বিদ্যুৎবিহীন পরিস্থিতি, কিয়েভের মেয়রের সমালোচনায় জেলেনস্কি
বিদ্যুৎবিহীন পরিস্থিতি ভালোমতো সামাল দিতে না পারায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিৎসকোর সমালোচনা করেছেন। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় দেওয়া ভাষণে তিনি ইঙ্গিত করেছেন, কিয়েভের মেয়র এবং তাঁর কর্মকর্তারা অসহায় মানুষদের সহায়তার জন্য যথেষ্ট পদক্ষেপ নিতে পারেননি। খবর আল–জাজিরার
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার ৯ মাস পেরিয়েছে। কয়েক দিন ধরে দেশটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা জোরদার করেছে রাশিয়ার বাহিনী। ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে বিদ্যুৎ-ব্যবস্থায় বিপর্যয় নেমে আসে। তীব্র শীতের মধ্যে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় দিন পার করছেন অনেকে। এমন অবস্থায় ইউক্রেন হাজারো ‘সেবা কেন্দ্র’ স্থাপন করেছে। এসব কেন্দ্রে স্থানীয় লোকজন পানি, উষ্ণতা, ইন্টারনেট ও মুঠোফোন সংযোগ সেবা পেয়ে থাকেন।
তবে জেলেনস্কি মনে করেন, বিদ্যুৎবিহীন পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করার জন্য কিয়েভের মেয়র জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপনের কাজটি ভালোভাবে সামাল দিতে পারেননি।
গতকাল শনিবার জেলেনস্কি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সব শহরে ভালো কাজ করতে পারেনি। বিশেষ করে কিয়েভের ব্যাপারে অনেক অভিযোগ আছে। এগুলোকে বিবেচনায় নিয়ে আরও বেশি কাজ করা প্রয়োজন।
জেলেনস্কি আরও বলেন, ‘কিয়েভের জনগণের আরও বেশি সহায়তা প্রয়োজন। দয়া করে এদিকে মনোযোগ দিন। তাদের অনেকে ২০ কিংবা ৩০ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে। মেয়রের কার্যালয় থেকে আমরা মানসম্পন্ন কাজ আশা করি।’
আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদনে যাঁরা মিথ্যা কথা বলেছেন, তাঁদেরও সমালোচনা করেছেন জেলেনস্কি। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত উল্লেখ করেননি তিনি। এ পর্যন্ত চার হাজারের বেশি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
ইউক্রেনের নেতাদের নিয়ে জেলেনস্কির এমন প্রকাশ্য সমালোচনার ঘটনা বিরল। ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকে জেলেনস্কি জাতীয় ঐক্যের ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠা করে আসছেন। তাঁকে সাধারণত তাঁর প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রশংসা করতে দেখা যায়।
গতকাল শনিবার সকালে কিয়েভের পৌর প্রশাসন বলেছে, শহরজুড়ে পানি সংযোগগুলো আবারও সচল করা হয়েছে। তবে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার বাসিন্দা বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছেন। নগর কর্তৃপক্ষ বলেছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব ধরনের বিদ্যুৎ, পানি, তাপ এবং যোগাযোগ সেবা পুনঃস্থাপন করা হবে।
সাবেক পেশাদার বক্সার ক্লিৎসকো ২০১৪ সালে কিয়েভের মেয়র নির্বাচিত হন। ৫১ বছর বয়সী এ নেতা গত শুক্রবার বলেছেন, স্থানীয় বাসিন্দারা যেন ইলেকট্রনিক ডিভাইসে চার্জ দিতে পারেন, গরম চা পান করতে পারেন—তা নিশ্চিত করতে কিয়েভজুড়ে ৪০০টির বেশি ‘হিটিং পয়েন্ট’ স্থাপন করা হয়েছে।
এক টেলিগ্রাম পোস্টে ক্লিৎসকো বলেছেন, স্কুল ও অন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে এসব কেন্দ্র অবস্থিত। প্রতিদিনই তা খোলা থাকবে।
জেলেনস্কির সমালোচনা নিয়ে ক্লিৎসকো এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।
তবে সম্প্রতি এ বক্সিং কিংবদন্তি আভাস দিয়েছেন তিনি খুব চাপে আছেন। ক্লিৎসকো বলেন, ‘আমি যেসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছি সেগুলোর সবগুলো সম্পর্কে আমি যদি আপনাদের বোঝানোর চেষ্টা করি, তাহলে আমাদের কয়েক সপ্তাহ সময় লেগে যেতে পারে।’
ক্লিৎসকো আরও বলেন, এটা সন্ত্রাস, তারা আমাদের বিদ্যুৎবিহীন ও তাপবিহীন অবস্থায় রেখে জমিয়ে ফেলছে, পানিহীন অবস্থায় রেখেছে।