মোদিকে নিয়ে বিবিসির তথ্যচিত্র, ক্ষুব্ধ ভারত
গুজরাট দাঙ্গা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে বিবিসির তথ্যচিত্রে ক্ষুব্ধ হয়েছে ভারত। দুই পর্বের এই ধারাবাহিককে ‘প্রচারণা’ বলেছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি। তিনি বলেছেন, ‘এই তথ্যচিত্রে পক্ষপাতিত্ব, বস্তুনিষ্ঠার অভাব রয়েছে। পাশাপাশি, ঔপনিবেশিক মানসিকতার প্রভাব রীতিমতো স্পষ্ট।’ খবর এনডিটিভির
‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোশ্চেন’ নামের দুই পর্বের তথ্যচিত্র প্রচারের পরপরই তা নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তথ্যচিত্র নির্মাতাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং দেশটির মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যকার উত্তপ্ত সম্পর্ক এখানে তুলে ধরা হয়েছে। এর পাশাপাশি ২০০২ সালে গুজরাটের দাঙ্গায় মোদির ভূমিকা নিয়েও অনুসন্ধান করা হয়েছে। ওই দাঙ্গায় হাজারের বেশি মানুষ নিহত হন।
গুজরাটে যখন দাঙ্গা হয়, সেই সময় নরেন্দ্র মোদি ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। বর্তমানে সেই নরেন্দ্র মোদিই ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তাঁকে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গুজরাট দাঙ্গার অভিযোগ থেকে মুক্তি দিয়েছে।
তথ্যচিত্রটির বিষয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, এখানে যেভাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে তুলে ধরা হয়েছে এর সঙ্গে তিনি একমত নন।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এমপি ইমরান হোসেইনের এক প্রশ্নের জবাবে সুনাক বলেছেন, ‘এ বিষয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের অবস্থান পরিষ্কার। আর এ অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। কোনো ধরনের নিপীড়নের আমরা সহ্য করব না। কিন্তু এখানে সম্মানিত ব্যক্তি (নরেন্দ্র মোদি) যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে আমি তাঁর সঙ্গে একেবারে একমত নই।’
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবিসির এ তথ্যচিত্রের বিষয়ে তাদের প্রচণ্ড ক্ষোভ জানিয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, বিবিসির এই তথ্যচিত্র ভারতে দেখানো হয়নি। এই তথ্যচিত্রে ভারতের প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিদের সম্পর্কে ইচ্ছেমতো বর্ণনা করা হয়েছে। ভারতীয় প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিদের সম্পর্কে নিন্দা করা হয়েছে, যা রীতিমতো পক্ষপাতদুষ্ট। এটি একেপেশে, এখানে কোনো বস্তুনিষ্ঠতা নেই। আর খোলাখুলি বললে বলতে হয়, এখানে ঔপনিবেশিক মানসিকতার স্পষ্ট লক্ষণ ফুটে উঠেছে।’
বিবিসির এ প্রতিবেদনে ক্ষোভ জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের সদস্য রমি রেঞ্জার। তিনি বলেছেন, ‘বিবিসি নিউজ শতকোটি ভারতীয়কে কষ্ট দিয়েছে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত ভারতের প্রধানমন্ত্রী, ভারতের পুলিশ এবং দেশটির বিচার বিভাগকে অপমান করেছে। আমরা দাঙ্গা, প্রাণহানির নিন্দা করি। আবার সেই সঙ্গে একেপেশে রিপোর্টেরও নিন্দা জানাই।’