আকাশপথে আসছে ট্যাক্সি সেবা
খানাখন্দে ভরা রাস্তা। কালো ধোঁয়া ছেড়ে এগিয়ে চলা বাস আর বিরক্তিকর যানজট। বিশ্বের অনেক শহরের বাসিন্দাদের এটি নিত্যনৈমিত্তিক চিত্র। এ থেকে মুক্তির পথ কী? একমাত্র মুক্তির উপায় হতে পারে আকাশপথ। উড়ন্ত গাড়ি। বৈদ্যুতিক শক্তিতে চলা এয়ার ট্যাক্সি মানুষের যাতায়াতের ক্ষেত্রে স্বস্তি আনতে পারে। শিগগিরই হয়তো এমন এয়ার ট্যাক্সির দেখা মিলতে পারে ইতালির রোমের ফিউমিসিনো বিমানবন্দরে। সেখান থেকে এয়ার ট্যাক্সি ভাড়া করে ৩০ কিলোমিটার দূরের সিটি সেন্টারে যাওয়া যাবে সহজে। খবর এএফপির।
জার্মানির প্রতিষ্ঠান ভোলোকপ্টার এই এয়ার ট্যাক্সি সুবিধা চালু করবে। আগামী তিন বছরের মধ্যেই রোমে এ সেবা চালু হয়ে যাবে বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে ভোলোকপ্টার। তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করছে রোমের বিমানবন্দর পরিচালনা প্রতিষ্ঠান এডিআর ও যোগাযোগ অবকাঠামো প্রতিষ্ঠান আটলান্টিয়া। পুরো প্রকল্পটিকে বলা হচ্ছে ‘ভোলোসিটি’। এ প্রকল্পটি প্যারিস ও সিঙ্গাপুরে চালু করার কথাও ভাবা হচ্ছে। এয়ার ট্যাক্সির মাধ্যমে যাত্রীকে বিমানবন্দর থেকে ২০ মিনিটেই শহরের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হবে। এতে কোনো ট্রাফিক জ্যামের মুখে পড়তে হবে না বা বায়ুদূষণের কোনো আশঙ্কাও নেই। ভোলোকপ্টারের তৈরি বিশেষ এয়ার ট্যাক্সি ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারবেন।
শুরুতে এই এয়ার ট্যাক্সিতে চালক ছাড়া একজন যাত্রী বহন করা সম্ভব হবে। তবে পরে এ উড়ন্ত যানটিকে পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় করে ফেলার কথা ভাবছে ভোলোকপ্টার। এতে আর চালকের প্রয়োজন পড়বে না। তখন সহজেই দুজন যাত্রীকে নিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া যাবে।
ফিউমিসিনো প্রকল্পের জন্য এখনেও ভার্টিপোর্ট নামের বিশেষ প্রযুক্তির উন্নয়ন করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলছেন উদ্যোক্তারা। এতে এয়ার ট্যাক্সিগুলো খাড়াভাবে উড়তে ও অবতরণ করতে সক্ষম হবে।
স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিউমিসিনো থেকে সিটি সেন্টারে যেতে ২০ মিনিটের খরচ ধরা হয়েছে ১৪০ ইউরো। ট্যাক্সিতে যেতে খরচ হয় ৪৮ ইউরো। ট্রেনে যেতে ৩২ মিনিট লাগে। এ জন্য খরচ হয় ১৪ ইউরো।
চালক ছাড়াই উড়ন্ত ট্যাক্সির ধারণা বিশ্বজুড়ে এখন পরিচিত হয়ে উঠেছে। রাস্তায় যানজট কমাতে এবং দূষণ সীমিত করার একটি অংশ হিসেবে এ প্রকল্পের দিকে আগ্রহ বাড়ছে।
রাইড শেয়ারিং সেবাদাতা উবার, গাড়ি নির্মাতা জেনারেল মটরস ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এ ধরনের এয়ার ট্যাক্সি সেবা আনতে কাজ করছে। তাদের লক্ষ্য মূলত ভার্টিক্যাল টেক অফ অ্যান্ড ল্যান্ডিং এয়ারক্রাফটের (ভিটিওএল) যানের দিকে। তবে এ ক্ষেত্রে মূল সমস্যা হচ্ছে নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি।