বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে কলকাতার বাঙালিদের পাতে পদ্মার ইলিশ

বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে রপ্তানি হওয়া পদ্মার ইলিশছবি: ভাস্কর মুখার্জি

বাংলাদেশে আজ ১৪২৯ বঙ্গাব্দ শুরু হলেও পশ্চিমবঙ্গে পয়লা বৈশাখ কাল শুক্রবার। বাংলা নববর্ষকে ঘিরে ভোজনপ্রিয় বাঙালিদের কাছে নববর্ষের প্রথম দিনে ইলিশ খাওয়া দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য। বছরের প্রথম সকালে পান্তার সঙ্গে ইলিশ খাওয়ার একটি সনাতনী প্রথাও চলে আসছে বাঙালিদের ঘরে ঘরে। একই সঙ্গে থাকে বাঙালিদের প্রিয় খাবার মুড়ি-চিড়া-খই-দই-ক্ষীরসহ নানা মিষ্টান্ন। কিন্তু কলকাতায় এবার নতুন বছরে বাকি সবকিছুই পাওয়া গেলেও ইলিশের ‘আকাল’ চলছে।

তবুও অনেক বাঙালি নববর্ষের প্রথম প্রহরে পান্তা ইলিশ খেয়ে রসনা তৃপ্তি করেন। আর বাঙালিদের ইলিশের এই চাহিদা জানেন বলেই এ বছর ইলিশের মৌসুমে পয়লা বৈশাখের কথা মাথায় রেখে পশ্চিমবঙ্গের ইলিশ ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশ হিমাগারে সংগ্রহ করে রেখেছেন। শুধু বৈশাখই নয়, এই বাঙালিদের পদ্মার ইলিশের চাহিদা থাকে জামাই ষষ্ঠী, দুর্গাপূজা, বিজয়া দশমী ও সরস্বতীপূজাতেও। ওই সময় আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকা পদ্মার ইলিশের চাহিদাও ওঠে তুঙ্গে।

তবে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের কাছে পদ্মার ইলিশের যেমন চাহিদা রয়েছে, তেমনি চাহিদা রয়েছে পান্তাভাত ও শুঁটকিরও। তবে এখনো কলকাতার মানুষের কাছে পান্তার সঙ্গে ইলিশের দিকেই পাল্লা ভারী। তবে দুষ্প্রাপ্য হয়ে ওঠা অনেকেই নতুন বছরের প্রথম দিনে পান্তার সঙ্গে ইলিশ খাওয়ার রেওয়াজ ছেড়ে দিয়েছেন। ফলে এবার নতুন বছরের প্রথম দিন পান্তার সঙ্গে ইলিশের স্বাদবঞ্চিত হবেন অনেকে। কারণ, বাজারে কিছু ইলিশ মিললেও সেটা সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে।

গত বছর বাংলাদেশ থেকে পদ্মার ইলিশ রপ্তানি হয়েছিল ভারতে। পয়লা বৈশাখে ব্যাপক চাহিদার কথা মাথায় রেখে তখন ইলিশ হিমাগারে সংরক্ষণ করেছিলেন সেখানকার ইলিশ ব্যবসায়ীরা। এখনো ৫০ টন পদ্মার ইলিশ হিমাগারে সংরক্ষণ করে রাখা আছে। এর সঙ্গে রয়েছে মিয়ানমারের ইরাবতী নদীর ২০০ টন ইলিশও। আজ বৃহস্পতিবার কলকাতার মাছ ব্যবসায়ী এসব ইলিশ বিক্রি শুরু করেছেন, যাতে কাল শুক্রবার ইলিশপ্রিয় বাঙালিরা তাদের প্রিয় ইলিশ পাতে তুলতে পারেন।

কলকাতার ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অতুল দাস আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিবছরের পয়লা বৈশাখে ইলিশের ব্যাপক চাহিদা থাকে। তাই বাংলাদেশ ও মিয়ানমার মিলিয়ে ২৫০ টন ইলিশ সংগ্রহ করে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। সেই ইলিশই আজ বাজারে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে ছাড়া হয়।

তিনি বলেন, মিয়ানমারের ইরাবতীর চেয়ে বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশের স্বাদ অনেক ভালো। তাই পদ্মার ইলিশের চাহিদা বেশি। তবে এবার বছরের প্রথম দিনে মাঝারি আকারের ইলিশ মিলবে। দামও থাকবে নাগালের মধ্যে। কিন্তু বড় ইলিশের দাম হবে আকাশছোঁয়া। তবুও নিমেষেই পদ্মার ইলিশ শেষ হবে ধারণা তাঁর।