যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার দ্বৈরথ, ভুগছে ইউরোপ
জেসিকা লোবলির বসবাস ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের উপকণ্ঠে। ১৫ বছর বয়সী মেয়ে ও ৮ বছরের এক ছেলে আছে তাঁর। দুই সন্তানসহ এ নারীর তিনজনের সংসার। স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের শিশুদের জন্য রান্না করেন তিনি। আয় মাসে সর্বোচ্চ ২ হাজার ইউরো। তা দিয়েই চলে সংসার।
করোনার মহামারির সময় সংসার সামলাতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে জেসিকাকে। কমাতে হয়েছে নিত্যদিনের খরচ। চলতি বছরের শুরুর দিকে সবে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিলেন। আর তখনই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তাঁকে আবারও সংকটে ফেলে দেয়। জেসিকা জানান, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে তাঁর পরিবারের খাবার খরচ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। আগে প্রতি মাসে ১০০ ইউরো ব্যয় করলে অনায়াসে খাবার খরচ মিটে যেত। এখন তা বেড়ে ১৫০ থেকে ২০০ ইউরোতে উঠেছে। বাড়তি এ খরচ সামলাতে রীতিমতো হাঁপিয়ে উঠেছেন তিনি।
জেসিকার দেশ ফ্রান্সও বাড়তি খরচের চাপ সামলাচ্ছে। দেশটির সরকার রাতে অনেক জায়গায় বৈদ্যুতিক বাতি বন্ধ করে রাখছে। প্যারিসের আইকনিক আইফেল টাওয়ারও রাতের একটা অংশে অন্ধকারে ডুবে থাকছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ জনগণকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের আহ্বান জানিয়েছেন। অপ্রয়োজনে বাতি বন্ধ রাখতে বলেছেন।
ইউক্রেন যুদ্ধ পুরো ইউরোপের নিরাপত্তাকাঠামো বদলে দিয়েছে।
এ পরিস্থিতির পেছনে বড় ভূমিকা রয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের। করোনা মহামারি ও টানা লকডাউনে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছিল ইউরোপের দেশগুলো। সামলে ওঠার চেষ্টা শুরু করতে না করতেই নতুন আরেকটি সংকটের মুখোমুখি হতে হয় আটলান্টিকপারের দেশগুলোকে। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে সর্বাত্মক হামলার নির্দেশ দিলে শুরু হয় যুদ্ধ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এত বড় যুদ্ধ দেখেনি ইউরোপবাসী। যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তাদের সেই নিষেধাজ্ঞার মিছিলে শামিল হয়েছে ইউরোপের দেশগুলো। এ নিষেধাজ্ঞার প্রভাব তাদের ওপরই পড়েছে বেশি।
রাশিয়ার তেল-গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল ইউরোপের দেশগুলোকে সংকট মোকাবিলায় খুঁজতে হচ্ছে বিকল্প উৎস। বাড়তি দামে জ্বালানি কিনতে হচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে সাধারণ মানুষের ওপরও।
দেশে দেশে সংকট
একটি যুদ্ধ নানা চ্যালেঞ্জ তৈরি করে, সংকটের জন্ম দেয়। রাজনীতি, অর্থনীতি থেকে নিরাপত্তা, মানবাধিকার—সব বিষয় চাপের মুখে পড়ে। ব্যতিক্রম নয় ইউরোপ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চাপ সামলাতে গিয়ে পুরো ইউরোপ আদর্শিকভাবে পুঁজিবাদ ও সমাজতন্ত্রে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। ইউরোপের দেশগুলোকে এর রেশ টানতে হয়েছে দশকের পর দশক।
চলমান জ্বালানিসংকটে আমাদের কৌশল তিনটি। চাহিদা কমানো, সরবরাহব্যবস্থা নিরাপদ করা এবং দাম সীমিত রাখা।
