ভারতের রাজনীতি
কাশ্মীর শান্ত, তবে শান্তি ফেরেনি
২০১৯ সালের ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা রদ করা হয়েছিল। এর কিছুদিন পর শুরু হয় নির্বাচনী কেন্দ্রের পুনর্বিন্যাসের প্রক্রিয়া।
আড়াই বছর পর আবার পর্যটক-বিস্ফোরণ দেখল ভারতশাসিত কাশ্মীর। রাজধানী শ্রীনগরে সাধারণত যে হোটেলে আমি উঠি, সেখানে আগামী কয়েক মাসে কোনো কক্ষ পাওয়া যাবে না বলে জানাল হোটেল কর্তৃপক্ষ। কলকাতা ও বাংলাদেশ থেকে অনেকেই বেড়াতে গিয়েছেন, এদের মধ্যে যাঁরা থাকার জায়গা ঠিক করে যাননি, তাঁদের হোটেলে কক্ষ পেতে বেশ অসুবিধা হয়েছে।
গত মার্চের মাঝামাঝি শ্রীনগর ও জম্মুতে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেল। কাশ্মীরে পর্যটন সংস্থাগুলোর সমিতি টিএএকের সভাপতি ফারুখ কুথো বলেন, কাশ্মীরে হোটেলের ৯০-৯৫ শতাংশ কক্ষে পর্যটক রয়েছেন। তাঁর কথায়, বাম্পার ব্যবসা হচ্ছে। দৈনিক ৩০-৪০ হাজার মানুষ আসছেন। পর্যটকদের মধ্যে বেশির ভাগ আসছেন মহারাষ্ট্র, গুজরাট ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে।
২০১৯ সালের ৫ আগস্ট নরেন্দ্র মোদির সরকার ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা রদ করেছিল। এর মধ্য দিয়ে দুই টুকরা হয় জম্মু-কাশ্মীর। লাদাখকে বের করে তৈরি করা হয় নতুন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, যার কোনো বিধানসভা থাকবে না। জম্মু-কাশ্মীরকেও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা হয়। তবে তার বিধানসভা থাকবে। এর কিছুদিন পর শুরু হয় নির্বাচনী কেন্দ্রের পুনর্বিন্যাসের (ডিলিমিটেশন) প্রক্রিয়া।
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের সময়ও এ রকম ভিড় ছিল উপত্যকায়। পাইন গ্রোভ নামে একটি বড়সড় হোটেলের মালিক আবদুল লতিফ বলেন, হয়তো এর চেয়ে কিছু বেশিই ছিল। তারপরে দুই বছর ধরে চলল কখনো কারফিউ, কখনো করোনা। পর্যটন কার্যত শেষ হয়ে গিয়েছিল।
কিসের আশঙ্কায় মানুষ?
পর্যটকেরা ফিরে আসায় খুশি কাশ্মীরের হোটেল মালিকেরা। খুশি পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত সব ধরনের ব্যবসায়ী ও দোকানিরাও। কিন্তু আশঙ্কাও কম নয়।
শ্রীনগরের দক্ষিণে রিগাল চকে খান নিউজ এজেন্সি নামে পত্রিকা বিক্রির একটি বড় দোকান রয়েছে। শ্রীনগরে থাকলে, স্থানীয় পত্র-পত্রিকা উল্টে পাল্টে দেখতে এই দোকানে মাঝেমধ্যে যাই। দোকানের মালিক হিলাল বাটকে কাশ্মীরের একজন অভিজ্ঞ পর্যবেক্ষক বলা যায়। তাঁর সঙ্গে শেষ দেখা হয়েছিল ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পরে। তখন শ্রীনগরে কারফিউ ছিল, অলিগলিতে ছিল আধা সামরিক বাহিনীর টহল। হিলাল সে সময় বলেছিলেন, এভাবে জবরদস্তি করে কাশ্মীরের ওপর কিছু চাপিয়ে দেওয়া যায় না। মাটির নিচের গরম পানির মতো মানুষ ফুঁসছে। যেকোনো মুহূর্তে ফেটে বেরিয়ে আসবে।
কাশ্মীরের অলিগলিতে এখনো আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। যদিও মানুষের ক্ষোভের তেমন বহিঃপ্রকাশ নেই। খোলা চোখে কাশ্মীরের অবস্থা এখন অনেকটাই স্বাভাবিক, পর্যটকেরা আসছেন, দোকান খুলছে, হোটেল-রেস্তোরাঁয় জায়গা পাওয়াও মুশকিল। তাহলে কি কাশ্মীরের মানুষের মধ্যে আর কোনো ক্ষোভ নেই? এমন প্রশ্নে হিলাল বললেন, ‘এই মুহূর্তে মানুষের বিশেষ কিছু করার নেই। তাদের মুখ বুজে থাকতে হবে। মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ রয়েছে, সেই ক্ষোভ চেপে তারা সরকারের নির্দেশ পালন করে চলেছে। এভাবে কত দিন চলে, সেটাই দেখার বিষয়।’
কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে?
হিলালের কথা কতটা সত্য, তা বুঝতে আরও কিছু মানুষের সঙ্গে কথা বললাম। তাঁদের একজন জি এন শাহীন। তিনি কাশ্মীর হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সাতবারের নির্বাচিত সচিব।
গোড়াতেই শাহীন বললেন, তিনি আর সচিব নেই। কারণ, দুই বছর ধরে করোনার কারণ দেখিয়ে বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন করতে দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, নির্বাচনের দিন সকালে কয়েক শ নিরাপত্তারক্ষী এখানে মোতায়েন করা হয়। বলা হয়, এবার নির্বাচন হবে না। এর থেকে বোঝা যাচ্ছে ঠিক কতটা স্বাধীনভাবে কাশ্মীরে আইনজীবীরা কাজ করছেন।
একটি মামলার শুনানির দিন ছিল শাহীনের। তিনি যাওয়ার আগে একটি মামলায় পুলিশ করা একটি অভিযোগপত্র দিয়ে গেলেন। অভিযোগপত্রে আসা অভিযুক্তের নাম ব্যবহার না করার অনুরোধ করে শাহীন বললেন, ‘কী ধরনের ভুয়া অভিযোগের ভিত্তিতে মানুষকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তা অভিযোগপত্র পড়লেই বুঝবেন। বিশেষ সন্ত্রাসবাদ দমন আইনেও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ আইনে জামিন পেতে বহু বছর লাগে।’
অভিযোগপত্রে কাশ্মীরের পুলওয়ামা অঞ্চলের ২৭ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্য বলে চিহ্নিত করে নানা অভিযোগ আনা হয়েছে। কিন্তু সবই ‘বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা’ বা ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া সূত্রের’ খবরের ওপর ভিত্তি করে। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, পুলিশ ‘অনেক কষ্ট করে, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে অভিযুক্তের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদী দলের যোগাযোগ চিহ্নিত করতে পেরেছে’। কিন্তু অভিযুক্ত ব্যক্তি কোথায়, কীভাবে অপরাধ করেছেন, যে কারণে তাঁকে বিশেষ সন্ত্রাসবাদ দমন আইনে (পাবলিক সেফটি অ্যাক্ট) গ্রেপ্তার করা হলো, তা অভিযোগপত্রে বলা হয়নি।
শুনানি শেষে আধঘণ্টা পর শাহীন ফিরে এসে বলেন, এটাই কাশ্মীরের বৈশিষ্ট্য। তিনি বলেন, এখানে কার্যত যাঁকে যখন খুশি গ্রেপ্তার করা যায়। সাধারণ আইনের পাশাপাশি সরাসরি বিশেষ সন্ত্রাসবাদ দমন আইন—আনলফুল অ্যাকটিভিটিস (প্রিভেনশন) অ্যাক্ট এবং পাবলিক সেফটি অ্যাক্ট ব্যবহার করে গ্রেপ্তার করা হয়। এর ফলে অনির্দিষ্টকালের জন্য এরা জেলে থাকেন। যেকোনো সময় আপনি কাশ্মীরে ১০ থেকে ১২ হাজার লোক পাবেন, যাঁরা একাধিক জেলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছেন। মামলার বিচার শুরু হতে সময় লাগছে, জামিন পাচ্ছেন না, মামলার শুনানির তারিখ ধার্য হচ্ছে না—এমন নানা কারণে বছরের পর বছর কাশ্মীরের কিছু মানুষ জেলের ভেতর দিন কাটাচ্ছেন। একটা অংশ বেরোচ্ছে, তো আর একটা অংশ ঢুকছে। নানা বিষয় নিয়ে সরকারের কাজের প্রতিবাদ করা হলো এদের প্রধান ‘অপরাধ’।
শাহীন আরও জানান, অনেকে এমনও আছেন, যারা কিছুই করেননি, কিন্তু গ্রেপ্তার হয়েছেন। তিনি একটা উদাহরণও দিলেন। কাশ্মীরের বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী খুরম পারভেজ কিছু মামলা সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করছিলেন। সরকারের কাছে এমন কাজ ‘অপরাধ’। সে কারণে তাঁকে সন্ত্রাসবাদ দমন আইনে গ্রেপ্তার করে দিল্লি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সবাই যেন ‘অধিকৃত’ অঞ্চলের
