অভিমত
জাতিসংঘ এখন ‘লাইফ সাপোর্টে’
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বৃহত্তম বিশ্ব সংস্থা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশন বসেছে। বিশ্বের বহু দেশের নেতারা তাতে যোগ দিয়েছেন। সেখানে যোগ দিতে গেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। কিন্তু বর্তমান বিবদমান বিশ্বে জাতিসংঘের হাল কী, নিজেদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সংস্থাটি কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে—সেসব বিষয় নিয়ে বিশ্লেষণ।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদকে বলা হয় বিশ্বের আইন পরিষদ। বিশ্বের সব দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে এখানে প্রায় সব বৈশ্বিক প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে। আর এই সংস্থার বার্ষিক সাধারণ অধিবেশনকে বলা হয় বিশ্বের ‘বাকবাকুম সভা’, ইংরেজিতে ‘টকিং শপ’।
সেই ‘কথা বলার দোকান’–এর ৭৮তম বার্ষিক অধিবেশন শুরু হয়েছে নিউইয়র্কে। প্রথম সাত দিন থাকছে উচ্চপর্যায়ের বক্তৃতা, বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৯৩টি দেশের নেতারা এতে অংশ নিচ্ছেন। বিদেশি নেতাদের কালো গাড়ির ভিড়ে ম্যানহাটানে রাস্তা পার হওয়াই কঠিন হয়ে পড়েছে। মূল অধিবেশনে ভাষণের বাইরে আরও হাজারটা বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হবে।
বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধানদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক তো রয়েছেই। ফলে কাগজে-কলমে অধিবেশনটির গুরুত্ব অস্বীকার করার জো নেই। তবে বাস্তব সত্য হলো, সপ্তাহধরে যে সাধারণ বিতর্ক হচ্ছে, তাতে নেতারা যে যার ভাষণ দিয়ে ঘরে ফিরে যাবেন। কথা বলা শেষ হতে না হতেই কী বলা হলো সবাই তা ভুলে যাবেন। অবাক করা ব্যাপার এই যে এ অধিবেশনের আরেক নাম ‘টকিং শপ’।
এ কথা বলায় আমাকে সিনিক বা ছিদ্রান্বেষী বলতে পারেন। কিন্তু কথাটা খুব অতিরঞ্জিত নয়। এই ভবনের ভেতর থেকে এই সাধারণ বিতর্ক দেখা ও শোনার সুযোগ আমার বহুবার হয়েছে। প্রথম এক-দুই দিন সবাই কান পেতে থাকেন। কারণ, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বা চীনা রাষ্ট্রপ্রধান সে সময় ভাষণ দেন। সবাই সে কথা শুনতে, নিদেনপক্ষে সাংবাদিক হিসেবে ‘কাভার’ করতে আগ্রহী। দিন যত যায়, আগ্রহ তত কমে। শেষের দিকে অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে এমন রাজকীয় যে সাধারণ পরিষদকক্ষ, তাতে কথা শোনার লোক থাকে হাতে গোনা, তা–ও অধিকাংশই যার যার দেশের নেতার ভাষণ শোনার জন্য। যে–ই সে নেতার ভাষণ শেষ, তাঁর সমর্থকেরা এক এক করে পেছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যান।
বিশ্বনেতারা যেসব কথা তাঁরা বলেন, তা–ও বড় মামুলি। মনে হয় আগে যেন অনেকবার শুনেছি। বস্তুত নামেই বিশ্বসভা, আসলে তাঁরা সবাই যাঁর যাঁর নিজের দেশের, অর্থাৎ তাঁদের নিজেদের সাফল্যের গান শুনিয়ে যান। ফলে আমরা ধরে নিতেই পারি যে বিশ্বসভায় ভাষণ হলেও তার আসল লক্ষ্য যাঁর যাঁর নিজের দেশের শ্রোতা-দর্শক।
