২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে হলিউডে চাকরি হারানোর শঙ্কা

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ব্যবহার বন্ধের দাবিতে সড়কে নেমেছেন হলিউডের চিত্রনাট্যকারেরা ছবি: রয়টার্স
ছবি: রয়টার্স

রোবট বা যন্ত্রের দখলে চলে যাওয়া ভবিষ্যৎ কাল্পনিক পৃথিবী নিয়ে অনেক বছর ধরেই গল্প লিখে আসছেন হলিউডের চিত্রনাট্যকারেরা। এবার তাঁরাই যন্ত্রের কাছে নিজেদের চাকরি হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন। প্রতিবাদে শুরু করেছেন ধর্মঘটও।

টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির (এআই) ব্যবহারে রাশ টেনে ধরার দাবি তুলেছে দ্য রাইটার্স গিল্ড অব আমেরিকা-ডব্লিউজিএ। তবে স্ট্রিমিং সেবায় মুনাফার কাটতি আর পড়তি বিজ্ঞাপনী আয়ে ধুঁকতে থাকা হলিউড স্টুডিওগুলো সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।

স্টুডিওগুলোর পক্ষে চুক্তির মধ্যস্থতাকারী অ্যালায়েন্স অব মোশন পিকচার্স অ্যান্ড টেলিভিশন প্রডিউসার্সের মুখপাত্রের সঙ্গে এই বিষয়ে রয়টার্সের তরফে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

কয়েক বছর ধরেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে হলিউড পাড়ায় বিতর্ক চলছে। শেষমেশ সোমবার থেকে ধর্মঘটে নেমেছেন মার্কিন চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের চিত্রনাট্যকারেরা।

ডব্লিউজিএর সমঝোতা কমিটির সদস্য ও চিত্রনাট্যকার জন অগাস্ট কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে তাঁদের উদ্বেগের দুটি কারণ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না আমাদের উপকরণ দিয়ে তাদের (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার) খাওয়ার জোগান দিতে। সেই সঙ্গে আমরাও তাদের অপেশাদার খসড়া লেখা ঠিক করার ভূমিকায় থাকতে চাই না।’

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হলিউডের চলচ্চিত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বেড়েই চলেছে। প্রবীণ শিল্পীদের মুখের বলিরেখা মুছে দিতে সহায়তা করছে এআই। অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রকে বাস্তবের মতো করে তুলে ধরছে, এমনকি চিত্রনাট্য তৈরিতেও এআই-এর পরীক্ষামূলক ব্যবহার চলছে।

সিডনি ইউনিভার্সিটির মোটুস ল্যাবের সহপ্রতিষ্ঠাতা মাইক সেমুর বলেন, একটা সময় ভাবা হয়েছিল, মানুষের কাছ থেকে অন্তত সৃজনশীল কাজ কেড়ে নিতে পারবে না যন্ত্র। সেই বিশ্বাসে চিড় ধরলেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চিত্রনাট্যকারদের সহায়তা করতে পারে বলে মনে করেন তিনি। অন্তত কোনো কিছুর শুরুর শূন্যতা কাটাতে প্রযুক্তি ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমি দাবি করছি না এআই অতি বুদ্ধিমান হয়ে উঠবে এবং সিটিজেন কেইন তৈরি করে ফেলবে। এটা যথার্থও হবে না।’

চলচ্চিত্রের কাহিনি রচয়িতাদের উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। চিত্রনাট্যকার ওয়ারেন লেইট মনে করেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ফলে সামনের দিনে প্রথম খসড়ার বদলে দ্বিতীয় খসড়া তৈরির জন্য চিত্রনাট্যকারদের ভাড়া করবে প্রযোজনা সংস্থা। যে কারণে তাদের কম টাকা দেওয়া হবে।

চিত্রনাট্যকারদের ইউনিয়নের প্রস্তাব চ্যাটজিপিটির মতো কোনো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার তৈরি করে দেওয়া রচনাকে ‘সাহিত্য উপকরণ' বা মূল উপকরণ' হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করা যাবে না। অর্থাৎ, এ ধরনের লেখা যদি চিত্রনাট্যকারকে দেওয়া হয়, এ জন্য তার মজুরি কমানো যাবে না। সেই সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে দক্ষ করে তোলার কাজে মানুষের রচিত বিদ্যমান চিত্রনাট্য ব্যবহার না করারও দাবি তুলেছেন তাঁরা। কারণ, এর ফলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কাছে মেধাস্বত্ব চুরির দুয়ার খুলে যেতে পারে।

ডব্লিউজিএ-এর প্রধান সমঝোতাকারী অ্যালেন স্টুটজম্যান বলেন, তাঁদের সদস্যরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ‘নকল করার যন্ত্র’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি আরও বলেন ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের লেখকদের জায়গায় প্রতিস্থাপন করা উচিত হবে না। এই চেষ্টা না করার পেছনে আমাদের যৌক্তিক প্রস্তাব রয়েছে।’

আরও পড়ুন