বিশেষ মর্যাদার দাবি ঘিরে জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় হট্টগোল

জম্মু–কাশ্মীর বিধানসভায় ৩৭০ অনুচ্ছেদ ফিরিয়ে আনার প্রস্তাবের বিরোধী বিজেপির বিধায়কদের সঙ্গে অন্য বিধায়কদের ধস্তাধস্তি। ৭ নভেম্বরছবি: এএফপি

সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদসহ জম্মু–কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ফেরানোর দাবিতে আজ শুক্রবারও বিধানসভা উত্তাল হলো।

উত্তেজিত ও মারমুখী সদস্যদের বের করে দেওয়া হলো সভাকক্ষ থেকে। প্রধান বিরোধী দল বিজেপির অভিযোগ, স্পিকার নিজেই সরকারি প্রস্তাবের রচয়িতা।

এই গোলমালের মধ্যেই আজ শুক্রবার শেষ হলো নতুন বিধানসভার পাঁচ দিনের প্রথম অধিবেশন।

সরকারি প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বিশেষ মর্যাদা ফেরানোর জন্য কেন্দ্র অবিলম্বে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করুক। কারণ, সংবিধান প্রদত্ত বিশেষ মর্যাদা কেন্দ্রীয় সরকার খারিজ করেছে রাজ্যের মানুষের সঙ্গে আলোচনা না করে।

বিশেষ মর্যাদা ফেরানোর কথা নির্বাচনী প্রচারের সময়েই উপত্যকার দলগুলো নিজেদের মতো করে তুলেছিল।

ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) সরাসরি সেই মর্যাদা ফেরানোর দাবি না জানালেও তাদের পেশ করা প্রস্তাবে বলা হয়, মানুষ যে ওই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেনি, তা ভোটের রায়েই স্পষ্ট। অতএব, সরকার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মর্যাদা ফেরানো নিয়ে কথাবার্তা শুরু করুক।

সরকারপক্ষের পেশ করা প্রস্তাবটি গত বুধবার কণ্ঠভোটে গৃহীত হয়। এতে সরাসরি ৩৭০ অনুচ্ছেদের উল্লেখ যদিও ছিল না। কিন্তু আগের দিন সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫ (ক) অনুচ্ছেদ পুনঃস্থাপনের দাবি জানিয়ে পিডিপির পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাব তোলার চেষ্টা হয়েছিল। স্পিকার যদিও সেটি খারিজ করে দেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার অনুরূপ প্রস্তাব পেশের চেষ্টা করেন আওয়ামি ইত্তেহাদ পার্টির সদস্য শেখ খুরশিদ, পিডিপির ওয়াহিদ পারা ও পিপলস কনফারেন্স নেতা সাজ্জাদ লোন। তাঁরা ওই দাবি লেখা পোস্টার ও ব্যানার নিয়ে সভাকক্ষের ওয়েলেও নেমে আসেন। বিজেপি সদস্যরা তাঁদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে দুই পক্ষে হাতাহাতির উপক্রম হয়।

স্পিকার বিজেপি ও স্বতন্ত্র সদস্যদের সভা থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেন মার্শালদের। এর কিছুক্ষণ পর বিজেপির অন্য সদস্যরা ওয়াকআউট করেন।

এর আগে বিরোধী নেতা সুনীল শর্মাসহ অন্য বিজেপি সদস্যরা প্রস্তাব খারিজের দাবি জানিয়ে বলেন, তিন দিন ধরে বিধানসভায় যা চলছে, তা গণতন্ত্রের কালো অধ্যায়। সরকার পক্ষ ও অন্য যাঁরা বিশেষ মর্যাদা ফেরানোর দাবি জানাচ্ছেন, তাঁদের মনে থাকা উচিত, দেশের সংসদ ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। বিধানসভা কখনো সংসদের চেয়ে বড় হতে পারে না। সুনীল শর্মা বলেন, ৩৭০ ইতিহাস। কোনো দিনই তা ফিরে আসবে না।

স্পিকার আবদুল রহিম রাথের বলেন, প্রস্তাব পেশ করেছে সরকারপক্ষ। সভার সদস্যরা তা গ্রহণ করেছেন। খারিজ করার অধিকারও তাঁদের। গৃহীত প্রস্তাব তিনি খারিজ করতে পারেন না।