বাবা সিদ্দিককে গুলি করার পরই পুলিশকে মরিচের গুঁড়া ছোড়েন বন্দুকধারীরা
ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের সাবেক মন্ত্রী বাবা সিদ্দিককে গুলি করার পরপরই তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের ওপর মরিচের গুঁড়া ছুড়েছিলেন বন্দুকধারীরা। গুলি করার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা হয়েছে।
গত শনিবার ভারতের রাজনৈতিক দল ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) নেতা বাবা সিদ্দিক মুম্বাইয়ের বান্দ্রা পূর্ব এলাকায় বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হন। বিধায়ক ছেলে জিশান সিদ্দিকের ৬৬ বছর বয়সী বাবা সিদ্দিককে গুলি করা হয়।
এ ঘটনায় তিন সন্দেহভাজন বন্দুকধারীর মধ্যে দুজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁরা হলেন হরিয়ানার বাসিন্দা গুরমেল বালজিৎ সিং (২৩) এবং উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা ধর্মরাজ কাশ্যাপ। আরেক সন্দেহভাজন হলেন উত্তর প্রদেশের শিবকুমার গৌতম। তিনি পলাতক।
পরিকল্পনা অনুযায়ী কথা ছিল, সিং ও কাশ্যাপ বিজয়া দশমীর শোভাযাত্রায় ভিড়ের মধ্যে লুকিয়ে থেকে বাবা সিদ্দিককে গুলি করবেন। তবে বাবা সিদ্দিকের আশপাশে নিরাপত্তাব্যবস্থা এবং জনগণের ভিড় দেখে শিবকুমার তাঁদের বলেন তিনিই প্রথম গুলি ছুড়বেন।
তিন বন্দুকধারীর সবার কাছে মরিচের গুঁড়া ও পিপার স্প্রে ছিল। বাবা সিদ্দিককে লক্ষ্য করে শিবকুমার ছয়টি গুলি ছোড়েন। এর পরপরই তাঁরা পুলিশ কনস্টেবলের ওপর মরিচের গুঁড়া ছুড়ে দেন। শিবকুমার ভিড়ের মধ্যে মিশে পালিয়ে যান। তবে সিং এবং কাশ্যাপ ধরা পড়েন। তাঁদের কাছ থেকে দুটি পিস্তল ও ২৮ রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়।
তিনবারের সাবেক বিধায়ক বাবা সিদ্দিক নিরাপত্তার (নন ক্যাটাগরিজড) আওতায় ছিলেন। তাঁর নিরাপত্তার জন্য পুলিশের তিনজন কনস্টেবল নিযুক্ত ছিলেন। তাঁরা তিনজন তিন পালায় কাজ করতেন। বাবা সিদ্দিককে গুলি করার সময়ও এক পুলিশ সদস্য তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
সূত্র বলছে, গ্রেপ্তার হওয়া দুই সন্দেহভাজন বলেছেন শিবকুমার তাঁদের নেতৃত্ব দিয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদের সময়, তাঁরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন। ওই দুই সন্দেহভাজনের দাবি, একমাত্র শিবকুমারই জানেন যে এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী কে।
সূত্র আরও বলেছে যে অভিযুক্তরা গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের জন্য কাজ করে। গুজরাটের সবরমতি জেলে বন্দী বিষ্ণোই বলিউড অভিনেতা সালমান খানের মুম্বাইয়ের বাড়ির বাইরে গুলির ঘটনায়ও জড়িত ছিলেন। বাবা সিদ্দিকের সঙ্গে সালমান খানের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব থাকার কথা শোনা যায়।
সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা কয়েক মাস ধরে বাবা সিদ্দিকের ওপর নজর রাখছিলেন। তাঁর বাসভবন ও কার্যালয়ের দিকেও নজর রাখছিলেন তাঁরা।
হামলার জন্য প্রত্যেককে অগ্রিম ৫০ হাজার রুপি করে দেওয়া হয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের মাত্র কয়েক দিন আগে অস্ত্রগুলো তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে রোববার বলেছেন, বাবা সিদ্দিককে হত্যার ঘটনায় তৃতীয় অভিযুক্তকে শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।