১০৫ মিনিটে ৩৬টি বই পড়ে ছোট্ট কিয়ারার রেকর্ড
তার বয়স সবে পাঁচ। এই বয়সেই ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান শিশু কিয়ারা কৌর আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসা কুড়িয়েছে। কিয়ারা ১০৫ মিনিটে ৩৬টি বই পড়ে রেকর্ড গড়েছে। এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
কিয়ারার জন্ম ২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি। তার মা–বাবা দুজনেরই বাড়ি ভারতের চেন্নাইয়ে। কিয়ারার জন্ম যুক্তরাষ্ট্রে। সে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
কিয়ারা বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে থাকে। বই পড়ার এই কীর্তি দিয়ে কিয়ারা লন্ডনের ওয়ার্ল্ড বুক অব রেকর্ডস ও এশিয়া বুক অব রেকর্ডসে নিজের নাম তুলেছে।
লন্ডনের ওয়ার্ল্ড বুক অব রেকর্ডস কিয়ারাকে ‘শিশু বিস্ময়’ হিসেবে অভিহিত করেছে। তাকে দেওয়া সনদে ওয়ার্ল্ড বুক অব রেকর্ডস লিখেছে, শিশুটি গত ১৩ ফেব্রুয়ারি চার বছর বয়সে ৩৬টি বই টানা পড়েছে মাত্র ১০৫ মিনিটে।
এশিয়া বুক অব রেকর্ডস তাদের স্বীকৃতিতে বলেছে, কিয়ারা টানা সর্বোচ্চসংখ্যক বই পড়ে রেকর্ড গড়েছে।
কিয়ারা সবশেষ আবুধাবির একটি নার্সারি স্কুলে পড়ছিল। গত বছর লকডাউনে স্কুলটি বন্ধ হয়ে যায়। তার আগে মাস কয়েক স্কুলটিতে পড়ে কিয়ারা। তার বই পড়ার প্রতি বিপুল আগ্রহের বিষয়টি এই স্কুলেরই এক শিক্ষকের চোখে প্রথম ধরা পড়ে। তার সেই শিক্ষক প্রায়ই দেখতেন যে স্কুলের ছোট্ট লাইব্রেরিতে বসে বেশ আগ্রহ নিয়ে বই পড়ছে কিয়ারা।
কিয়ারা এনডিটিভিকে বলে, ‘আমি বই পড়তে ভালোবাসি। কারণ, আমি বইয়ের বর্ণিল ছবি দেখতে পছন্দ করি। আর বইগুলো বড় হরফে লেখায় আমি সহজেই পড়তে পারি।’
কিয়ারার প্রিয় বইয়ের মধ্যে আছে ‘সিনড্রেলা’, ‘অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড’, ‘লিটল রেড রাইডিং হুড’, ‘শুটিং স্টার’ প্রভৃতি।
কিয়ারার মা–বাবা জানান, সে তার অধিকাংশ সময়ই বই পড়ে কাটায়। গত এক বছরে কিয়ারা প্রায় ২০০ বই পড়ে ফেলেছে।
কিয়ারার মা লিটল মাহেন্দ্র একজন চিকিৎসক। মেয়ের বই পড়ার অভ্যাস সম্পর্কে তিনি বলেন, কিয়ারা গাড়িতে বসে বই পড়ে। বিশ্রামকক্ষে বসে বই পড়ে। ঘুমানোর আগেও বই পড়ে। সে খুবই অনুসন্ধিৎসু শিশু।
রেকর্ড স্থাপনের ক্ষেত্রে কিয়ারার ওপর কোনো চাপ বা জোর দেওয়া হয়নি বলে জানান তার মা।
কিয়ারার বাবা রবীন্দ্রনাথ চিকিৎসক। তিনি বলেন, এত অল্প বয়সে কিয়ারা যে এত কিছু অর্জন করেছে, এতে তাঁরা গর্বিত। তার পড়ার অভ্যাস অব্যাহত থাকবে বলে আশা করেন তিনি।
কিয়ারার মা জানান, শিশুটি যেসব বই পড়ে রেকর্ড গড়েছে, তার মধ্যে অনেকই লেভেল–৩ ও লেভেল–৪-এর শিশুদের। অর্থাৎ, এই বইগুলো কিয়ারার চেয়ে বড় বয়সী শিশুদের।
কিয়ারা বলে, কখনো কখনো তার কাছে কোনো নতুন বই থাকে না। তখন সে একই বই বারবার পড়ে।
কিয়ারার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, সে কেন ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে না পড়ে বই থেকে পড়তে পছন্দ করে? উত্তরে কিয়ারা বলে, বই থেকে পড়াটা অত্যন্ত আনন্দের। নিজের পছন্দমতো যেকোনো জায়গায় বই নেওয়া যায়। ফোনে বা অন্য ডিভাইসে বই পড়ার সমস্যা হলো, ইন্টারনেট না থাকলে আর পড়া যায় না।
কিয়ারা সাঁতার কাটতে পছন্দ করে। ভ্রমণে যাওয়াও তার পছন্দ। কিয়ারা চিকিৎসক হতে চায়।