ইউক্রেন থেকে বেরোলেন জেলেনস্কি, যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রে
গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর প্রথম বিদেশ সফর করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এ জন্য তিনি আজ বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের উদ্দেশে ইউক্রেন ছেড়েছেন। সফরকালে হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। খবর এএফপি ও রয়টার্সের।
ওয়াশিংটন সফরের কথা আজ জেলেনস্কি নিজেই টুইট করে জানান। এরপর হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে সফরের কথা জানানো হয়। এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কারিন জেন-পিয়েরে বলেন, এ সফরের মধ্য দিয়ে যুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মিত্রদের প্রতিশ্রুতির বিষয়ে রাশিয়াকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হচ্ছে।
হোয়াইট হাউসে বাইডেন-জেলেনস্কি বৈঠকের পর মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে প্রায় ২০০ কোটি ডলারের অস্ত্রসহায়তা দেওয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হতে পারে। মার্কিন প্রশাসনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, এ প্যাকেজের আওতায় ইউক্রেনকে প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে জেলেনস্কির ভাষণ দেওয়ার বিষয়ে স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেন, যৌথ অধিবেশনে গণতন্ত্র সমুন্নত রাখার বিষয়ে নিবিড় মনোযোগ দেওয়া হবে। এ ছাড়া বাইডেন ও জেলেনস্কি ইউক্রেনের সেনাদের মার্কিন বাহিনীর অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ, অর্থনৈতিক ও মানবিক সহায়তা, নিষেধাজ্ঞা ও অন্যান্য মাধ্যমে রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগের বিষয়ে আলোচনা করবেন।
১১ ডিসেম্বর বাইডেন ও জেলেনস্কি টেলিফোনে কথা বলেছিলেন। মূলত এরপরই জেলেনস্কির ওয়াশিংটন সফরের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়। দুই পক্ষের চিঠি-চালাচালির পর গত রোববার সফর চূড়ান্ত হয়। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর ৩০০তম দিনে (গতকাল মঙ্গলবার) জেলেনস্কি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের রুশ অধ্যুষিত দোনেৎস্ক অঞ্চলের বাখমুটে যুদ্ধক্ষেত্র পরিদর্শন করেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি সেখান থেকেই ওয়াশিংটনের পথে রওনা হন।
নিরাপত্তার কারণে জেলেনস্কির ওয়াশিংটন সফরের বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি। তবে বিবিসি জানিয়েছে, জেলেনস্কিকে পোল্যান্ডের একটি রেলস্টেশনে দেখা গেছে। এ সময় নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে ঘিরে ছিলেন। জেলেনস্কি ট্রেনে চেপে ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডে গিয়ে সেখান থেকে আকাশপথে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করবেন বলেও মনে করা হচ্ছে।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের ওয়াশিংটন সফর থেকে মস্কোর কোনো প্রত্যাশা নেই বলে মন্তব্য করেছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। আজ মস্কোয় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ইউক্রেনে পশ্চিমা অস্ত্রসহায়তা অব্যাহত রয়েছে, যা যুদ্ধের গভীরতা বাড়িয়ে দিচ্ছে। ইউক্রেনের জন্য এটা ভালো কিছু বয়ে আনবে না।
ফ্রান্সের অস্ত্রসহায়তা
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে ইউক্রেনকে অর্থ ও অস্ত্রসহায়তা দিয়ে আসছে পশ্চিমা মিত্ররা। এ ধারাবাহিকতায় কিয়েভকে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ও অন্যান্য অস্ত্র সরবরাহ করেছে ফ্রান্স। আগামী বছরের শুরুর দিকে ইউক্রেনকে আরও অস্ত্র দেবে প্যারিস। আজ এক সাক্ষাৎকারে এমন তথ্য জানিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ।
মাখোঁ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনকে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র, রকেটলঞ্চার, আকাশ প্রতিরক্ষায় ব্যবহৃত ব্যাটারি সরবরাহ করা হয়েছে। আগামী বছরের শুরুতেও এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া হবে। তবে চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনকে কী ধরনের ও কত পরিমাণে অস্ত্র দেওয়া হবে, সেই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি ফরাসি প্রেসিডেন্ট।