সেই প্রমোদতরির চারজনের মৃত্যু হয়েছিল অক্সিজেনের অভাবে

প্রমোদতরি বায়েসিয়ানের মাস্তুল ছিল সবচেয়ে উঁচু
ছবি : রয়টার্স

গত মাসের শেষের দিকে ইতালির দ্বীপ সিসিলির উপকূলে ডুবে যায় বিলাসবহুল প্রমোদতরি বায়েসিয়ান। এতে মোট সাতজন মারা যান। আর এই সাতজনের মধ্যে চারজনের মৃত্যু হয়েছিল অক্সিজেনের অভাবে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ইতালির বার্তা সংস্থা আনসা এ তথ্য জানায় বলে বিবিসির খবরে বলা হয়।

ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন বলছে, এই চারজন জাহাজের ভেতর যেখানে আটকা পড়েছিলেন, সেখানে অক্সিজেন কমে গিয়েছিল। ফলে তাঁদের মৃত্যু হয়। এই চার ব্যক্তি হলেন ব্যাংক খাতের একজন নির্বাহী কর্মকর্তা জোনাথন ব্লুমার, তাঁর স্ত্রী জুডি ব্লুমার, আইনজীবী ক্রিস মরভিলো ও তাঁর স্ত্রী নেদা মরভিলো।

ময়নাতদন্তের এই চারজনের কারও ফুসফুসে পানি পাওয়া যায়নি। এর অর্থ হলো পানিতে ডোবার কারণে তাঁদের মৃত্যু হয়নি।

তদন্ত কর্মকর্তারা মনে করছেন, যে কেবিন থেকে ওই চার ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল সেটি কার্বন ডাই–অক্সাইডে পূর্ণ ছিল। কারণ কক্ষটিতে অক্সিজেন ফুরিয়ে গিয়েছিল। এ কারণেই তাদের মৃত্যু হয়েছিল। তাঁদের শরীরে আঘাতেরও কোনো চিহ্ন ছিল না।

ইতালির গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, মরদেহগুলো উদ্ধারে যেসব ডুবুরি কাজ করেছেন, তাঁরা এই চারজনকে ইয়টের ভেতর কেবিনের বাঁ পাশে পেয়েছেন। এর মানে হলো ইয়টটি ডান দিকে কাত হয়ে ডুবছিল। আর ততক্ষণ তাঁরা বাঁ দিকে থাকা সর্বশেষ এয়ার পকেটগুলোর কাছে পৌঁছাতে চেষ্টা করছিলেন।

যুক্তরাজ্যের ধনকুবের মাইক লিঞ্চ চলতি বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক জালিয়াতির অভিযোগ থেকে খালাস পান। এটা উদ্‌যাপন করার জন্য ওই সমুদ্রবিহারের আয়োজন করা হয়েছিল। স্ত্রী অ্যাঞ্জেলা বেকারেস ও মেয়ে হান্না লিঞ্চসহ অন্য অতিথিরা তাঁদের সফর সঙ্গী হয়েছিলেন।

প্রমোদতরিটি নেদারল্যান্ডসের রটারডাম থেকে যাত্রা শুরু করে। এরপর জিব্রাল্টার প্রণালি অতিক্রম করে সিসিলি উপকূলে পৌঁছায়। ১৮ আগস্ট রোববার প্রমোদতরিটি মিলাজ্জো বন্দরে থামার পর ইতালির দ্বীপ সিসিলির উপকূল পোর্টিসেলোতে এসে নোঙর করে। সোমবার রাতে হঠাৎ এক ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়ে ৬০ সেকেন্ডের মধ্যেই প্রমোদতরিটি ডুবে যায়।

আরও পড়ুন

এতে উল্লিখিত চার ব্যক্তির সঙ্গে মাইক লিঞ্চ, তাঁর কন্যা হান্না লিঞ্চ ও প্রমোদতরিটির প্রধান পাচক রেকালডো থমাসও মারা যান। এই তিনজনের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন কয়েক দিনের মধ্যে জানা যাবে।

এদিকে এই দুর্ঘটনায় নাবিক ও জাহাজের অন্য কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে কোনো উদাসীনতা ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যেমন ঘূর্ণিঝড়ের সময় প্রমোদতরির বাইরের দরজা খোলা রাখা হয়েছিল কি না, তা তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্তের স্বার্থে সাগরের তলদেশ থেকে বায়েসিয়ান নামের প্রমোদতরিটিও উদ্ধার করা হবে।