এবারের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধেও বড়সড় সংকটে পড়েছে ইউরোপ। বিশেষত, ভঙ্গুর অর্থনীতির গতি ফেরানো বিলম্বিত হয়ে পড়া, তীব্র জ্বালানিসংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে ইউরোপের দেশগুলোকে। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইউক্রেনীয় শরণার্থীর ভিড় সামলানো, রুশ বাহিনীকে মোকাবিলায় ইউক্রেনকে অর্থ-অস্ত্র সহায়তা দেওয়ার চ্যালেঞ্জ। এসব চ্যালেঞ্জের প্রভাব পড়ছে ইউরোপের দেশগুলোর সরকারের ওপর ও রাজনীতিতে।
যুক্তরাজ্যের দিকেই দেখুন, করোনাকালে অর্থনৈতিক চাপ সামলানোর ব্যর্থতা মাথায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন পদত্যাগ করলে নতুন প্রধানমন্ত্রী হন লিজ ট্রাস। মাত্র ৪৫ দিন ক্ষমতায় ছিলেন তিনি। ক্রমভঙ্গুর অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে না পারায় সরে যেতে হয় ট্রাসকেও। এখন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক।
যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক সংকট ও ক্ষমতার আকস্মিক পালাবদলের মূলে অর্থনৈতিক অস্থিরতা, করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ—এমনটাই মত বিশ্লেষকদের অনেকের। কেননা, ইতিহাসের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি ও ভঙ্গুর অর্থনীতি নিয়েও যুদ্ধে ইউক্রেনকে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে লন্ডন। আশ্রয় দিয়েছে ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের।
যুদ্ধের প্রভাবে রাজনৈতিক পালাবদল ঘটেছে ইতালিতে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এবারই প্রথম দেশটিতে ডানপন্থী জোট ক্ষমতায় গেছে। ইতালির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন জর্জিয়া মেলোনি। রক্ষণশীলদের এ উত্থানের পেছনেও করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বিদায়ী সরকারের ব্যর্থতাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এরপরও মেলোনি সরকার এখন আইন সংস্কার করে যুদ্ধে ইউক্রেনকে সহায়তার পথ বেছে নিয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পুতিনকে পছন্দ করা ইউরোপীয় ডানপন্থীরাও এখন ইউক্রেনকে সহায়তা করতে বাধ্য হচ্ছে।
প্রতিবেশী পোল্যান্ড, রোমানিয়া ছাড়াও জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের অনেক দেশ লাখ লাখ ইউক্রেনীয় শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। এ উদ্যোগ মানবিক ও প্রশংসনীয়। তবে এর ফলে অর্থনীতির ওপর যে বাড়তি চাপ দেখা দিয়েছে, তা অর্থনৈতিক-সামাজিক-রাজনৈতিক সংকট বাড়াচ্ছে আশ্রয়দাতা দেশগুলোয়।
কার দায় কতটা
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইউরোপে বড় ধরনের সংকটের জন্ম দিলেও এর পেছনে এই মহাদেশের দেশগুলোর দায় সামান্যই। মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যকার দ্বৈরথ এই যুদ্ধের সূচনা ঘটিয়েছে। অথচ এতে ইউক্রেনের পর সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে ইউরোপকে।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এখন ফিনল্যান্ড-সুইডেন ন্যাটোর সদস্য হওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। প্রধান কারণ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ। খোলাখুলি বললে, রাশিয়াভীতি। ইউরোপের দেশগুলো মনে করছে, পুতিন পারমাণবিক হামলা চালাতে পারেন। এমনটা হলে এককভাবে তা মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। তাই ঐতিহাসিক নীতি পরিত্যাগ করে সুইডেন-ফিনল্যান্ড ন্যাটোর ছাতার নিচে আসতে চায়।
