বিমানবন্দরে যাত্রীকে লাথি মারা সেই ব্রিটিশ পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত
যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিমানবন্দরে এক যাত্রীকে মাথায় লাথি ও পা দিয়ে চেপে ধরার ঘটনায় অভিযুক্ত এক পুলিশ কর্মকর্তাকে সব ধরনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গ্রেটার ম্যানচেস্টার পুলিশ (জিএমপি) এ তথ্য নিশ্চিত করে। স্থানীয় মেয়র সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার ম্যানচেস্টার বিমানবন্দরে এক যাত্রীকে মাথায় লাথি মারা ও পা দিয়ে তাঁর মাথা চেপে ধরার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে স্থানীয় মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। পরের দিন বুধবার রাতে ইংল্যান্ডের রচডেল থানার সামনে কয়েক শ মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন।
এ পরিস্থিতিতে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের ঘোষণা দেয় জিএমপি। মঙ্গলবার রাতের ঘটনা খতিয়ে দেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনার পর গ্রেটার ম্যানচেস্টারের মেয়র অ্যান্ডি বার্নহ্যাম যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার সঙ্গে দেখা করেছেন। বৈঠকের পর কুপার বলেন, ‘এ ঘটনার ব্যাপক ক্ষোভ আমি বুঝতে পারছি। পুলিশকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলেছি।’
অন্যদিকে জিএমপি জানায়, এ ঘটনা নিয়ে যে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে, তারা তা বুঝতে পারছে।
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করা হয়নি। ভুক্তভোগী ব্যক্তির নাম অমর মিনহাজ। তিনি যুক্তরাজ্যের লিডস শহর থেকে পরিবারের সঙ্গে ম্যানচেস্টারে যাচ্ছিলেন। টার্মিনালে পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁর দিকে এগিয়ে এলে সেখানে হাতাহাতি শুরু হয়।
ভাইরাল ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মঙ্গলবার ম্যানচেস্টার বিমানবন্দরের টার্মিনাল-২-এ মাটিতে শুয়ে পড়া এক ব্যক্তির দিকে ইউনিফর্ম পরা এক পুরুষ কর্মকর্তা এগিয়ে যান। এরপর তাঁর মাথায় দুবার লাথি মারেন।
ম্যানচেস্টার বিমানবন্দরে কী ঘটছিল, তা এখনো স্পষ্ট নয় জানিয়ে মেয়র বার্নহ্যাম বলেন, মঙ্গলবার ম্যানচেস্টার বিমানবন্দরে একটি ফ্লাইটে সমস্যা হচ্ছিল।
ওই ঘটনা সম্পর্কে একটি ভিডিওতে পুলিশের এক মুখপাত্রকে বলতে দেখা যায়, একটি উড়োজাহাজ অবতরণ করার পর আগ্নেয়াস্ত্রধারী কর্মকর্তারা কাউকে গ্রেপ্তার করতে চেষ্টা করছিলেন। তখন তাঁদের ঘুষি মেরে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়।
ওই ঘটনায় পুলিশের কর্মকর্তাদের অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার ‘সমূহ আশঙ্কা’ ছিল জানিয়ে পুলিশের এই মুখপাত্র বলেন, আহত তিন ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের একজনের নাকের হাড্ডি ভেঙে গেছে।
পরে হামলা ও মারামারি সন্দেহে আরও চার ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তবে পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ম্যানচেস্টার বিমানবন্দরের ঘটনায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, ‘জনগণের উদ্বেগ আমরা পুরোপুরি বুঝতে পারছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়টি দেখছেন।’