যুক্তরাজ্যে প্রতিস্থাপিত জরায়ু থেকে প্রথম শিশুর জন্ম

লন্ডনের কুইন শার্লটস অ্যান্ড চেলসিয়া হাসপাতালে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শিশুটির জন্ম হয়ছবি: বিবিসির এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে নেওয়া

যুক্তরাজ্যে প্রতিস্থাপন করা জরায়ু থেকে প্রথমবারের মতো এক শিশুর জন্ম হয়েছে। ওই নবজাতকের খালা তার মাকে জরায়ু দান করেছিলেন। আজ মঙ্গলবার লন্ডনের কুইন শার্লটস অ্যান্ড চেলসিয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ খবরটি নিশ্চিত করেছে।

ওই হাসপাতালেই গত ২৭ ফেব্রুয়ারি অ্যামি নামের ওই মেয়েশিশুটির জন্ম হয়। তার মায়ের নাম গ্রেস ডেভিডসন। দুই বছর আগে গ্রেসের শরীরে তাঁর বড় বোনের জরায়ু প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল।

নবজাতকের জন্ম দেওয়া গ্রেস ডেভিডসন বলেন, ‘আমাদের এ যাবৎকালে চাওয়া সবচেয়ে বড় উপহারটি আমরা পেয়েছি।’

গ্রেসের আশা, ভবিষ্যতে সন্তান ধারণে অক্ষম নারীদের জন্য এটি একটি বিকল্প উপায় হয়ে উঠবে।

বার্তা সংস্থা প্রেস অ্যাসোসিয়েশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শিশুটির বাবা অ্যাঙ্গাস ডেভিডসন বলেন, ‘অ্যামিকে সত্যিকার অর্থে পাওয়ার এ যাত্রায় যাঁরা আমাদের সাহায্য করেছেন, তাঁদের নিয়ে কক্ষটি পরিপূর্ণ হয়ে ছিল। সম্ভবত ১০ বছর ধরে আমাদের আবেগ-অনুভূতি একরকম চাপা অবস্থায় ছিল। আর সেটার প্রকাশ কেমন হতে পারে, তা আপনার জানার কথা নয়। তা হাউমাউ কান্না হয়ে বের হয়ে এসেছে।’

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, গ্রেস ডেভিডসনের বয়স ৩৬ বছর। রোকিটানস্কি-কাস্টার হাউসার নামে পরিচিত একটি বিরল শারীরিক জটিলতা আছে তাঁর। জন্মের সময় থেকেই তাঁর জরায়ুটি নিষ্ক্রিয় ছিল।

গ্রেস যুক্তরাজ্যের প্রথম নারী, যাঁর শরীরে জরায়ু প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। তাঁর ৪২ বছর বয়সী বোন অ্যামি পার্ডি তাঁকে জরায়ুটি দান করেছিলেন। অ্যামির ১০ এবং ৬ বছর বয়সী দুটি মেয়ে আছে।

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে অক্সফোর্ড ট্রান্সপ্লান্ট সেন্টারে জরায়ুটি প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। অক্সফোর্ড ট্রান্সপ্লান্ট সেন্টার অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি হসপিটালস ফাউন্ডেশনের অংশ।

যুক্তরাজ্যে সুস্থ ও জীবিত অবস্থায় অঙ্গদান কর্মসূচির সহপ্রধান এবং স্ত্রীরোগবিষয়ক শল্য চিকিৎসক রিচার্ড স্মিথ বলেছেন, অ্যামির জন্মগ্রহণের ঘটনাটি ২৫ বছরের বেশি সময়ের গবেষণার চূড়ান্ত ফল।

২০১৩ সালে প্রথম সুইডেনে জরায়ু প্রতিস্থাপনের ঘটনা ঘটে। এর পর থেকে বিশ্বজুড়ে ১০০টির বেশি জরায়ু প্রতিস্থাপন হয়েছে। এ পর্যন্ত বিশ্বে প্রতিস্থাপিত জরায়ু থেকে প্রায় ৫০টি সুস্থ শিশুর জন্ম হয়েছে।