সমালোচকেরা বলছেন, নিজেরা যুদ্ধে নামবে না জেনেও আটলান্টিকের ওপাড় থেকে মার্কিনরা পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো সম্প্রসারণের নামে ইউরোপের পরিবেশ অস্থিতিশীল করে তুলছে। ন্যাটো জোটের শক্তিশালী শরিকদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে মার্কিনরা একরকম জোর করেই তাদের সামরিকায়ন নীতি বজায় রেখেছে। বিশ্বের নানা প্রান্তরে যুদ্ধ ছড়িয়ে দিয়ে আরও অস্ত্র রপ্তানি বাণিজ্য মার্কিনদের পুরোনো কৌশল। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এ কাজই মার্কিনরা আবার করছে।
রাশিয়ার অভিযোগ অনেকটা একই। পুতিন বরাবর বলে আসছেন, পশ্চিমা উসকানির ফলাফল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। মূলত, ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য হতে ইউক্রেনের ইচ্ছা প্রকাশের ঘটনায় রাশিয়া ক্ষুব্ধ হয়। মস্কো চায়নি তার ঘরের পাশে ন্যাটো ডালপালা মেলুক, কার্যক্রম চালাক। বারবার সতর্ক করেছে মস্কো। কাজের কাজ হয়নি। তাই ২০১৪ সাল থেকে চলা রাশিয়া ও ইউক্রেনের লড়াই ২০২২ সালে এসে সর্বাত্মক যুদ্ধে গড়িয়েছে।
রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ফিনল্যান্ড-সুইডেন ন্যাটোর সদস্য হওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। প্রধান কারণ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ। খোলাখুলি বললে, রাশিয়াভীতি। ইউরোপের দেশগুলো মনে করছে, পুতিন পারমাণবিক হামলা চালাতে পারেন। এমনটা হলে এককভাবে তা মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। তাই ঐতিহাসিক নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখার নীতি ত্যাগ করে সুইডেন-ফিনল্যান্ড ন্যাটোর ছাতার নিচে আসতে চায়।
রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয়দের প্রতি সমর্থন জোগাতে গিয়ে ইউরোপবাসীর পকেটে টান পড়েছে। তাঁদের জ্বালানি ও খাবারের খরচ বেড়েছে। সরকারগুলো জনগণের করের টাকায় শরণার্থীদের আশ্রয় ও ইউক্রেনকে সহায়তা দিচ্ছে। ইউরোপবাসীর মনে ইউক্রেনের প্রতি সহানুভূতি রয়েছে বলে সহজেই এসব করা যাচ্ছে। ক্রমাগত চাপে থাকলে বেশি দিন এ সহানুভূতি নাও থাকতে পারে। বাড়তে পারে অসন্তোষ।
শুধু তা–ই নয়, রুশভীতি ইউরোপের দেশগুলোর ঐক্য নজিরবিহীনভাবে বাড়িয়েছে।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিঙ্কট্যাংক কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের বিশ্লেষক থমাস গ্রাহাম বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধ পুরো ইউরোপের নিরাপত্তাকাঠামো বদলে দিয়েছে।’ এর অন্যতম প্রমাণ, ন্যাটোর সদস্য হতে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের নীতির পরিবর্তন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধপরবর্তী সময়ের সমরনীতি বদলে ইউক্রেনকে ইতালি ও জার্মানির সামরিক সহায়তা দেওয়া। বিশ্বরাজনীতিতে ইউক্রেনের প্রতিবেশী পোল্যান্ডের গুরুত্ব বেড়ে যাওয়া।
জ্বালানিসংকট আরও বাড়তে পারে
ইউরোপের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ জ্বালানিসংকট। ইউরোপের বার্ষিক চাহিদার ৪০ শতাংশ গ্যাস আসে রাশিয়া থেকে। এর মধ্যে রুশ গ্যাসের অন্যতম বড় ক্রেতা জার্মানি। গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর ইউরোপের দেশগুলো রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানি ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে গ্যাসের বিকল্প উৎস খুঁজতে হচ্ছে ইউরোপের দেশগুলোকে, যা সংকটের পাশাপাশি জ্বালানির ব্যয়ও বাড়িয়েছে।
বসে নেই রাশিয়াও। রক্ষণাবেক্ষণের নামে রাশিয়া থেকে ইউরোপমুখী নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইন দীর্ঘদিন বন্ধ রেখেছিল মস্কো। গত সেপ্টেম্বরে এ রুটে বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় পাইপলাইন। এ পরিস্থিতিতে ইউরোপের নেতাদের ভাষ্য, গ্যাস পাইপলাইনকে ‘যুদ্ধাস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে রাশিয়া। পাল্টায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন মস্কোর বিরুদ্ধে একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
শীত শুরুর আগেই জ্বালানিসংকট ইউরোপজুড়ে মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে দিয়েছে। জার্মানির মতো উন্নত অর্থনীতির দেশে তা ১০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। দেশটির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বলেছেন, তাঁর সরকার মূল্যস্ফীতির (বিশেষত, গ্যাসের দামে) লাগাম টানতে সম্ভাব্য সবকিছু করবে। ভোক্তাদের ওপর থেকে বাড়তি জ্বালানি ব্যয়ের চাপ কমাতে ৯ হাজার ৬০০ কোটি ইউরোর সহায়তা প্রকল্পের ঘোষণা দিয়েছে জার্মান সরকার। এমন এক সময় এসব উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, যখন করোনার ধাক্কা সামলে সবে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল অর্থনীতি।
পরিস্থিতি এমন যে ইউরোপের দেশগুলোকে অর্থনৈতিক চাপ দ্রুত কমিয়ে আনতে হবে। তা না হলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউরোপীয় শক্তির প্রভাব ধসে পড়বে। ঝুঁকিতে পড়বে ইউরোপীয় ঐক্য। বিষয়টি আমলে নিয়ে গত অক্টোবরে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল টুইট করেন, ‘জ্বালানিসংকট মোকাবিলায় আমাদের কৌশল তিনটি। চাহিদা কমানো, সরবরাহব্যবস্থা নিরাপদ করা এবং দাম সীমিত রাখা।’
গত মে মাসে একটি জরিপ চালায় ইউরোপীয় কাউন্সিলের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটি। জোটভুক্ত ১০টি দেশে পরিচালিত এ জরিপের ফলে দেখা যায়, বেশির ভাগ মানুষ যুদ্ধের জন্য রাশিয়াকে দায়ী করেন। তাঁদের ইউক্রেনীয়দের প্রতি সহানুভূতি রয়েছে।
এরপরও বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন, রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয়দের প্রতি সমর্থন জোগাতে গিয়ে ইউরোপবাসীর পকেটে টান পড়েছে। তাঁদের জ্বালানি ও খাবারের খরচ বেড়েছে। সরকারগুলো জনগণের করের টাকায় শরণার্থীদের আশ্রয় ও ইউক্রেনকে সহায়তা দিচ্ছে। ইউরোপবাসীর মনে ইউক্রেনের প্রতি সহানুভূতি রয়েছে বলে সহজেই এসব করা যাচ্ছে। ক্রমাগত চাপে থাকলে বেশি দিন এ সহানুভূতি না–ও থাকতে পারে। বাড়তে পারে অসন্তোষ। তখন ইউরোপের সরকারগুলোর পাশাপাশি ইউক্রেনও বিপদে পড়তে পারে।
আগামী বছরটা ইউরোপের জন্য বেশ কঠিন একটি বছর হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিষয়ক ইউরোপীয় কমিশনার পাওলো জেন্তিলিওনি। তাঁর মতে, চরম জ্বালানিসংকটের ভেতর দিয়ে এবারের শীত পার করতে হবে ইউরোপকে।
জ্বালানিসংকট ও রেকর্ড মূল্যস্ফীতির এ ধাক্কা সামলাতে সামলাতে আগামী বছরের অর্ধেক কেটে যেতে পারে। ২০২৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধে গিয়ে ইউরোপে মূল্যস্ফীতি কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তা না হলে জেসিকার মতো ইউরোপের স্বল্প আয়ের মানুষদের বিপদ বেড়ে যাবে।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স, এএফপি, বিবিসি ও নিউইয়র্ক পোস্ট