জাতিসংঘের এই বার্ষিক সাধারণ বিতর্ক ব্যাপারটা কতটা খেলো হয়ে উঠেছে, তার এক উদাহরণ দিয়েছেন ইয়ান উইলিয়ামস, যিনি একসময় জাতিসংঘে সাংবাদিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, বেশ কয়েক বছর আগে, এক বক্তা তাঁর প্রতিবেশী দেশের উদাহরণ দিয়ে বললেন, পর্তুগিজ ঔপনিবেশিক প্রশাসনের জাঁতাকলে দেশটির মানুষ ধুঁকে ধুঁকে মরছে। সে কথা শুনে সবাই তো অবাক, কারণ, যে দেশটির কথা বলা হচ্ছে সেটি এক বছর আগেই স্বাধীনতা অর্জন করেছে। পরে জানা গেল, বক্তা এক বছর আগে দেওয়া ভাষণের কপি থেকে পড়ে শোনাচ্ছেন। সম্ভবত তিনি নিজেই সে ভাষণ দিয়েছিলেন, কিন্তু সেটির বিন্দুবিসর্গ তাঁর স্মরণে নেই।
উদাসীন বিশ্বনেতারা
১৯৪৫ সালে জাতিসংঘ যখন প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন আশা করা হয়েছিল এই বিশ্ব সংস্থাটি পৃথিবী থেকে যুদ্ধ, অনুন্নয়ন ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন ঠেকাবে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে যে দেশগুলো জার্মানি ও তার মিত্রদের পরাস্ত করে তারাই এই সংস্থা গঠনের আসল চালিকা শক্তি।
জাতিসংঘকে নিয়ে আশা ও উৎসাহের সেটাই আসল কারণ। কিন্তু খুব বেশি দিন লাগল না দেশগুলোর বন্ধুত্বে চিড় ধরতে। শুরু হয়ে গেল পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই। যারা যুদ্ধ ঠেকাবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, দেখা গেল তারাই যুদ্ধ বাধাতে সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত। পৃথিবীকে এক করার বদলে তাকে বিভক্ত করে যার যার প্রভাব বলয়ে আনাই তাদের আসল লক্ষ্য।
এরপর ৭৭টি বছর কেটে গেছে। অবস্থা বদলায়নি, বরং বহুগুণে অবনতি ঘটেছে। একটা জিনিস লক্ষ্য করুন, পাঁচটি দেশকে তাদের সার্বিক গুরুত্বের কারণে এই সংস্থার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে ‘ভেটো’ প্রদানের অধিকার দেওয়া হয়েছে। এ বছর সেই পাঁচ দেশের চার নেতাই অনুপস্থিত। এই সংস্থা যদি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয় এবং এই সাংবাৎসরিক অধিবেশন সামগ্রিক কল্যাণের জন্য অপরিহার্য হয়, তাহলে তাঁদের কারও তো অনুপস্থিত থাকার কথা নয়।
এই পাঁচজনের একজন নিজ দেশে রয়ে গেছেন প্রতিবেশী এক দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনায় নেতৃত্ব দিতে। আরেক প্রেসিডেন্ট ঠুঁটো জগন্নাথ এক রাজা তাঁর দেশে সফরে আসবেন, তাঁর দেখভাল করাই অধিক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে বলে আসতে পারছেন না। এমনকি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি—যিনি মাত্র সপ্তাহখানেক আগে নিজ দেশে সাড়ম্বরে জি-২০–এর শীর্ষ বৈঠকে পৌরোহিত্য করলেন—তিনিও আসতে পারেননি। অনুমান করি, দুই দিনের বৈঠক করে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন!