কাশ্মীরে নাগরিক সমাজের অবস্থা করুণ বললেও কম বলা হয়। কোথাও কোনো কিছু নিয়ে মুখ খোলার পরিবেশ নেই। তিনি আইনজীবীই হোন কি ব্যবসায়ী, কি শিক্ষক—সবার প্রায় একই অবস্থা। সরকারবিরোধী কথা বলার অধিকার নেই, দৈনন্দিন সমস্যার কথা তুলে ধরার অধিকারও খুব একটা নেই। এর জন্য সাংবাদিকেরা সবচেয়ে বেশি হয়রানি, নির্যাতন ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। পরিস্থিতির এতটাই অবনতি হয়েছে যে এখন কাশ্মীর নিয়ে নিজেদের নাম প্রকাশ করে কথা বলতে নারাজ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও সম্পাদকেরা।
সম্প্রতি বিশেষ সন্ত্রাসবাদ দমন আইনে গ্রেপ্তার হয়েছেন ফাহাদ শাহ। বয়সে তরুণ এই সাংবাদিক আন্তর্জাতিক স্তরে পরিচিত। তাঁর পত্রিকা ‘কাশ্মীরয়ালা’ কার্যত বন্ধ। পত্রিকাটির একজন সাংবাদিক বলেন, এত খারাপ অবস্থার মধ্যে কাশ্মীর কখনো পড়েনি। ফিলিস্তিনিদের মতো এখানেও সবাই যেন অধিকৃত অঞ্চলের বাসিন্দা।
এরপরও কাশ্মীরে এখনো অন্তত ২০টি পত্র-পত্রিকা নিয়মিত বেরোচ্ছে। তবে দুই সপ্তাহ ধরে সংবাদপত্রে সরকারবিরোধী একটি লেখাও খুঁজে পেলাম না। প্রায় প্রতিদিনই সংবাদপত্রের শিরোনাম হচ্ছে, কাশ্মীরে বাইরে থেকে কত হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ আসছে বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির উন্নতির জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মনোজ সিনহা কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন, তা নিয়ে।
মোটা দাগে তিন ধরনের সাংবাদিক কাশ্মীরে এই মুহূর্তে রয়েছেন বলে স্থানীয় সাংবাদিকেরা জানান। এক. যাঁরা পুরোপুরি সরকারের হয়ে লেখেন। দুই. যাঁরা অল্পবয়স্ক এবং কিছুটা ঝুঁকি নিয়ে বিদেশের বা কাশ্মীরের বাইরের পত্রিকায় ফ্রিল্যান্সিং করেন। এদের অধিকাংশই কাশ্মীর ছেড়ে দিল্লিতে গিয়ে থাকতে শুরু করেছেন। তিন. যাঁরা এখনো কাশ্মীরে থেকে লেখার চেষ্টা করছেন। এই শ্রেণি খুবই ক্ষুদ্র এবং এদের হয় থানায়, না হলে আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিতে হচ্ছে। এদের অনেকেরই ল্যাপটপ এবং ফোন পুলিশের হেফাজতে রয়েছে বলে কয়েকজন সাংবাদিক জানান। এদের বাইরে চাপের মুখে যাঁরা আর লিখতে চান না, তাঁদের অনেকেই পেশা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
কাশ্মীরের বর্তমান অবস্থা নিয়ে কথা হয় বহুজাতিক একটি ওষুধ কোম্পানির বিপণন বিভাগের সাবেক প্রধান আবদুল হামিদের সঙ্গে। শ্রীনগর শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত লাল চকে ঘুরতে ঘুরতে বললেন, এটার একটা ভালো দিক আছে। এই পরাধীনতার মধ্যে থাকতে থাকতে, মানুষের রুখে দাঁড়ানোর খিদেটা আরও বাড়ছে। এই অঘোষিত সামরিক ব্যবস্থা সম্পর্কে তাদের ভয় ক্রমেই কমে যাচ্ছে। এ কারণে আড়াই বছর ধরে কাশ্মীরের তেমন বড় ধরনের কোনো সংঘাত না হওয়া সত্ত্বেও নিরাপত্তা বাহিনীর আয়তন কমাতে ভয় পাচ্ছে দিল্লির সরকার। লাল চকের বিভিন্ন অংশে মোতায়েন করা নিরাপত্তা বাহিনীর দিকে তাকিয়ে তিনি বলেন, ‘মোটামুটি এক বর্গকিলোমিটার এলাকার মধ্যে রয়েছেন অন্তত ৫০ হাজার নিরাপত্তারক্ষী। কিন্তু আমরা ধরে নিচ্ছি, কাশ্মীর স্বাভাবিক। প্রশ্ন হলো, কাশ্মীর স্বাভাবিক হলে শুধু লাল চকে এই ফৌজ ভারত সরকারকে রাখতে হচ্ছে কেন?’
