‘ওরেশনিক’–এর ধ্বংসাবশেষ পরীক্ষা করে দেখছে ইউক্রেন

ইউক্রেনের নিপ্রো শহরে গত বৃহস্পতিবার রাশিয়ার ছোড়া নতুন একটি ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ দেখাচ্ছেন একজন সেনা। ২৪ নভেম্বর, ২০২৪ছবি: রয়টার্স

মস্কোর ছোড়া একটি মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ পরীক্ষা করে দেখছে ইউক্রেন। গত বৃহস্পতিবার দেশটির নিপ্রো শহরে নতুন ধরনের এ শক্তিশালী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে রাশিয়া। ইউক্রেন যুদ্ধে প্রথম এতটা শক্তিশালী অস্ত্রের ব্যবহার করা হলো।

ইউক্রেনের তদন্ত কর্মকর্তারা যেখানে ক্ষেপণাস্ত্রটির ধ্বংসাবশেষ পরীক্ষা করছেন, সেখানে গতকাল রোববার অল্প কয়েকজন সাংবাদিককে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। সেই দলে রয়টার্সের একজন সাংবাদিকও ছিলেন। নিরাপত্তার খাতিরে সাংবাদিকদের সেই স্থানের নাম প্রকাশ না করতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন

ইউক্রেনের বিশেষজ্ঞরা ধ্বংসাবশেষ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রাশিয়ার সামরিক সরবরাহব্যবস্থা ও অস্ত্রশস্ত্র উৎপাদনের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করছেন। একই সঙ্গে এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের হামলা ঠেকানোর উপায় খুঁজছেন।

গত বৃহস্পতিবার রাশিয়া তার ছোড়া ওই ক্ষেপণাস্ত্রের নাম দিয়েছে ‘ওরেশনিক’। বর্তমান আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দিয়ে হাইপারসনিক এ ক্ষেপণাস্ত্রকে আটকানো যাবে না বলে দাবি করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

ইউক্রেনের দুজন বিশেষজ্ঞ সতর্কতার সঙ্গে সাংবাদিকদের ‘ওরেশনিক’ বিষয়ে অল্পকিছু তথ্য দিয়েছেন। তাঁরা সাংবাদিকদের কাছ থেকে কোনো প্রশ্ন নিতে রাজি হননি। এমনকি নিজেদের পূর্ণ নাম প্রকাশ করতেও অস্বীকার করেন। তাঁরা বলেন, সেটি একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছিল এবং এর আঘাতে বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ইউক্রেন বলেছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি ঘণ্টায় ১৩ হাজার কিলোমিটারের বেশি গতিতে ছুটে আসে নিপ্রোতে আঘাত হানে।

একটি মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের ছুটে আসার গতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ সাড়ে ৫ হাজার কিলোমিটার হয়ে থাকে।

আরও পড়ুন

ইউক্রেনের দুজন বিশেষজ্ঞ সতর্কতার সঙ্গে সাংবাদিকদের ‘ওরেশনিক’ বিষয়ে অল্প কিছু তথ্য দিয়েছেন। তাঁরা সাংবাদিকদের কাছ থেকে কোনো প্রশ্ন নিতে রাজি হননি। এমনকি নিজেদের পূর্ণ নাম প্রকাশ করতেও অস্বীকার করেন। তাঁরা বলেন, সেটি একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছিল এবং এর আঘাতে বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ইউক্রেনের নিপ্রো শহরে গত বৃহস্পতিবার রাশিয়ার ছোড়া নতুন একটি ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ। ২৪ নভেম্বর, ২০২৪
ছবি: রয়টার্স

এই বিশেষজ্ঞদের একজন ইভান। তিনি বলেন, ‘এটি প্রাথমিক পরীক্ষার ফলাফল। আরও সুনির্দিষ্ট কিছু বলার জন্য সময় ও ক্ষেপণাস্ত্রের অবশিষ্টাংশের যত্নসহকারে পরীক্ষা করা প্রয়োজন।’

এই প্রথম ইউক্রেনের ভূখণ্ডে এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।
ওলেহ, ইউক্রেনের সিকিউরিটি সার্ভিসের তদন্ত কর্মকর্তা

ইউক্রেনের সিকিউরিটি সার্ভিসের তদন্ত কর্মকর্তা ওলেহ বলেন, ‘এই প্রথম ইউক্রেনের ভূখণ্ডে এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।’

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এ অস্ত্রের ব্যবহারকে যুদ্ধ-উত্তেজনার গুরুতর বৃদ্ধি এবং মিত্রদের এর যোগ্য জবাব দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। ইউক্রেন প্রথমে বলেছিল, নতুন ওই অস্ত্র একটি আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছিল।

আরও পড়ুন

পরে ক্রেমলিন থেকে বলা হয়, তারা একটি নতুন মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। কিয়েভ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় আঘাত হানার জবাবেই তারা নিপ্রোতে ওই ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে।

মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন বলেছে, ‘আরএস-২৬ রুবেজ’ নামের আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের (আইসিবিএম) ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে ‘ওরেশনিক’।

বৃহস্পতিবার রাশিয়া নিপ্রো শহরে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের নাম দিয়েছে ‘ওরেশনিক’। বর্তমান আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দিয়ে হাইপারসনিক এ ক্ষেপণাস্ত্রকে আটকানো যাবে না বলে দাবি করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো শব্দের চেয়ে অন্তত পাঁচ গুণ গতিতে ছুটতে পারে। আবার পথিমধ্যে পারে কৌশল বদলাতে। এ কারণে এগুলো শনাক্ত করা ও আটকে দেওয়া অধিকতর কঠিন।

নিপ্রোতে হামলার পরদিন গত শুক্রবার এক টেলিভিশন ভাষণে পুতিন বলেছেন, ‘ওরেশনিক’ ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের চেয়ে ১০ গুণ গতিতে ছুটে যায়। এ ক্ষেপণাস্ত্রের উৎপাদন চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন