চুমু খাওয়া চলছে সাড়ে চার হাজার বছর ধরে
প্রেম–ভালোবাসার অনুষঙ্গ হিসেবে চুমু খাওয়ার প্রাচীনতম নজির সাড়ে চার হাজার বছরের পুরোনো। অর্থাৎ এতকাল যা ভাবা হতো, তার চেয়েও হাজার বছর আগের।
১৮ মে মার্কিন সায়েন্স সাময়িকীতে গবেষকেরা এমনটাই জানিয়েছেন। এ–সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ইতিহাসের প্রাচীন যুগেও প্রেম জানাতে মানুষ একে অপরকে চুমু খেত।
গবেষণায় প্রমাণ দিয়ে বলা হয়েছে, অন্তত খ্রিষ্টপূর্ব ২৫০০ শতাব্দী থেকেই ‘প্রাচীন মেসোপটেমিয়া ও মিসরে ঠোঁটে চুমু খাওয়ার চল ছিল’।
গবেষণা প্রতিবেদনটির লেখক ট্রোয়েলস পাঙ্ক আরবল বলেছেন, তিনি ও তাঁর সহলেখক সোফি লান্ড রাসমুসেন প্রেমের নিদর্শন হিসেবে ঠোঁটে চুমু খাওয়ার জেরে কীভাবে রোগ ছড়াতে পারে, তা খতিয়ে দেখছেন।
আরবল একজন অ্যাসিরিওলজিস্ট, অর্থাৎ প্রাচীন নিকটপ্রাচ্য বিষয়ের বিশেষজ্ঞ। তিনি ইউনিভার্সিটি অব কোপেনহেগেনে পড়ান। আর সোফি লান্ড রাসমুসেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন জীববিজ্ঞানী।
এই দুই বিজ্ঞানী বলছেন, সাম্প্রতিক গবেষণায় যৌনতা ও প্রেমজাত চুমুর প্রথম উল্লেখ হিসেবে ১৫০০ খ্রিষ্টপূর্ব সালে ভারতের একটি নজির দেখানো হয়। কিন্তু আরবল বলেন, ‘আমি জানতাম, আগেই প্রাচীন মেসোপটেমিয়ার কিছু প্রমাণ–নজির পাওয়া গিয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ’৮০–এর দশকে এসব প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে। তথ্যগুলো অন্য ক্ষেত্রে কাজে লাগানো হয়নি বলে মনে হয়।
কাজের অংশ হিসেবে ট্রোয়েলস পাঙ্ক আরবল মাটির ফলকে খোদাই করা প্রাচীন কীলকলিপি পাঠ করে থাকেন। প্রাচীন মধ্যপ্রাচ্যে তিরের ফলার মতো দাগকাটা এই লিপির চল ছিল।
সংগৃহীত প্রাচীন কীলকলিপির হাজারো লেখায় তাঁরা অবশ্য প্রেমের চুমুর অল্প কিছু নজির পেয়েছেন। তবে তাঁরা বলছেন, প্রাচীন যুগেও প্রেমের ঘনিষ্ঠতা থেকে চুমু খাওয়া সাধারণ ব্যাপার ছিল—এটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
লেখাগুলো থেকে ধারণা হয়, বিবাহিত যুগলেরাই চুমু খেতেন। তবে অবিবাহিত ব্যক্তিরা যখন প্রেমে পড়তেন, চুমু তাঁদের যৌন বাসনার অংশ হিসেবে গণ্য হতো।
গবেষকেরা বাবা–মায়ের দেওয়া স্নেহের চুমু এবং যৌনতা ও প্রেমজাত চুমুর মধ্যে পার্থক্য করেন। প্রথম ধরনের চুমু আবহমানকাল থেকে দুনিয়াজুড়ে চলে আসছে। তবে দ্বিতীয় ধরনটি সব সংস্কৃতিতে চলে না।