আসামের কাজিরাঙায় বন্যায় এক শিংয়ের গন্ডারসহ ২০০ বন্য প্রাণীর মৃত্যু
ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধির কারণে ভারতের আসাম রাজ্যে বিপর্যস্ত লাখো মানুষের জীবন। কিন্তু ২০১৭ সালের মতো এবার বন্যায় সম্ভবত সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ভারতের অন্যতম বন্য প্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র এবং সাফারি পার্ক কাজিরাঙা। সেখানকার সবচেয়ে দর্শনীয় প্রাণী এক শিংয়ের গন্ডার। এবারের বন্যায় অন্তত ১০টি গন্ডার এ পর্যন্ত মারা গেছে। সরকারি হিসাবে মারা গেছে আরও অন্তত ২০০ পশুপাখি।
আসামের বন দপ্তর এই তথ্য জানিয়ে বলেছে, কাজিরাঙার অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে।
বন দপ্তরের হিসাবমতে, এ পর্যন্ত ১০টি গন্ডার, ১৭৯টি বিলুপ্তপ্রায় ইন্ডিয়ান হগ (হরিণ), বারশিঙ্গা (সোয়াম্প) হরিণ, একটি বহুমূল্য ম্যাকাও, দুটি অন্য পাখি, একটি প্যাঁচা এবং দুটি সম্বর হরিণ প্রাণ হারিয়েছে। গত কয়েক দিনে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও বিলুপ্তপ্রায় এক শিংয়ের গন্ডারের জন্য বিশ্বখ্যাত কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান ও ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের ৪৬টি নজরদারি শিবিরসহ বড় অংশ এখনো পুরোপুরি জলের তলায়। কত বাঘ মারা গেছে, তা বন দপ্তর নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি।
গত মে মাস থেকে অতিবৃষ্টির জেরে ব্রহ্মপুত্রসহ উত্তর-পূর্ব রাজ্যের একাধিক নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে কয়েক লাখ মানুষ ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ হাজার ৩০০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত কাজিরাঙা জঙ্গল।
পৃথিবীর সব প্রান্ত থেকে কাজিরাঙায় পর্যটক আসেন। এমনকি বর্ষায়ও তাঁরা আসেন গভীর অরণ্যে বৃষ্টির সৌন্দর্য উপভোগ করতে। স্বাভাবিকভাবেই এবার তাঁরা আসতে পারেননি, যে কারণে আসামের পর্যটন দপ্তর বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছে।
আসামের বন দপ্তর জানিয়েছে, পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি প্রজাতির একশৃঙ্গ গন্ডার কাজিরাঙাতেই আছে। গন্ডার ছাড়াও এখানে রয়েছে ১৩৫টি বাঘ।
বন সূত্রের খবর, গত এক দশকে আসামের বন্যায় ৮৫টি গন্ডারের মৃত্যু হয়েছে। ২০১৭ সালের বন্যায় সর্বাধিক ২৪টি গন্ডারের মৃত্যু হয়েছিল। বন দপ্তর গন্ডারের বিভিন্ন দলকে অরণ্যের মধ্যে অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গায় নেওয়ার চেষ্টা করছে। বাঘের ক্ষেত্রেও সেটা করা হচ্ছে। তবে বাঘদের প্রকল্পটি অপেক্ষাকৃত উঁচু সমতল ভূমিতে হওয়ায় তাদের ঝুঁকি কম বলে মনে করছেন বন দপ্তরের কর্মকর্তারা।