ভারতের বিরোধী দলগুলোর বিক্ষোভ: ‘মোদি-আদানি এক হ্যায়, আদানি সেফ হ্যায়’

ভারতের জাতীয় কংগ্রেস দলের এক্স হ্যান্ডেল (সাবেক টুইটার) থেকে নেওয়া

ভারতের পার্লামেন্টের কোনো কক্ষে আদানি ঘুষ–কাণ্ড নিয়ে আলোচনা সম্ভব নয় বুঝে কংগ্রেসসহ অধিকাংশ বিরোধী দল অভিনব প্রচার শুরু করল। আজ বৃহস্পতিবার অধিকাংশ ‘ইন্ডিয়া’ সদস্য শীতকালীন জ্যাকেটের পেছনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শিল্পপতি গৌতম আদানির ছবি সেঁটে বিক্ষোভ সংসদ চত্বরে বিক্ষোভ দেখান।

সেই বিক্ষোভে শামিল হন বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী, ওয়েনাডের সংসদ সদস্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধীসহ বিরোধী সদস্যরা। আদানির বিরুদ্ধে ওঠা সব দুর্নীতির তদন্তে যুগ্ম সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) গঠনের দাবিও তাঁরা জানান। প্রিয়াঙ্কার নেতৃত্বে বিরোধীরা তালে তালে ‘জেপিসি, জেপিসি’ স্লোগান দেন। বিরোধী নেতারা ওই জ্যাকেট পরে অধিবেশনকক্ষেও যান। লোকসভার স্পিকার পরে নির্দেশ দেন, রাজনৈতিক স্লোগান লেখা জামাকাপড় পরে সভায় আসা যাবে না।

কংগ্রেসিদের জ্যাকেটের পেছনে এক বৃত্তের মধ্যে মোদি–আদানির এক ছবি সাঁটা ছিল। তার চারদিকে গোলাকারে লেখা, ‘মোদি আদানি এক হ্যায়, আদানি সেফ হ্যায়’।

বিক্ষোভ চলাকালে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কিছুতেই আদানির বিরুদ্ধে ওঠা কোনো অভিযোগের তদন্ত করাবেন না। কারণ, সেই তদন্ত তাঁর নিজের বিরুদ্ধেই করাতে হবে। তিনি ও আদানি এক ও অভিন্ন।’

আদানিসংক্রান্ত কংগ্রেসের প্রচারকে বিজেপি বিদেশি চক্রান্ত বলে জাহির করেছে। লোকসভায় বিজেপি সদস্য নিশিকান্ত দুবে আজ বলেন, এই চক্রান্তের লক্ষ্য ভারতের অর্থনৈতিক অগ্রগতি রোধ করা। মার্কিন ধনকুবের জর্জ সোরস এই চক্রান্ত চালাচ্ছেন। তাঁকে মদদ দিচ্ছেন রাহুল গান্ধীরা।

বিজেপির ওই অভিযোগের জবাবে কংগ্রেস সদস্য গৌরব গগৈয়ের দাবি, আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ ভারতের বিরুদ্ধে চক্রান্ত কি না, সেটাই তদন্ত করা হোক। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হোক জেপিসিকে। সেই হট্টগোলের মধ্যে স্পিকার বেলা দুইটা পর্যন্ত লোকসভা মুলতবি করে দেন।

শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম সপ্তাহ লোকসভা ও রাজ্যসভা চলতে পারেনি। আদানি, সম্ভল, মূল্যবৃদ্ধি, মণিপুর কোনো বিষয়েই বিরোধীদের আনা কোনো মুলতবি প্রস্তাব মানা হয়নি। গত মঙ্গলবার থেকে সভা স্বাভাবিক হয় সংবিধান নিয়ে ওঠা বিতর্ক সরকার মেনে নেওয়ায়। এরপর বিরোধীরা বিক্ষোভের চরিত্র বদলে দেন।

আদানি প্রশ্নে অবশ্য বিরোধীদের মধ্যে কিছুটা মতপার্থক্য দেখা গেছে। তৃণমূল কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টি আদানি প্রশ্নে অধিবেশন বানচালের বিরোধিতা করে। তারা মনে করে, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সভায় আলোচনা হওয়া উচিত। বৃহস্পতিবার সকালে সংসদ ভবন চত্বরে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বিক্ষোভে এই দুই দল উপস্থিত ছিল না। কংগ্রেসও আন্দোলনের চরিত্র বদলে দিয়েছে। সংসদের অভ্যন্তরের বিক্ষোভ ও দাবি টিভিতে দেখানো হয় না। তাই সংসদ অচল না রেখে বিরোধীরা সংসদ চত্বরকে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।