আবার শুরু হবে মানস সরোবর যাত্রা, ভারত-চীন সরাসরি ফ্লাইট

ভারত ও চীনের পতাকা

দীর্ঘ পাঁচ বছর পর আবার শুরু হতে চলেছে কৈলাস–মানস সরোবর যাত্রা। একই সঙ্গে নীতিগতভাবে ঠিক হয়েছে, ভারত ও চীনের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচলও শুরু করা হবে। গত সোমবার চীন সফররত ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রির সঙ্গে চীনের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী উন ওয়েইডংয়ের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রচারিত এক বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানোর পাশাপাশি বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যে প্রবাহিত অভিন্ন নদীর পানিপ্রবাহ বিশ্লেষণ ও অন্যান্য সহযোগিতার বিষয় নিয়েও দুই দেশের বিশেষজ্ঞরা বৈঠক করবেন।

তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর বাঁধ দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভারতে যে উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে, মনে করা হচ্ছে, তা প্রশমনে চীন আগ্রহী। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা না হলেও মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী বিষয়টি ভারত তুলেছিল।

কোভিডের কারণে ২০২০ সালের মে মাস থেকে কৈলাস–মানস সরোবর যাত্রা ও দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান পরিষেবা বন্ধ। তার এক মাস পর ২০২০ সালে জুনে পূর্ব লাদাখের গলওয়ানে দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সেই থেকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে যথেষ্ট আড়ষ্টতা দেখা দিয়েছিল। সম্প্রতি দুই দেশ সীমান্ত উত্তেজনা কমাতে বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। সম্পর্কের বরফ যে গলতে শুরু করেছে, পররাষ্ট্রসচিবের এই চীন সফর তার প্রমাণ।

পররাষ্ট্রসচিবের বৈঠকের পর দুই দেশই বিবৃতি দিয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, তারা চায় ভারত ও চীন পারস্পরিক সন্দেহ ও সংঘাত থেকে সরে আসুক। কেননা, দুই দেশের সম্পর্কের সঙ্গে জনগণের মৌলিক স্বার্থ জড়িয়ে আছে। দুই দেশের সহযোগিতা এশিয়াসহ বিশ্ব শান্তি ও সহযোগিতার পক্ষে জরুরি।

কৈলাস ও মানস সরোবর যাত্রা ধর্মপ্রাণ হিন্দু ও বৌদ্ধদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ঠিক হয়েছে, চলতি বছরের গ্রীষ্মকাল থেকেই বন্ধ থাকা সেই যাত্রা শুরু হবে। এ যাত্রা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে যে চুক্তি রয়েছে এবং যে ধরনের ব্যবস্থা চালু ছিল, সেই অনুযায়ীই নতুন করে যাত্রা শুরু হবে।

গত বছরের অক্টোবরে কাজানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের মধ্যে বৈঠক হয়েছিল। সেই বৈঠকে সম্পর্কের স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে যে কথা হয়েছিল, মিশ্রি-ওয়েইডং বৈঠকে তা পর্যালোচিত হয়। এ সফরে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।