হাইকোর্টে আটকে গেল জামিন, তিহার জেলেই থাকতে হচ্ছে কেজরিওয়ালকে

ভারতের দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালছবি: কেজরিওয়ালের ফেসবুক পেজের ভিডিও থেকে নেওয়া

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টির (আপ) আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে আপাতত তিহার জেলেই থাকতে হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার দিল্লি হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের দেওয়া জামিনের নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিলেন। আগামীকাল বুধবার সুপ্রিম কোর্ট কেজরিওয়ালের জামিনসংক্রান্ত আবেদন বিবেচনা করবেন।

আবগারি (মদ) মামলায় ঘুষের অভিযোগে ভারতের কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) গত ২৩ মার্চ কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করে। কেজরিওয়াল সেই গ্রেপ্তারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। তাঁর আবেদন ছিল, ভোটে প্রচার ঠেকাতে মিথ্যা অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে আবেদন শুনে সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে লোকসভা ভোটে প্রচারের অনুমতি দিয়েছিলেন। ভোট শেষে তিহার জেলে ফিরে যাওয়া কেজরিওয়াল জামিনের জন্য নিম্ন আদালতে আবেদন করেন। রাউস অ্যাভিনিউয়ের নিম্ন আদালত সেই জামিন মঞ্জুর করলে ইডি তার বিরোধিতায় হাইকোর্টে আবেদন করে। আজ বিচারপতি সুধীরকুমার জৈন ও বিচারপতি রবীন্দ্র দুদেজার অবকাশকালীন বেঞ্চ ইডির আবেদন মেনে জামিনের আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।

নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে গিয়ে ইডির পক্ষে আইনজীবী দেশের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এস ভি রাজু বলেন, বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইনের (পিএমএলএ) ৪৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী জামিনের বিরোধিতা করে যেসব নথি ইডি পেশ করেছিল, নিম্ন আদালত তা যথাযথভাবে বিবেচনা করেননি। তাঁকে সবকিছু বলার সুযোগও দেওয়া হয়নি। একতরফাভাবে জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। এর পাল্টা কেজরিওয়ালের আইনজীবীদের বক্তব্য ছিল, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এখনো কোনো অকাট্য প্রমাণ ইডি দাখিল করতে পারেনি। অর্থের লেনদেনও প্রমাণ করতে পারেনি। মঙ্গলবার রায় দেওয়ার সময় হাইকোর্টের বিচারপতিরা অবশ্য বলেন, জামিনের নির্দেশ দেওয়ার আগে নিম্ন আদালত ইডির জমা দেওয়া বিপুল নথির যথাযোগ্য বিবেচনা ও তাদের যুক্তিগুলোর মূল্যায়ন যথাযথভাবে করেননি।

কেজরিওয়ালকে নিম্ন আদালত ২০ জুন জামিন দেন। সেই নির্দেশ ৪৮ ঘণ্টা স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়েছিল ইডি। কিন্তু নিম্ন আদালত তা মঞ্জুর করেননি। এক লাখ রুপি বন্ডের বিনিময়ে জামিন পাওয়ার আগেই ইডি পরদিন দিল্লি হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়। হাইকোর্ট গত শুক্রবার জানিয়েছিলেন, দু–তিন দিনের মধ্যেই তাঁরা আবেদনের নিষ্পত্তি করবেন। তার অপেক্ষায় না থেকে গতকাল সোমবার কেজরিওয়াল সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি মনোজ মিশ্র বলেন, বিষয়টি হাইকোর্টের বিবেচনাধীন। তাই এখনই কোনো সিদ্ধান্ত তাঁরা নেবেন না। পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয় আগামীকাল। হাইকোর্ট জামিন স্থগিত রাখায় কেজরিওয়ালকে এখন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপেক্ষায় থাকতে হবে।