২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

তাজমহলের ইতিহাস পাল্টাতে মামলা, খারিজ সুপ্রিম কোর্টে

তাজমহল
ফাইল ছবি: টুইটার

তাজমহল নিয়ে আরও এক জনস্বার্থ মামলা খারিজ করে দিলেন সুপ্রিম কোর্ট। গতকাল সোমবার ওই মামলা খারিজ করে বিচারপতি এম আর শাহ ও বিচারপতি সি টি রবিকুমারের বেঞ্চ বলেন, ‘আমরা এখানে ইতিহাস লেখার জন্য বসিনি। ৪০০ বছর ধরে যার অবস্থান, তা সে রকমই থাকুক।’

মামলা খারিজ করে আবেদনকারীকে সুপ্রিম কোর্ট বলেন, তাজমহলের বয়স জানতে আগ্রহী হলে তাঁরা আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার (এএসআই) কাছে আরজি জানাতে পারেন।

সুরজিৎ সিং যাদব নামের এক ব্যক্তি ওই জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন, যাতে তাজমহলের ‘ভুলে ভরা ইতিহাস’ বদলে নতুন করে লেখা যায়। তাঁর দাবি, ইতিহাসের পাঠ্যবইয়ে তাজমহল নিয়ে সব ভুল তথ্য লেখা রয়েছে। তাঁর গবেষণালব্ধ তথ্য দেখাচ্ছে, যেখানে মোগল সম্রাট শাহজাহানের স্ত্রী মমতাজকে সমাধিস্থ করা হয়েছিলে, সেটি ছিল এক হিন্দুর প্রাসাদ। তাঁর আবেদন, ইতিহাসের ভুল তথ্য শোধরানো দরকার। সে জন্য সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিন।

আবেদন শুনে বিচারপতিরা মন্তব্য করেন, ‘আপনি ভুল তথ্য শোধরাতে বলেছেন। তথ্য ভুল না ঠিক, তা আপনি বিচার করবেন?’ বিচারপতিরা এ ধরনের মামলা সম্পর্কে আগে মন্তব্য করে বলেছিলেন, জনস্বার্থে নয়, এগুলো দায়ের করা হয় প্রচারের স্বার্থে। গতকালও ওই আবেদন খারিজ করে সে কথারই পুনরাবৃত্তি করেন।

তাজমহল নিয়ে এটা প্রথম মামলা নয়; এ বেঞ্চই গত অক্টোবর মাসে আরও এক মামলা খারিজ করে দিয়েছিলেন। সে মামলার আবেদনকারীর বক্তব্য ছিল, তাজমহলের অভ্যন্তরে কয়েকটি তালাবদ্ধ কুঠুরি আছে। সেগুলো খোলা হোক। তাহলেই বোঝা যাবে ওই স্থাপত্য আদতে ছিল এক প্রাচীন শিবমন্দির, যার নাম ছিল ‘তেজো মহালয়’। সেই আবেদনকারী ছিলেন বিজেপির অযোধ্যা শাখার মিডিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রধান রজনীশ সিং। এরও আগে ২০১৭ সালে আগ্রার ছয় আইনজীবী তাজমহল নিয়ে এ ধরনের এক মামলা করেছিলেন। সে মামলা সম্পর্কে কেন্দ্রীয় সরকার আদালতকে জানিয়েছিল, আবেদনকারীদের দাবি মনগড়া ও সাজানো।

বিজেপি একার ক্ষমতায় ভারতের শাসনভার গ্রহণ করার পর দেশে হিন্দুত্ববাদী চেতনার বিকাশ ঘটছে দ্রুত। মুসলিম স্থাপত্য ও উপাসনাস্থল নিয়ে চলমান বিতর্ক নতুনভাবে মাথাচাড়া দিচ্ছে। বারানসিতে বিশ্বনাথ মন্দির লাগোয়া জ্ঞানবাপি মসজিদ এবং মথুরায় শ্রীকৃষ্ণের জন্মভূমি লাগোয়া শাহি ঈদগাহ মসজিদ নিয়ে বিতর্ক আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। ওই দুই মামলা এ মুহূর্তে উত্তর প্রদেশের নিম্ন আদালতে বিচারাধীন।