মোদিকে নিয়ে বিবিসির তথ্যচিত্র: প্রচার নিষিদ্ধ করা নিয়ে নথি চাইলেন সুপ্রিম কোর্ট

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
ফাইল ছবি

গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে তৈরি বিবিসির বিতর্কিত তথ্যচিত্র নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের যাবতীয় নথি তিন সপ্তাহের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিলেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রীয় সরকারের জবাব পাওয়ার পর সেই বিষয়ে আপত্তি বা বক্তব্য জানানোর জন্য সবাইকে আরও দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। পাঁচ সপ্তাহ পর ওই মামলার পরবর্তী শুনানি।

বিবিসির বিতর্কিত তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোশ্চেন’ সম্প্রচারিত হওয়ার পর ভারত সরকার তা দেশে না দেখানোর জন্য ইউটিউব ও টুইটারকে নির্দেশ দেয়। গত ২১ জানুয়ারি তথ্যপ্রযুক্তি আইনের বিধি অনুযায়ী ওই নির্দেশ জারি করা হয়। তথ্যচিত্রের লিংক দিয়ে করা ৫০টির মতো টুইট মুছে দেওয়ার নির্দেশও টুইটারকে দেওয়া হয়েছিল। সেই নিষেধাজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দুই মামলা সুপ্রিম কোর্টে করা হয়। একটি মামলা করেন প্রবীণ সাংবাদিক এন রাম, আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ ও তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র, অন্য মামলাটি করেন আইনজীবী এম এল শর্মা।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও এম এম সুন্দ্রেশের এজলাস কেন্দ্রকে তিন সপ্তাহের মধ্যে নিষেধাজ্ঞা–সংক্রান্ত সরকারি নথি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে শুক্রবার বলেন, ওই তথ্যচিত্র দেখানোর অভিযোগে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র–ছাত্রীদের শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি তাঁরা বিচারের মধ্যে রাখতে চান না।

মামলাকারীরা তাঁদের আবেদনে বলেন, তথ্যচিত্রটি নিষিদ্ধ করার সব প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ নির্দেশ বাতিল করা হোক। কারণ, তথ্যচিত্রে দাঙ্গার বিভিন্ন ভাষ্য দেখানো হয়েছে। সেই সব ভাষ্য দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের সুবিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রাহ্য হতে পারে।

ভারত সরকার ওই তথ্যচিত্রকে ‘দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার’ বলে অভিহিত করেছে। বলেছে, ঔপনিবেশিক মানসিকতা থেকে ওই তথ্যচিত্র তৈরি। উদ্দেশ্য, সরকারকে হেয় করে দেশের অগ্রগতি ব্যাহত করা। লন্ডনে অভিবাসী ভারতীয়রা বিবিসি অফিসের সামনে ওই তথ্যচিত্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ভারতের অগ্রগতি রোধ করার এটি এক চক্রান্ত।

বিবিসি যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, যথেষ্ট গবেষণার পর বহু মানুষের সঙ্গে কথা বলে ওই তথ্যচিত্র তৈরি করা হয়েছে। গুজরাট দাঙ্গার পর ব্রিটিশ সরকারের এক তদন্তকারী দলের রিপোর্ট তাদের হাতে আসার পর ওই তথ্যচিত্র তৈরি করা হয়। ব্রিটিশ সরকার গত বৃহস্পতিবারই এই বিতর্ক প্রসঙ্গে জানায়, বিবিসি স্বাধীন সংস্থা। তাদের তৈরি রিপোর্ট তাদের নিজস্ব মতামত।