পশ্চিমবঙ্গ–বিহারের ৬ জেলা নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল চায় না বিজেপির মিত্র জেডিইউও
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের ছয়টি মুসলিম অধ্যুষিত জেলা নিয়ে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়ার দাবি তুলেছিলেন লোকসভায় ঝাড়খন্ডের বিজেপিদলীয় সংসদ সদস্য নিশিকান্ত দুবে। আজ শনিবার বিহারের শাসক দল নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দল (জেডিইউ) বিজেপির সংসদ সদস্যের ওই দাবি প্রত্যাখান করেছে।
এর আগে গতকাল শুক্রবার বিজেপির নিশিকান্তের সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল। তারা জানিয়ে দিয়েছে, বঙ্গভঙ্গ নয়, বাংলা থাকবে বাংলাতেই। বাংলা আর ভাগ নয়। বিজেপির এই ষড়যন্ত্র রুখবে বাংলার মানুষ।
আজ শনিবার বিহারের ক্ষমতাসীন সংযুক্ত জনতা দলের সাধারণ সম্পাদক ও দলের রাজ্যের মুখপাত্র রাজীব রঞ্জন বলেন, এ এক অবাস্তব ও শিশুসুলভ প্রস্তাব। বিহারবাসী তা মেনে নেবে না। এই অবাঞ্ছিত ও অবাস্তব দাবি শুধু পারবে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে। বিহারের মানুষ আর বিহারকে ভাঙবে না। সেই উত্তেজনায় সাড়া দেবে না।
ভারতের সংসদে (লোকসভা) গত বৃহস্পতিবার জিরো আওয়ারে বিজেপি সংসদ সদস্য নিশিকান্ত দুবে পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত দুই জেলা মুর্শিদাবাদ ও মালদহ এবং পার্শ্ববর্তী বিহার রাজ্যের একই জনবিন্যাসের সেখানকার মুসলিম অধ্যুষিত ৪ জেলা কিষানগঞ্জ, আরারিয়া, পূর্ণিয়া ও কাটিহার—এই ছয় জেলা নিয়ে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়ার দাবি তুলেছেন। বলেছেন, এই ছয় জেলাকে নিয়ে পৃথক এটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়ে সেখানে এনআরসি কার্যকর করা হোক।
বিজেপির সংসদ সদস্য নিশিকান্ত ঝাড়খন্ড রাজ্যের আদিবাসী এলাকা গোড্ডা আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনিই পশ্চিমবঙ্গের সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে সংসদে ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন করার অভিযোগ তুলেছিলেন। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মহুয়া মৈত্র সংসদ সদস্য পদ হারিয়েছিলেন। কিন্তু এবারের লোকসভা নির্বাচনে তিনি আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
নিশিকান্ত দুবে অভিযোগ করেছেন, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের ওই ছয় জেলায় ব্যাপক অনুপ্রবেশ ঘটায় সেখানকার জনবিন্যাস বদলে যাচ্ছে। অনুপ্রবেশকারীরা বিহারের আদিবাসী নারীদের বিয়ে করে পাল্টে দিচ্ছে জনবিন্যাসের হার। সাঁওতাল পরগনা অঞ্চল বিহার রাজ্যে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সময় রাজ্যের আদিবাসী জনসংখ্যা ছিল ৩৬ শতাংশ। এখন তা নেমে দাঁড়িয়েছে ২৬ শতাংশে।
অন্যদিকে মুর্শিদাবাদ ও মালদহে চলছে নিয়মিত অনুপ্রবেশ। তিনি দাবি করেন, এই ছয় জেলাকে নিয়ে পৃথক একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়া হোক। একইসঙ্গে সেখানে কার্যকর করা হোক এনআরসি।