আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলার ঘটনায় তিন পুলিশ সাময়িক বরখাস্ত, গ্রেপ্তার ৭
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে প্রবেশ ও ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে আজ মঙ্গলবার সাত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এই চার পুলিশ সদস্যের মধ্যে তিনজন উপপরিদর্শক (এসআই) পদমর্যাদার কর্মকর্তা। তাঁদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। আর ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট পদমর্যাদার এক কর্মকর্তাকে কাজ থেকে বিরত করা হয়েছে। তাঁকে সদর দপ্তরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।
ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে এই তথ্য জানিয়েছেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার পুলিশপ্রধান (সুপারিনটেনডেন্ট) কে কিরণ কুমার।
কিরণ কুমার পিটিআইকে বলেছেন, আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় নিউ ক্যাপিটাল কমপ্লেক্স (এনসিসি) থানায় একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। এরপর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার লক্ষ্যে প্রশাসনপ্রক্রিয়া শুরু করেছে। সহকারী হাইকমিশনে নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি আধা সামরিক বাহিনী সিআরপিএফ (সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স) এবং রাজ্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রাজ্য পুলিশ সেখানে আগেও ছিল। তাদের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
গতকাল সোমবার আগরতলায় হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামের একটি স্থানীয় সংগঠনের সদস্যরা বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে এবং বাংলাদেশের পতাকা পুড়িয়ে দেন। ঘটনার পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশন এবং অন্যান্য উপ ও সহকারী হাইকমিশনে নিরাপত্তা বাড়ানো হবে।
এর আগে বেশ কয়েক দিন ধরে কলকাতায় বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনের কিছুটা দূরে বিক্ষোভ করে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠন। এর মধ্যে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের পাশাপাশি অন্যান্য সংগঠনও ছিল।
আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহাও। তিনি বলেন, ‘বিক্ষোভ সমাবেশের সময় একদল যুবক আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের ভবনে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। ঘটনার নিন্দা জানাই। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করা যেতে পারে। কিন্তু এ ধরনের আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়।’
ইতিমধ্যে একটি স্থানীয় সংগঠন আজ মঙ্গলবার ‘বাংলাদেশ চলো’ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। ওই সংগঠন এমন কর্মসূচির অনুমতি চাইলে তা দেওয়া হয়নি বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা কিরণ কুমার। ওই অভিযান যাতে আটকে দেওয়া যায়, সেটা মাথায় রেখে আখাউড়া অঞ্চলে পুলিশের ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছে।