বাবা সিদ্দিক হত্যাকাণ্ডের পর বিষ্ণোই গ্যাংয়ের হুমকিতে সালমান খানের নাম
ভারতের মুম্বাইয়ে রাজনীতিক বাবা সিদ্দিককে হত্যার দায় স্বীকার করেছে দেশটির কুখ্যাত লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং-সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি। শুধু তা-ই নয়, বলিউড তারকা সালমান খানের নাম উল্লেখ করে হুমকিও দিয়েছেন তিনি। হুমকি দেওয়া হয়েছে ভারতের আরেক শীর্ষ অপরাধী দাউদ ইব্রাহিম-সংশ্লিষ্টদেরও।
গতকাল শনিবার রাতে মুম্বাইয়ের বান্দ্রা এলাকায় গুলি করে হত্যা করা হয় মহারাষ্ট্রের সাবেক মন্ত্রী ও বিধায়ক বাবা সিদ্দিককে। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার দুজন জিজ্ঞাসাবাদে নিজেদের লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্য বলে পরিচয় দিয়েছেন। পুলিশেরও ভাষ্য, হত্যাকাণ্ডের পেছনে এই গ্যাংয়ের হাত রয়েছে।
বাবা সিদ্দিক হত্যার লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের যোগসাজশ থাকার বিষয়টি জোরদার হয় আজ রোববার ফেসবুকে ‘শিবু লোনকর’ নামের একটি অ্যাকাউন্টে পোস্টের পর। এই অ্যাকাউন্টটি বিষ্ণোই গ্যাং-সংশ্লিষ্ট শুভাম রামেশ্বর লোনকরের বলে ধারণা করছে সংশ্লিষ্টরা।
ফেসবুক পোস্টে লোনকর দাবি করেন, বাবা সিদ্দিকের সঙ্গে সন্ত্রাসী দাউদ ইব্রাহিম ও অভিনেতা সালমান খানের সংশ্লিষ্টতা ছিল। এ কারণে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডের পেছনে আরেকটি কারণ অনুজ থাপানের মৃত্যু। সালমান খানের বাড়ির বাইরে গুলি চালানোর অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে পুলিশ হেফাজতে থাপানের মৃত্যু হয়।
ফেসবুকে শিবু লোনকর বলেন, ‘যাঁরা দাউদ ইব্রাহিম ও সালমান খানকে সহায়তা করবেন, তাঁরা ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে আমাদের শত্রুতা নেই। এই দুজনকে যাঁরা সহায়তা করবেন, তাঁরা নিজেদের হিসাব-নিকাশ শেষ করে নেবেন।’ পুলিশ জানিয়েছে, ফেসবুকে এই পোস্টের সত্যতা যাচাই করে দেখা হচ্ছে।
বাবা সিদ্দিক সালমান খানের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ২০১৩ সালে এক ‘ইফতার পার্টিতে’ বলিউড তারকা শাহরুখ খানের সঙ্গে সালমানের দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব মিটিয়েছিলেন তিনি। গতকাল গুলি লাগার পর বাবা সিদ্দিক যে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সেখানে গিয়েছিলেন সালমান। এমনকি আজ বাবা সিদ্দিকের বাসায় যান তিনি।
সালমান খানকে নিয়ে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের মাথাব্যথা বেশ পুরোনো। ২০১৮ সালে মুম্বাইয়ে সালমানের বাসায় হানা দেন সাম্পাথ নাথ নামে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের এক সদস্য। তিনি দাবি করেন, কালো হরিণ শিকারের কারণে সালমানকে হত্যার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁর ওপর। বিরল প্রজাতির এই হরিণকে বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের মানুষ অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করেন।
সালমান খানকে সরাসরি হত্যার হুমকিও দিয়েছিলেন বিষ্ণোই গ্যাংয়ের প্রধান লরেন্স বিষ্ণোই। ভারতের যোধপুরে আদালতে এক শুনানি চলাকালে তিনি বলেছিলেন, ‘সালমান খানকে এই যোধপুরেই হত্যা করা হবে। তারপর তিনি আমাদের সত্যিকারের পরিচয় জানতে পারবেন।’
এরপর ২০২৩ সালের ১৪ এপ্রিল মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় সালমান খানের বাসার বাইরে গুলি চালানো হয়। এই এলাকাতেই গতকাল হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বাবা সিদ্দিক। সালমানের বাসার বাইরে গুলির পর সে সময় পুলিশ জানিয়েছিল, এ কাজের জন্য দুজনকে ভাড়া করেছিল বিষ্ণোই গ্যাং।