যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার ‘নিউ স্টার্ট’ পারমাণবিক চুক্তিতে কী ছিল
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যকার পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি ‘নিউ স্টার্ট’ স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আজ মঙ্গলবার বার্ষিক ‘স্টেট অব দ্য ন্যাশন’ ভাষণে এ ঘোষণা দেন তিনি।
পুতিন বলেছেন, ‘আমি আজকে এ ঘোষণা দিতে বাধ্য হলাম যে স্ট্রাটেজিক অফেনসিভ আর্মস ট্রিটিতে অংশগ্রহণ স্থগিত করছে রাশিয়া।’ রুশ প্রেসিডেন্ট বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি দ্রুত পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায় তাহলে রাশিয়ারও পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হওয়া দরকার।
নিউ স্টার্ট চুক্তি কী?
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে নিউ স্টার্ট চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ২০১০ সালে। স্বাক্ষর করেছিলেন দুই দেশের সে সময়ের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও দিমিত্রি মেদভেদেভ। মস্কো ও ওয়াশিংটন মোট কতসংখ্যক কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করতে পারবে, তার সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারিত করে দিয়েছিল এই চুক্তি। চুক্তি অনুযায়ী, উভয় দেশের সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫৫০টি পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের সুযোগ ছিল।
নিউ স্টার্ট চুক্তি কার্যকর হয় ২০১১ সালে। পরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর ২০২১ সালে চুক্তিটির মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়ানো হয়। একই সঙ্গে চুক্তির শর্তগুলো দুই পক্ষই মেনে চলছে কি না, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পান যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পরিদর্শকেরা।
তবে করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালের মার্চে ওই পরিদর্শন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তা আবার শুরু করতে গত বছরের নভেম্বরে মিসরে আলোচনায় বসার কথা ছিল মস্কো ও ওয়াশিংটনের কর্তাব্যক্তিদের। তবে রাশিয়া ওই আলোচনা স্থগিত করে। এরপর থেকে কোনো পক্ষই আলোচনার নতুন তারিখ দেয়নি।
রাশিয়া কি আগেও চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিল?
নিউ স্টার্ট চুক্তিকে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রের ধ্বংসাত্মক চেষ্টা আখ্যা দিয়েছিল রাশিয়া। তবে চলতি মাসের শুরুতেও দেশটি বলেছিল, এই চুক্তিতে থাকতে চায় তারা। আর যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, নিজ ভূখণ্ডে পরিদর্শন করতে দিতে নারাজ রাশিয়া। এর মাধ্যমে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে দেশটি।
বিশ্বে সামরিক শক্তির দিক দিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। দুই দেশের হাতে বিশ্বের প্রায় ৯০ শতাংশ পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। যদিও যেকোনো মূল্যে পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে যুদ্ধ ঠেকানোর বিষয়ে জোর দিয়ে আসছে ওয়াশিংটন ও মস্কো। তবে ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্য দিয়ে গত ৬০ বছরের মধ্যে সরাসরি সংঘাতে জড়ানোর সবচেয়ে কাছাকাছি এসেছে দুই দেশ।