কেন ভারত নিজেকে কাশ্মীরে ‘সফল’ মনে করছে
বস্তুত কাশ্মীরের অবস্থা যে স্বাভাবিক নয়, তা স্বীকার করে নিচ্ছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সর্বোচ্চ স্তরের কর্মকর্তারাও। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভারতের গোয়েন্দা বিভাগের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, কাশ্মীরে অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড কমেছে, রাস্তায় বেরিয়ে প্রতিবাদের ঝোঁকও নেই। তার মানে এই নয় যে যাবতীয় সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। যেকোনো সময়ই জঙ্গিবাদ বাড়তে পারে। তবে বিষয়টি অনেকটাই নির্ভর করছে পাকিস্তানের ভূমিকার ওপর।
ভারতের কাশ্মীরের নিরাপত্তা দেখভালের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের বক্তব্য, যেসব মাপকাঠির ওপর ভিত্তি করে কাশ্মীরে বেসামরিক স্তরে আন্দোলন বা সশস্ত্র জঙ্গিবাদ বাড়ে বা কমে, তার অনেক কিছুই ভারত সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যেমন আন্তর্জাতিক স্তরে পাকিস্তানের ওপর জঙ্গিবাদ দমনে চাপ বাড়ায় তারা কাশ্মীরে জঙ্গি পাঠাতে পারছে না। যদিও পাকিস্তান বরাবরই এমন অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, গত কয়েক বছরে কাশ্মীরে ৭০-৮০ জনের বেশি বিদেশি জঙ্গি ছিল না। এদের মধ্যে অন্তত ৬০ জন পাকিস্তানের নাগরিক এবং অন্তত ১০ জন পেশোয়ারের পাঠান সম্প্রদায়ের। এ ছাড়া ৩০-৪০ জন স্থানীয় জঙ্গি সক্রিয় ছিল এবং এখনো আছে।
অতীতে বিভিন্ন ধরনের সশস্ত্র এবং বেসামরিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের মধ্যে একটা যোগসূত্র হিসেবে কাজ করত ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক সংগঠন জামায়াতে ইসলামি, কাশ্মীর। ২০১৯ সালে কাশ্মীরে জামায়াতে ইসলামি নিষিদ্ধ হয়েছে।
ভবিষ্যতে আল–কায়েদা ইন ইন্ডিয়ান সাব–কনটিনেন্ট (একিউ-আইএস) কাশ্মীরসহ গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় জামায়াতের জায়গা নিতে পারে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
জঙ্গি হামলায় এখনো সাধারণ মানুষ ও নিরাপত্তাকর্মী নিহত হচ্ছে। যে কারণে অনেক আড়ম্বর করে ‘কাশ্মীর ফাইলস’ সিনেমা বানানো হলেও, কাশ্মীরি পণ্ডিতেরা এখনো সেখানে ফেরেননি। ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতির পরিবর্তনের কারণে কাশ্মীরের অবস্থা রাতারাতি পাল্টে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন কাশ্মীর নীতি-নির্ধারকেরা। অর্থাৎ কাশ্মীর সমস্যা মিটে গেলেও মেটেনি।
এই অবস্থায় ‘ডিলিমিটেশনের’ কাজ শুরু হয়েছে। অর্থাৎ কোন বিধানসভা অঞ্চল হিন্দুপ্রধান জম্মুর সঙ্গে থাকবে এবং কোন কেন্দ্র মুসলিমপ্রধান কাশ্মীরের সঙ্গে জুড়বে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে গভীর বিতর্ক। এই বিতর্কের শেষে জম্মু–কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা এই বছরের শেষে। কিন্তু ‘ডিলিমিটেশন’ নিয়ে বিতর্ক যদি আরও বাড়ে (কারণ, ভবিষ্যতে মুখ্যমন্ত্রী একজন হিন্দু হবেন না মুসলিম এই প্রশ্ন জড়িত), তবে শান্ত জন্মু–কাশ্মীর অশান্ত হয়ে উঠতে যে বেশিক্ষণ লাগবে না, তা স্বীকার করছে সব পক্ষই। ফলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা শিথিল করার প্রশ্নও আপাতত উঠছে না।