অথচ সবচেয়ে বেদনার বিষয় হলো, অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন বিশ্বের প্রয়োজন একটি কার্যকর জাতিসংঘ। জলবায়ু–সংকটের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যর্থ হলে গাড্ডায় পড়ব আমরা সবাই। একই কথা কোভিডের মতো অতিমারি নিয়ে। তার চেয়েও বড় অতিমারি আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। গৃহযুদ্ধে অথবা আন্তসীমান্ত সামরিক সংঘর্ষে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে দুই ডজনের মতো দেশ। দারিদ্র্য ও অনুন্নয়নে গলা পর্যন্ত ডুবে গেছে বিশ্বের অর্ধেক মানুষ।
বিশ্বনেতাদের জন্য কোনটা অগ্রাধিকার, এ থেকেই বেশ বোঝা যায়।
জাতিসংঘ যে ক্রমশ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে, সে কথা স্বয়ং মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস স্বীকার করেছেন। শান্তিরক্ষার বাইরে এই মুহূর্তে জাতিসংঘের সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ জলবায়ু–সংকটের মোকাবিলা। আর মাত্র ১০ বছরের মধ্যে যদি ভূপৃষ্ঠের উষ্ণতা কমিয়ে আনা সম্ভব না হয়, তাহলে বিশ্ব এক অনিবার্য ভয়াবহ বিপর্যয়ে নিক্ষিপ্ত হবে। এ জন্য একদিকে প্রয়োজন জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানির ব্যবহার বাদ দিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, যেমন সূর্য বা বাতাসের ব্যবহার বাড়ানো। অথচ যাঁরা এই বিশ্বের হর্তাকর্তা, তাঁরাই সবচেয়ে বেশি গ্যাস-তেলের কারবারি।
অন্য যে কাজটি করা একই রকম জরুরি, তা হচ্ছে দরিদ্র দেশগুলোকে জলবায়ু–সংকট মোকাবিলায় আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদান। এ ব্যাপারে ধনী দেশগুলো লম্বা লম্বা কথা বলেই তাদের দায়িত্ব সেরেছে, অর্থপূর্ণ খুব সামান্যই করেছে। আন্তোনিও গুতেরেসের ভাষায়, প্রতিজ্ঞাবদ্ধ দেশগুলোর এই ব্যর্থতায় বিশ্ব এখন ‘লাইফ সাপোর্টে’ রয়েছে।
বিশ্ব সংস্থা হিসেবেও জাতিসংঘ এখন একরকম ‘লাইফ সাপোর্টে’ রয়েছে। গত বছর, অর্থাৎ ৭৭তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে এক ভাষণে গুতেরেস বলেছিলেন, ‘একতাবদ্ধ হওয়ার বদলে আমরা বিশ্বকে খণ্ডবিখণ্ড করে ফেলছি। লক্ষ্য অর্জনের বদলে আমরা একে–অন্যের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এভাবে জড়িয়ে গেছি যে সংস্থাটি তার চলৎশক্তি হারিয়ে ফেলছে।’ মহাসচিব তাঁর স্বভাবজাত কূটনৈতিক ভাষা ত্যাগ করে সে ভাষণে স্পষ্ট বলেছিলেন, ‘আমাদের বিভক্তি বাড়ছে, অসাম্য বাড়ছে, লক্ষ্যপূরণ দুঃসাধ্য হয়ে পড়ছে। বড় বিপদে পড়ে গেছি আমরা।’
কার্যকারিতা হারাচ্ছে জাতিসংঘ
কোনো সন্দেহ নেই, এই বিপদের কারণ বিশ্বের বড় রাষ্ট্রগুলো নিজেরাই তৈরি করেছে। একটা উদাহরণ দিই। ২০২২ সালে প্রতিবেশী ইউক্রেন আক্রমণের মাধ্যমে জাতিসংঘের অন্যতম স্থপতি রাশিয়া—অর্থাৎ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন নিজেরাই সংস্থাটির প্রতি বুড়ো আঙুল দেখায়। জাতিসংঘ সনদের একটি প্রধান প্রতিশ্রুতিই হচ্ছে—কোনো দেশ, তা সে ছোট বা বড় যা–ই হোক, কোনো অবস্থাতেই অন্য কোনো দেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন হয়, এমন কাজ করবে না। রাশিয়া ঠিক সেই কাজটি করে বসে। প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো তাদের যেকোনো বিবাদ মেটাতে জাতিসংঘের বিরোধ-নিরোধনপ্রক্রিয়া ব্যবহার করবে, জাতিসংঘ সনদে স্বাক্ষরের সময় তারা এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
