পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির দুই শীর্ষ নেতার বাগ্যুদ্ধ
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপির দুই শীর্ষ নেতা সাবেক সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং বর্তমানে রাজ্য বিধানসভায় দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যকার বিরোধ হঠাৎই তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত সোমবার শুভেন্দু অধিকারী মন্তব্য করেন যে তিনি ভোরবেলায় হাঁটাহাঁটি করতে করতে সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন না। এ মন্তব্যের মাধ্যমে স্পষ্টতই তিনি বিজেপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে জাতীয় স্তরে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) উপসভাপতি দিলীপ ঘোষকে আক্রমণ করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। এ নিয়ে দিলীপ ঘোষও পাল্টা মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, সকালে উঠতে পারার মতো দম সবার থাকে না।
কলকাতার পূর্ব প্রান্তের একটি এলাকায় থাকেন দিলীপ ঘোষ। তিনি প্রতিদিন সেখানে প্রাতর্ভ্রমণে বের হন। হাঁটাহাঁটি ও ব্যায়াম করার ফাঁকে দিলীপ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেন। পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস ও তাঁর নিজের দল সম্পর্কে বিভিন্ন অভিমত দিয়ে থাকেন তিনি। প্রাতর্ভ্রমণে বের হওয়া সাধারণ মানুষ ও গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে দৈনন্দিন কর্মসূচি এবং রাজনৈতিক পরিকল্পনা নিয়েও তিনি খোলাখুলি আলোচনা করেন। বর্তমানে জাতীয় পর্যায়ে বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলে বিবেচিত দিলীপ ঘোষের সঙ্গে কথাবার্তা ও সাক্ষাৎ করার এটাই উপযুক্ত সময় বলে মনে করা হয়।
দিলীপ ঘোষ হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) দীর্ঘদিনের কর্মী। সেই কারণে ভোরবেলা উঠে শারীরিক কসরত করা তাঁর অভ্যাসে দাঁড়িয়েছে, যা তিনি পরবর্তী সময় বড় নেতা হওয়ার পরও ছাড়তে পারেননি।
হাঁটতে হাঁটতে সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেন না—শুভেন্দু অধিকারীর এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘মর্নিং ওয়াক করতে হলে সকালে ওঠার দম থাকা চাই। সেই দম সবার থাকে না।’
পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির দুই শীর্ষ নেতার পরস্পরের বিরুদ্ধে এ ধরনের মন্তব্যে স্পষ্টতই অস্বস্তিতে রয়েছে জাতীয় দলটি। ২০২৩ সালের জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে আরএসএসের প্রধান মোহন ভগবতের পশ্চিমবঙ্গে আসার কথা। বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করতে বিজেপি আগামী বৃহস্পতিবার একটি সমন্বিত বৈঠক ডেকেছে। আশা করা হচ্ছে, সেখানে শুভেন্দু অধিকারী ও দিলীপ ঘোষের দেখা-সাক্ষাৎ হবে এবং সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে।
শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেসের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা ছিলেন, পরবর্তী সময় বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপির প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খুব মসৃণ নয়। নতুন বছরের শুরুতে পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন হতে চলেছে। এই অবস্থায় দলের দুই শীর্ষ নেতার মধ্যে সম্পর্কের সমন্বয় গড়ে তুলতে বিজেপি নজর দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।