজ রোববার তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনের চতুর্থ বর্ষপূর্তি। রাজ্য মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকও ডাকা হয়েছে ওই দিন। সেই বৈঠকেই বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হতে চলেছে।
তেলেঙ্গানা বিধানসভার ভোট হওয়ার কথা আগামী বছরের মে মাসে। কিন্তু দলীয় সূত্রের খবর, চন্দ্রশেখর রাও চাইছেন আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও মিজোরামের সঙ্গে তেলেঙ্গানার ভোট করিয়ে ফেলতে।
ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগকে সমর্থন করেও চন্দ্রশেখর রাও ইদানীং বিজেপির দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করেছেন। সমর্থন করেছেন ‘এক দেশ এক ভোট’ স্লোগানকেও। রাজনৈতিক জল্পনা, জোটে সরাসরি যোগ না দিলেও ভোট-পরবর্তী পরিস্থিতিতে চন্দ্রশেখর রাও ‘রাজ্যের স্বার্থে’ কেন্দ্রে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারকে সমর্থন দেবেন।
বিধানসভা ভেঙে দিয়ে চন্দ্রশেখর রাও ভোট এগিয়ে আনার প্রস্তাব করলেও ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে চার রাজ্যের ভোট হবে কি না সন্দেহ। বিজেপির একটা বড় অংশ চাইছে, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ের ভোট লোকসভার সঙ্গে একযোগে সারতে। দলের এই অংশ চায় না, বিজেপি-শাসিত ওই তিন রাজ্যের সম্ভাব্য খারাপ ফলের বোঝা ও দায় ঘাড়ে নিয়ে নরেন্দ্র মোদি লোকসভা ভোটে যান। সে ক্ষেত্রে তেলেঙ্গানাকেও ভোটের জন্য এপ্রিল-মে মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।
লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই রাজ্যে রাজ্যে নতুন মেরুকরণের প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে দুই বড় রাজ্য উত্তর প্রদেশ ও বিহারে। উত্তর প্রদেশে সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ও বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) সম্ভাব্য জোট গঠনে চিন্তিত বিজেপি এসপিতে ভাঙন ধরাতে তৎপর। উত্তর প্রদেশ নিয়ে বিজেপি যতটা চিন্তায়, বিহার নিয়ে ততটা না হলেও এই রাজ্যে তাদের জোট অটুট থাকবে কি না সন্দেহ। নিতিশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দল ছাড়াও বিহারে বিজেপির জোটে রয়েছে রামবিলাস পাসোয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি) ও উপেন্দ্র কুশওয়াহার রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টি (আরএলএসপি)। এই দুই দলেরই প্রধান শক্তি দলিত সমর্থন। বর্ণহিন্দুদের হাতে দেশজোড়া ‘দলিত নির্যাতনে’ দুই দলই অসন্তুষ্ট। তপসিল জাতি ও উপজাতিদের ওপর অত্যাচার বন্ধে প্রচলিত আইন সংশোধনের চেষ্টায় যিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন, সেই বিচারপতি এ কে গোয়েলকে অবসর গ্রহণের পরদিনই ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান করায় রামবিলাস ও উপেন্দ্র কুশওয়াহা দুজনেই ক্ষুব্ধ।