সম্পদ বৃদ্ধির মামলা তদন্তের আদেশে খেপেছেন তৃণমূলের মন্ত্রী-নেতারা
সম্পদ বৃদ্ধির অভিযোগ তুলে করা জনস্বার্থ মামলায় আদালতের তদন্তের আদেশের পর ক্ষুব্ধ পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূলের মন্ত্রী ও বিধায়কেরা। তাঁরা বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, যে তালিকা ধরে মামলা হয়েছে, তা পূর্ণাঙ্গ নয়। আর ওই তালিকায় শুধু তৃণমূল নয়, কংগ্রেস ও বিজেপির নেতাদের নামও আছে।
২০১৭ সালে তৎকালীন শাসক দলের ১৯ নেতা, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও বিধায়কের সম্পদ বৃদ্ধির অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন বিপ্লব চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি। তিনি বিষয়টি তদন্তের জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দেওয়ার আবেদনও করেছিলেন সেদিন। কিন্তু মামলার কার্যক্রম মন্থর হয়ে গেলে এবার নতুন করে আবেদন করেন বিপ্লব। এর পরিপ্রেক্ষিতে সেই মামলা পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির জন্য আদালতে ওঠে গত সোমবার। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। শুনানির পর ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটি গ্রহণ করে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ইডি বা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়ে তাঁরা তদন্তের আদেশ দেন।
সেই মামলার প্রসঙ্গ টেনে বুধবার তৃণমূলের ছয় নেতা, মন্ত্রী ও বিধায়ক সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে ছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, শিউলি সাহা, মন্ত্রী মলয় ঘটক, মন্ত্রী অরূপ রায় ও মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁরা দাবি করেন, ওই তালিকায় আরও রয়েছে কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী, সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, অশোক ভট্টাচার্য, কান্তি গাঙ্গুলি, কংগ্রেস নেতা আবু হেনা, ধীরেন বাগদি, চন্দন সাহা, নেপাল মাহাতদের নামও।
২০১১ থেকে ২০১৬—এই পাঁচ বছরে ওই ১৯ নেতা, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও বিধায়কের সম্পদ বেড়েছে বিপুলভাবে।
দলের সাবেক মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের একের পর এক দুর্নীতির প্রমাণ মিলছে প্রতিদিন। এরই মধ্যে দলীয় মন্ত্রী ও বিধায়কদের সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে মামলায় তদন্তের আদেশ নতুন করে শঙ্কা দেখা দিয়েছে শাসকদল তৃণমূলের অন্দরে।
বুধবার সংবাদ সম্মেলনে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ টেনে আনেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘পার্থ যা করেছেন, তাতে আমরা সবাই লজ্জিত। এই পার্থকে আমি চিনতাম না। তার মানে এই নয় যে তৃণমূলের সবাই চোর।’
ফিরহাদ বলেন, সুযোগ পেয়েছেন, সবাই অপমান করছেন।
জনস্বার্থ মামলায় তৃণমূলের পাশাপাশি অন্য দলের নেতাদের নামও আছে বলে সংবাদ সম্মেলনে বলেন ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, তৃণমূল নেতার নাম যেমন আছে, অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের নামও রয়েছে। কিন্তু বিরোধীরা একপেশে আক্রমণ করছেন।