নাগরিকত্ব আইনের জেরে সংঘাতে মেঘালয়ে সংঘর্ষে দুজন নিহত
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পূর্ব খাসি পার্বত্য জেলায় গতকাল বুধবার রাতে সংঘর্ষে দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে ওই অঞ্চলে একটি বৈঠকের পর ওই দুই ব্যক্তির ওপর হামলা করা হয় বলে রাজ্য পুলিশ ধারণা করছে। নিহত দুই ব্যক্তি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সদস্য নন।
পুলিশ জানিয়েছে, পূর্ব খাসি পার্বত্য জেলার শেলা বিধানসভা আসনের দুটি অঞ্চল থেকে ওই দুই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ইছামতী ও ডালডা—এই দুই অঞ্চল থেকে আলাদাভাবে ওই দুই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার দুটি লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে এবং আজই ওই অঞ্চলে বাড়তি নিরাপত্তারক্ষী মোতায়ন করা হবে বলে পূর্ব খাসি পার্বত্য জেলার পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট ঋতুরাজ রবি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
প্রশাসনিক কর্মকর্তারা গণমাধ্যমে বলছেন, দুটি লাশের কাছেই পাথর পাওয়া গেছে। এর থেকে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁদের হত্যা করা হয়েছে। তবে ঠিক কী কারণে দুজন হত্যা করা হয়েছে, তা নিশ্চিত করতে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
ইছামতী অঞ্চলে আগেও আদিবাসী ও আদিবাসী নন—এমন সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাতের কারণে অতীতেও সংবাদ শিরোনামে এসেছে। আদিবাসী নন—এমন সাধারণ সম্প্রদায়ের মানুষ ওই অঞ্চলে বহিরাগত হিসেবে অতীতে আক্রমণের শিকার হয়েছেন।
২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর ভারতের সংসদে সিএএ পাস হওয়ার পর দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু হয়। উত্তর-পূর্ব ভারত এবং রাজধানী দিল্লিসহ একাধিক জায়গায় সংঘর্ষের জেরে কয়েক মাসে অন্তত ৬৯ জন নিহত হন। এবার আইনটি বাস্তবায়িত হওয়ার পর ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছেন এবং মিটিং-মিছিল করেছেন। কিন্তু এই প্রথম দুই ব্যক্তির মৃত্যুর সঙ্গে সিএএর নাম জড়িয়ে গেল।
উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত রাজ্যে সিএএর বিরুদ্ধে প্রবল জনমত রয়েছে। প্রধানত আদিবাসী এবং মূল নিবাসী সমাজের মানুষ মনে করেন, এই আইনের জেরে বাইরের লোক উত্তর-পূর্ব ভারতের আদিবাসী অঞ্চলে পাকাপাকিভাবে বসবাস করার এবং জমি কেনার সুযোগ পাবেন। উত্তর-পূর্ব ভারতের কিছু রাজ্য এবং আদিবাসী অঞ্চলকে এ আইনের বাইরে রাখা হলেও আদিবাসী সমাজের বক্তব্য বহিরাগতরা তাদের রাজ্যের বাসিন্দা হলে অঞ্চলগুলো তার স্থিতিশীলতা হারাবে।
বৃহস্পতিবার ওই অঞ্চলে শান্তি বৈঠক করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।