ইউক্রেনে অবিলম্বে সেনা প্রত্যাহার ও গণভোটের দাবি মানবে না রাশিয়া
ইউক্রেন থেকে অবিলম্বে রুশ সেনা প্রত্যাহার এবং দুই পক্ষের সম্ভাব্য সমঝোতা নিয়ে গণভোট আয়োজনের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের এসব দাবি পূরণ সম্ভব হবে না। খবর আল–জাজিরা ও বিবিসির।
ইউক্রেনে রুশ হামলার ৪২তম দিনে গড়িয়েছে আজ বুধবার। ইতিমধ্যে চলমান সংকট নিরসনে বেশ কয়েক দফায় আলোচনা হলেও উল্লেখযোগ্য কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি দুই পক্ষ। রাশিয়ার ধারণা, সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষরের জন্য অবিলম্বে রুশ সেনা প্রত্যাহারসহ কিছু শর্ত দিতে পারে ইউক্রেন। তবে তা পূরণ করা সম্ভব হবে না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছে মস্কো।
গতকাল লাভরভ বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষরের জন্য ইউক্রেন কয়েক দিনের মধ্যে সব যুদ্ধ তৎপরতা বন্ধের শর্ত দিতে পারে। রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী যেন ইউক্রেন ছেড়ে যায়, সে শর্তও দিতে পারে তারা। এর পর গণভোটের কথা বলা হতে পারে এবং তা পার্লামেন্টে অনুমোদন করানোর বিষয়ও আসতে পারে।
খুব বেশি আশঙ্কা আছে, এ অনুমোদনের প্রক্রিয়া ও গণভোটের ফল নেতিবাচক হওয়ার পর আমাদের নতুন করে শান্তি আলোচনা শুরু করতে হবে। আমরা এমন ইঁদুর-বিড়াল খেলা খেলতে পারব না।’
এদিকে বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, লাভরভ অভিযোগ করেছেন, মস্কো ও কিয়েভের মধ্যকার শান্তি আলোচনা ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টা করছে পশ্চিমা বিশ্ব। ইউক্রেনের বুচা শহরে বেসামরিক নাগরিক হত্যার ঘটনা সামনে এনে উত্তেজনা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে তারা।
সম্প্রতি ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের কাছে বুচা শহর থেকে রুশ সেনারা চলে যাওয়ার পর স্থানীয় মেয়র জানান, শহরের বিভিন্ন সড়কে লাশ পড়ে রয়েছে। লাশগুলোকে গণকবর দেওয়া হচ্ছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩২০ জনই বেসামরিক নাগরিক বলে উল্লেখ করেন তিনি। এ ঘটনায় রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ খুঁজতে আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে কিয়েভ। এদিকে ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলোর কর্মকর্তারা দাবি করে আসছেন, রাশিয়া যে যুদ্ধাপরাধ করেছে, তার প্রমাণ রয়েছে।
তবে রুশ বার্তা সংস্থা আরআইএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মস্কো এ হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং একে ভয়ংকর মিথ্যা বলে উল্লেখ করেছে তারা।
বুচা শহরে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হতে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত তদন্ত শুরু করেছেন। ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহের জন্য ইউক্রেনও একটি বিশেষ দল তৈরি করেছে।