রাশিয়া জাতিসংঘে প্রতিশ্রুত পথে এগোয়নি। শুধু তা–ই নয়, বেসামরিক জনগণের ওপর যে নির্বিচার বোমাবাজি রাশিয়া করে যাচ্ছে, তাকে ‘জেনোসাইড’ নামে অভিহিত করা হয়েছে। স্বয়ং রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন যুদ্ধাপরাধের জন্য জাতিসংঘভুক্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
শুধু রাশিয়া নয়, জাতিসংঘভুক্ত অধিকাংশ বৃহৎ রাষ্ট্র বেশির ভাগ দ্বিপক্ষীয় বা বহুপক্ষীয় সমস্যার মোকাবিলায় জাতিসংঘের দ্বারস্থ না হয়ে নিজের পছন্দমতো রাস্তা খুঁজে নিচ্ছে। জাতিসংঘ যে এখন নখদন্তহীন একটি পোষা বিড়াল মাত্র, তার এক বড় কারণ এই সংস্থাটিকে এড়িয়ে বিশ্বের দেশগুলো যে যার মতো ছোট ছোট জোট গঠন করে নিয়েছে।
বিশ্বের তিন মোড়ল—যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়া—তাদের নেতৃত্বে নানা জোট গড়ে তুলেছে। উন্নয়নশীল দেশগুলো, যারা এখন আর বড় রাষ্ট্রগুলোর প্রতিশ্রুতিতে আস্থা রাখতে পারছে না, তারাও নিজেদের স্বার্থ রক্ষা হয় এমন পাল্টা জোটব্যবস্থা গড়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে জাতিসংঘ গঠিত হয়েছিল, অর্থাৎ সব রকমের আন্তর্জাতিক প্রশ্নে সমন্বিত কার্যক্রম—তা অনুসরণের বদলে এখন বড় বড় দেশ যে যার মতো নিজেদের প্রভাবাধীন জোট গড়ে সেখানেই বিচারসভা বসাচ্ছে। জি–৭, জি–২০ বা ব্রিকস—এসবই এক অর্থে ছোট ছোট জাতিসংঘ।
জাতিসংঘ যে ক্রমেই তার কার্যকারিতা ও প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে, তার এক বড় কারণ এই সংস্থা বিশ্বের পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে বা বদলাতে ব্যর্থ হয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের দিকে তাকান। অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে এই পরিষদের ভূমিকা সবচেয়ে বড়। যে পাঁচটি দেশ সেই ১৯৪৫ থেকে নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো অধিকার নিয়ে বসে আছে, তার তিনটিই ইউরোপের।
ফ্রান্স বা যুক্তরাজ্য একসময় বিশ্বশক্তি ছিল, এখন তারা নিজেদের অতীতের ছায়ামাত্র। তাহলে কী হবে? বাস্তবতা মেনে সরে দাঁড়াতে বললে তারা কখনোই রাজি হবে না। আফ্রিকা মহাদেশ বা আরব দেশগুলো থেকে এই পরিষদে কোনো স্থায়ী সদস্য নেই। তৃতীয় বিশ্ব থেকে চীন আছে বটে, কিন্তু জনসংখ্যার দিক দিয়ে বৃহত্তম ভারত তেমন সুযোগ থেকে বঞ্চিত। লাতিন আমেরিকার কোনো দেশেরও সেখানে পা রাখার স্থায়ী কোনো জায়গা নেই।
অন্য কথায়, গত সাত দশকে বিশ্ব বদলেছে, কিন্তু বিশ্ব সংস্থা বদলায়নি। সবাই এ কথা মানেন, জাতিসংঘকে ঢেলে সাজাতে হবে, কিন্তু ঢেলে সাজাতে হলে সবার আগে প্রয়োজন নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্যের সম্মতি। সেই সম্মতিও আসবে না, অচলাবস্থারও নিরসন হবে না।
অথচ সবচেয়ে বেদনার বিষয় হলো, অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন বিশ্বের প্রয়োজন একটি কার্যকর জাতিসংঘ। জলবায়ু–সংকটের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যর্থ হলে গাড্ডায় পড়ব আমরা সবাই। একই কথা কোভিডের মতো অতিমারি নিয়ে। তার চেয়েও বড় অতিমারি আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। গৃহযুদ্ধে অথবা আন্তসীমান্ত সামরিক সংঘর্ষে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে দুই ডজনের মতো দেশ। দারিদ্র্য ও অনুন্নয়নে গলা পর্যন্ত ডুবে গেছে বিশ্বের অর্ধেক মানুষ।
কথা ছিল, এসব সমস্যার সমাধানে নেতৃত্ব দেবে জাতিসংঘ। সে যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে আমাদের অন্য যে নামেই হোক, ঠিক জাতিসংঘের মতোই আরেকটি সংস্থা গড়ে তুলতে হবে।