ইউক্রেনে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে রাশিয়ার ড্রোন হামলা, শীতে বিপর্যস্ত মানুষ
রাশিয়ার ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মিকোলাইভে একটি তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে তীব্র শীতের মধ্যে ওই এলাকার প্রায় ৪৬ হাজার মানুষকে বিদ্যুৎহীন রাত কাটাতে হয়েছে। ঘরবাড়ি গরম করার জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ তাঁরা পাননি। ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ড্যানিস শিমহাল এ কথা জানান।
বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপ টেলিগ্রামে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে, যাতে শূন্যের নিচে তাপমাত্রায় মানুষকে তীব্র শীতের মধ্যে রাখা যায়। মানবিক বিপর্যয়কর অবস্থা তৈরি করা যায়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, এ হামলার প্রভাব সুদূরপ্রসারী। হামলার জেরে শহরটির এক লাখ বাসিন্দা তীব্র শীতের মধ্যে উত্তাপ পাচ্ছেন না।
এক্স পোস্টে জেলেনস্কি আরও বলেন, ‘শহরটি খুবই সাধারণ। বেসামরিক অবকাঠামোও সাধারণ। এর সঙ্গে শত্রুতা কিংবা সম্মুখ যুদ্ধ পরিস্থিতির কোনো সম্পর্ক নেই।’ মিকোলাইভবাসীকে শীত থেকে রক্ষা করতে ও তাপের ব্যবস্থা আবারও চালু করতে ‘নিরলসভাবে কাজ করা’ হচ্ছে বলেও জানান জেলেনস্কি।
রুশ বাহিনী রাতভর ইউক্রেনে ১৪৩টি ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী বলেছে, এর মধ্যে তারা ৯৫টি ড্রোন ভূপাতিত করতে পেরেছে। ৪৬টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারেনি। ড্রোন হামলা ঠেকাতে বৈদ্যুতিক চুম্বক প্রতিরোধব্যবস্থা ব্যবহারের কারণে সম্ভবত এটা সম্ভব হয়েছে।
ইউক্রেনে রাতভর এসব ড্রোন হামলায় অন্তত একজনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া দেশটির কিয়েভ অঞ্চলে কিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। রোববার রাতে মিকোলাইভ শহরের তাপমাত্রা মাইনাস ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসার কথা ছিল।
এদিকে জার্মানির মিউনিখে তিন দিনের নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। রোববার সম্মেলন শেষ হয়েছে। বৈঠকের ফাঁকে জেলেনস্কি ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা জোরদারে সহায়তার জন্য পশ্চিমা মিত্রদের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।
জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরুর তৃতীয় বর্ষপূর্তি সামনেই। বর্তমানে ইউক্রেনের ২০ শতাংশ নিজেদের দখলে নিয়েছে রাশিয়া। ধীরগতিতে হলেও ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ বাহিনী অগ্রসর হচ্ছে।
ইউক্রেনে সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোয় গত সপ্তাহজুড়ে আকাশপথে প্রায় ১ হাজার ২২০টি বোমা হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এর মধ্যে ৮৫০টির বেশি ড্রোন হামলা। ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ৪০টির বেশি। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ কথা জানান জেলেনস্কি।
এ বিষয়ে রাশিয়ার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।