চক্রব্যূহের কথা বলে আবার কি হয়রানির মুখে পড়ছেন রাহুল
ভারতের লোকসভায় জাতীয় বাজেটের ভাষণে চক্রব্যূহ ভাঙার কথা বলায় সরকার তাঁর ওপর নতুন করে প্রতিশোধ নিতে চাইছে বলে অভিযোগ করলেন বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী। আজ শুক্রবার ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে এই অভিযোগ জানিয়ে তিনি লেখেন, ‘শোধ নিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) তাঁর বিরুদ্ধে নতুন ছক কষছে বলে তিনি খবর পেয়েছেন। ইডির উদ্দেশে রাহুল লিখেছেন, ‘দুই বাহু প্রসারিত করে স্বাগত জানাচ্ছি। চা ও বিস্কুট সহকারে।’
হঠাৎ কেন ইডির এই তৎপরতা, সেই ব্যাখ্যাও রাহুল দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, বাজেট ভাষণে তিনি চক্রব্যূহ ভাঙার কথা বলেছিলেন। মনে হচ্ছে, সেটা তাঁদের পছন্দ হয়নি। ইডির এক সূত্র তাঁকে জানিয়েছেন, তারা নতুন করে তল্লাশি চালানোর ছক কষছে।
বাজেট ভাষণে মহাভারতের চক্রব্যূহর উল্লেখ করেছিলেন রাহুল। বলেছিলেন, অভিমন্যুকে হত্যার জন্য ওই চক্রব্যূহ তৈরি করা হয়েছিল। সেই চক্রব্যূহ দেখতে অনেকটা পদ্মফুলের মতো, যা প্রধানমন্ত্রী জামার বুকে সেঁটে রাখেন। সেই কারণে চক্রব্যূহকে পদ্মব্যূহও বলা হয়।
রাহুলের ব্যাখ্যা ছিল, আদিবাসী, তফসিলভুক্ত জাতি–উপজাতি, দলিত, সংখ্যালঘু, সাধারণ দরিদ্র মানুষ আজকের অভিমন্যু। বিজেপির চক্রব্যূহে তাঁদের প্রাণ ওষ্ঠাগত। ভাবা হয়েছিল, বাজেটে তাঁদের প্রতি সুবিচার করা হবে। কিন্তু তা হয়নি। ফলে চক্রব্যূহে মারা যাচ্ছেন দেশের যুবসমাজ, কৃষক, শ্রমিক, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প মালিক, নারী ও সংখ্যালঘুরা।
রাহুল বলেছিলেন, মহাভারতের যুদ্ধের সময় চক্রব্যূহ রচনা করেছিলেন দ্রোনাচার্য, কর্ণ, কৃপাচার্য, কৃতবর্মা, অশ্বত্থামা ও শকুনি। একালের চক্রব্যূহ তৈরি করে এবং দুই শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি ও গৌতম আদানি। এই মন্তব্যের সঙ্গে সঙ্গেই স্পিকার ওম বিড়লা আপত্তি জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, যাঁরা সভার সদস্য নন তাঁদের নাম নেওয়া যাবে না।
আজ শুক্রবার সকালে রাহুলের মন্তব্য জানাজানি হওয়ার পর কংগ্রেসের পক্ষ থেকে লোকসভায় ইডি, সিবিআইয়ের মতো সরকারি সংস্থার ‘অপব্যবহার’ নিয়ে আলোচনার জন্য মুলতুবি প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়। নোটিশে বলা হয়, লোকসভা ভোটের রায় সত্ত্বেও সরকার এসব সংস্থার মাধ্যমে বিরোধীদের আতঙ্কগ্রস্ত করে রাখার রাস্তা থেকে সরেনি।
ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় অর্থ পাচারের অভিযোগে রাহুল গান্ধীকে ইডি পাঁচ দিন ধরে দীর্ঘ ৫০ ঘণ্টা জেরা করেছিল।