লন্ডনের পার্লি রাজা ও রানিরা
বছরে একটি দিন ফসল কাটার উৎসব হিসেবে পালন করেন পার্লিরা। সেদিন তাঁরা পার্লি নকশার পোশাক পরে গান–নাচ করেন।
লন্ডনের শ্রমিক শ্রেণির আইকন হলেন পার্লিরা। তাঁরা লন্ডনের বিভিন্ন এলাকার প্রতিনিধিত্ব করেন। রাজপরিবারের মতো তাঁরাও উত্তরসূরি ঠিক করতে পারেন।
পার্লি রানি ক্যাটি বার্নস বলেন, ‘অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা জানেন না, পার্লিরা আছেন। তাঁরা আমাদের এখানে দেখতে পান এবং আমাদের সম্পর্কে জানতে পেরে খুব আনন্দিত হন।’
উনিশ শতকে নকশা করা স্যুট পরে দরিদ্রদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতেন পার্লিরা। আজও তাঁরা স্থানীয় দাতব্য সংস্থার জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন।
অনেক দিন ধরে অর্থ তোলার অভিজ্ঞতা আছে ক্লাইভ বেনেটের। তিনি পার্লি সংস্কৃতি খুব ভালোভাবে তুলে ধরেন। পুরোনো লন্ডনের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে পারেন তিনি।
ক্লাইভ বলেন, ‘অনেকে বলেন, এটা গোপন ভাষা। পুলিশ যদি আপনাকে ধরতে আসে, তাহলে তাদের ফাঁকি দেওয়ার জন্য এটা বলা হয়। যেমন “কেইন অ্যান্ড এইবল” মানে হচ্ছে টেবিল, “জ্যাক দ্য রিপার” বলতে বোঝায় স্ট্রিপার। আর “কাপ্পা অব রোজি লি” মানে হচ্ছে চা।’
ফসল কাটার উৎসবে ফেরা যাক। পার্লিরা অর্থ সংগ্রহ করছেন। এভাবে তাঁরা তহবিল সংগ্রহের আরও একটি সফল বছর পার করছেন।
উৎসবে অংশ নেওয়া এক দর্শক বলেন, ‘সবচেয়ে ভালো বিষয় হচ্ছে, তরুণেরা ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। তাঁরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে প্রস্তুত হচ্ছেন। সেটা না হলে এসব পুরোনো রীতি ও গান এবং আজ আমরা যা শুনছি, সব একদিন হারিয়ে যাবে। বিষয়টা লজ্জার হবে।’
তবে পার্লিদের সংখ্যা কমে গেছে। আগে লন্ডনে তাঁদের সংখ্যা কয়েক শ ছিল। এখন আছে কয়েক ডজন।
পার্লি রাজা জন ডাওয়েল বলেন, ‘লন্ডনের ছেলে হিসেবে এটা আমার ঐতিহ্যের একটি অংশ। লন্ডনের বাস, ট্যাক্সি ও একজন পুলিশ কর্মকর্তার মতো আইকনিক একটা বিষয় হচ্ছে পার্লি রাজা ও রানি। আমাদের এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। তা না হলে আমরা এটা হারিয়ে ফেলব।’
পার্লিদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তাঁদের তরুণ সদস্যদের ওপর। যেমন পার্লি রানি হতে এভি ওয়ালড্রেন দুই বছরের প্রশিক্ষণ শুরু করেছেন। সামাজিক মাধ্যমে তিনি তাঁর প্রশিক্ষণের বিষয় তুলে ধরছেন। এভাবে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছানোর আশা করছেন তিনি।
এভি বলেন, ‘পার্লিরা বিলুপ্ত হলে আমার হৃদয় ভেঙে যাবে। আমার মনে হয়, পার্লিরা এখন যেমন আছে, সেভাবে এগিয়ে যাবে। তবে কিছু জিনিস আধুনিক করতে হবে। যেমন ইনস্টাগ্রাম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় হতে হবে। সেই সঙ্গে পুরোনো সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে।’
পার্লি রাজা ও রানিরা পার্লি সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। তাঁরা এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর।