ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে শর্তগুলো জানালেন পুতিন
ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে নতুন দাবির কথা জানালেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে তিনটি শর্ত দিয়েছেন ইউক্রেনকে। এগুলো হচ্ছে আরও ভূখণ্ড ছাড়ার জন্য রাজি থাকতে হবে কিয়েভকে, দেশের আরও ভেতরে তাদের সেনা সরিয়ে নিতে হবে এবং পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যুক্ত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করতে হবে।
পশ্চিমাদের নেতৃত্বে ইউক্রেনের শান্তি প্রচেষ্টা নিয়ে সুইজারল্যান্ডে এ সপ্তাহে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের মধ্যেই পুতিন তাঁর শর্তের বিষয়গুলো সামনে আনলেন। সুইজারল্যান্ডের ওই সম্মেলনে বিশ্বের ৯০টি দেশের প্রতিনিধি ও সংস্থা অংশ নেয়। ওই সম্মেলনে অবশ্য রাশিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এর মধ্যে আজ শুক্রবার পুতিন তাঁর শর্তের বিষয়টি সামনে আনলেন।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রাষ্ট্রদূতদের সামনে পুতিন তাঁর হালনাগাদ শর্তের বিষয়টি সামনে আনেন। ইউক্রেনে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পূর্ণমাত্রার অভিযান শুরু করার পর এবারই প্রথম পুতিন তাঁর শর্তের বিষয়টি সরাসরি বললেন।
তবে পুতিনের এই শর্তের বিষয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেন, ইউক্রেন নিয়ে কোনো দাবি জানানোর মতো বা যে যুদ্ধ তিনি শুরু করেছেন তা আজই শেষ করার মতো অবস্থায় নেই পুতিন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, পুতিন যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা বিশ্বাস করার মতো নয়। তাঁর শর্ত মেনে নিয়ে যুদ্ধবিরতিতে গেলেও তিনি হামলা বন্ধ করবেন না।
পুতিনের দাবি অনুযায়ী, ইউক্রেনের সেনাদের পুরো দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চল ছাড়তে হবে। এগুলোকে আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়ার অঞ্চল ঘোষণা করা হলেই বিষয়টিকে শেষ বলে মেনে নেবে রাশিয়া। পুতিন বলেন, ‘যখনই কিয়েভ বলবে যে তারা সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত এবং এসব এলাকা থেকে সেনা সরিয়ে নেবে ও ন্যাটোতে যুক্ত হওয়ার পরিকল্পনা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেবে, তখনই রাশিয়া যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়ে আলোচনা শুরু করবে।’
পুতিন আরও বলেন, যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে যেসব নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সব তুলে নিতে হবে। এ সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে রাশিয়ার ব্যাংক খাতে নিষেধাজ্ঞার পরিধি বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া রুশ স্টক এক্সচেঞ্জ, চিপ ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
মার্কিন রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, তাঁরা রাশিয়ার অর্থনৈতিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছেন। রাশিয়া তাদের অর্থনীতিকে পুরোপুরি পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধকালীন অর্থনীতিতে রূপ দেওয়ায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এ সপ্তাহে পশ্চিমা ধনী দেশগুলোর জোট জি-৭–এর পক্ষ থেকে রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদ থেকে ইউক্রেনকে ঋণ দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দেওয়া হয়েছে। পুতিনের পক্ষ থেকে এ উদ্যোগকে চুরি বলে মন্তব্য করা হয়েছে।